বিএনপিতে শুদ্ধি অভিযান: বিতর্কিত নেতাকর্মীদের তালিকা করছে হাইকমান্ড

রবিবার, ৬ জুলাই, ২০২৫ ৭:০৫ পূর্বাহ্ন
শেয়ার করুন:
দলের নাম ব্যবহার করে চাঁদাবাজি, দখল ও অনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়িত নেতাকর্মীদের চিহ্নিত করতে ‘শুদ্ধি অভিযান’ শুরু করেছে বিএনপি।
বিশেষ করে ‘হাইব্রিড’ ও ‘নব্য বিএনপি’ পরিচয়ে তৃণমূল থেকে কেন্দ্র পর্যন্ত যারা দলে বিভ্রান্তি ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছে, তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নিতে ইতোমধ্যে কমিটিগুলোর যাচাই-বাছাই শুরু হয়েছে।
যদিও বিষয়টি নিয়ে দলটি আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো বক্তব্য দেয়নি, তবে বিএনপির একাধিক নির্ভরযোগ্য সূত্র জানিয়েছে, হাইকমান্ডের নির্দেশে ইউনিয়ন, উপজেলা ও জেলা পর্যায়ে দলীয় কাঠামো পুনর্বিন্যাসের কাজ চলছে।
বিএনপির কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি জানিয়েছেন, "দলের স্বার্থেই শুদ্ধি অভিযান চালানো হচ্ছে। যেসব নেতাকর্মী দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করছেন, তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তালিকা তৈরির কাজও চলছে।"
তিনি আরও বলেন, “বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান নেতৃত্বে ইতোমধ্যে গুণগত পরিবর্তন এনেছেন। ৫ আগস্টের আগের বিএনপি আর বর্তমান বিএনপি এক নয়।"
দলীয় সূত্র মতে, গত ১১ মাসে অন্তত পাঁচ হাজার নেতাকর্মীকে বহিষ্কার করা হয়েছে। আরও এক হাজারকে কারণ দর্শানোর নোটিশ (শোকজ) দেওয়া হয়েছে। সম্প্রতি ভোলার তজুমদ্দিন এবং লালমনিরহাটের পাটগ্রামে অনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়িত নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলেও জানা গেছে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, “অপরাধমূলক কোনো কাজ বরদাশত করা হবে না। আমরা স্পষ্ট করে দিয়েছি—আওয়ামী লীগের মতো অপকর্মের রাজনীতিতে বিএনপির কোনো স্থান নেই। শৃঙ্খলা ভাঙলে কঠোর ব্যবস্থা অনিবার্য।”
দলের নেতাদের দাবি, কিছু এলাকায় আওয়ামী লীগপন্থীরা ‘পুশ-ইন’ কৌশলে বিএনপিতে অনুপ্রবেশ করে দলের নাম ভাঙিয়ে অপকর্ম করছে। এমনকি অর্থের বিনিময়ে এসব অনুপ্রবেশেরও তথ্য মিলেছে। তদন্তে কিছু অভিযোগের সত্যতাও পাওয়া গেছে।
বিএনপি কিছু এলাকায় নিজেরাই মামলা করেছে এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকেও ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ জানিয়েছে বলে জানিয়েছে সূত্র।
তবে বিএনপির নেতারা এটাও বলছেন, প্রকৃত ঘটনা বিকৃত করে অপপ্রচারের মাধ্যমে দলের ভাবমূর্তি নষ্ট করার চেষ্টা চালাচ্ছে একটি চক্র।
তবুও, দলটির হাইকমান্ডের অবস্থান স্পষ্ট—দলের মর্যাদা ও শৃঙ্খলার প্রশ্নে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না। শুদ্ধি অভিযান চলবে আরও কঠোরভাবে, যেন জনগণের আস্থা ফিরিয়ে আনা যায়।
১২৯ বার পড়া হয়েছে