সর্বশেষ

জাতীয়জাতির উদ্দেশে ভাষণ: ১২ ফেব্রুয়ারি জাতীয় নির্বাচন ও গণভোট অনুষ্ঠিত হবে
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রতীক বরাদ্দ ২১ জানুয়ারি
মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ তারিখ ২৯ ডিসেম্বর: সিইসি
২২ জানুয়ারি থেকে শুরু সংসদ নির্বাচনের প্রচারণা শুরু
প্রধান বিচারপতির হাতে সুপ্রিম কোর্ট সচিবালয়ের উদ্বোধন
মা-মেয়েকে হত্যা: গৃহকর্মীর ৬ দিন, স্বামীর ৩ দিনের রিমান্ড
হজযাত্রীদের বিমান টিকিটে আবগারি শুল্ক ছাড় দিলো এনবিআর
ঢাকায় ইন্দোনেশিয়ার দূতাবাসে ২১ দিনের জন্য ভিসা সেবা বন্ধ
সারাদেশতানোরে নলকূপের পাইপ থেকে শিশু উদ্ধার, হাসপাতালে মৃত ঘোষণা
আবারও ভূমিকম্প, ৫ মিনিটের ব্যবধানে দু'বার কেঁপেছে সিলেট
মীরসরাইয়ে ছাত্রদলের দুই পক্ষের সংঘর্ষে যুবক নিহত
আন্তর্জাতিকমিয়ানমারে হাসপাতালে বিমান হামলায় কমপক্ষে ৩১ নিহত
ট্রাম্পের ‘গোল্ড কার্ড’ কর্মসূচির আনুষ্ঠানিক সূচনা
খেলারদ্রিগোর গোলেও ম্যানসিটির কাছে হার রিয়াল মাদ্রিদের
জাতীয়

রাজধানীর মিরপুরে স্কুল ফর স্পেশাল কেয়ার সেন্টারের বিরুদ্ধে অনিয়ম, দুর্নীতি ও অভিভাবকদের হয়রানির অভিযোগ

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

বুধবার, ২ জুলাই, ২০২৫ ৩:২০ পূর্বাহ্ন

শেয়ার করুন:
রাজধানীর মিরপুরে বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশুদের স্কুল ফর স্পেশাল কেয়ার (এসএস কেয়ার) সেন্টারের বিরুদ্ধে গুরুতর অনিয়ম, অর্থিক দুর্নীতি এবং অভিভাবকদের হয়রানির অভিযোগ উঠেছে।

বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশুদের জন্য নির্ধারিত থেরাপি ও সেবাসমূহ না দিয়েই মাসিক বেতন আদায়, অতিরিক্ত মূল্যে বই বিক্রি, এবং অভিভাবকদের অভিযোগের প্রতি চরম উদাসীনতার অভিযোগ এনেছেন একাধিক অভিভাবক।

মিরপুর ৬ এর ৬ নম্বর সেকশনের সি ব্লকের ৮ নাম্বার রোডের ২ নাম্বর বাসায় স্কুল ফর স্পেশাল কেয়ারে শিশুদের যত্ন নেয়ার নাম করে চলছে এসব দুর্নীতি। এটি সি এস কেয়ারের একটি প্রতিষ্ঠান।

থেরাপি নয়, কেবল বিল: সেবাহীন সেন্টারে মাসে প্রায় ১০ হাজার টাকা বেতন:
অভিভাবকদের অভিযোগ, শিশু ভর্তি করার সময় ৮টি থেরাপির প্রতিশ্রুতি দিলেও বাস্তবে দীর্ঘ ছয় মাসেও অনেক শিশু একটি থেরাপিও পায়নি। অথচ প্রতি মাসে ৯,৯০০ টাকা করে বেতন আদায় করা হচ্ছে প্রতিটি শিক্ষার্থীর কাছ থেকে। নির্ধারিত সেবা না দিয়েই এই আর্থিক চাপ অভিভাবকদের জন্য দুশ্চিন্তার বড় কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

একজন অভিভাবক জানান, "ভর্তির সময় যা যা সুবিধা দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, তার অর্ধেকও দিচ্ছে না তারা। ছয় মাসে একটি থেরাপিও দেয়নি। অথচ প্রতি মাসে পুরো টাকা নিচ্ছে।"

অভিভাবকরা আরও জানান, প্রতিষ্ঠানটির ভেতরে বাণিজ্যিকভাবে পাঠ্যবই বিক্রি করা হচ্ছে। যেসব বই বাইরের দোকানে ১০০–১২০ টাকায় পাওয়া যায়, সেগুলো এখানে বিক্রি হচ্ছে ৪০০ টাকায়। তাও সময়মতো সরবরাহ করা হয় না।

"তিন-চার মাস আগে টাকা দিয়েও বই পাইনি। বারবার বললেও তারা বলে 'দিচ্ছি'। অথচ অগ্রিম টাকা নিয়ে রাখে," বলেন আরেক অভিভাবক।

সুবিধাহীন পরিবেশ ও আচরণগত সমস্যা:
শুধু থেরাপি বা বই নয়, প্রতিষ্ঠানটির ভেতরের অব্যবস্থাপনাও প্রশ্নবিদ্ধ। অভিভাবকদের জন্য নেই কোনো উপযুক্ত বসার স্থান বা টয়লেটের সুবিধা। টয়লেট ব্যবহারে নির্দিষ্ট সময় বেঁধে দেয়ার অভিযোগও রয়েছে।

একজন ছাত্রের অভিভাবক বলেন, " স্কুলে ভর্তির সময় আমাদেরকে যে সমস্ত সার্ভিসগুলো দেয়ার কথা ছিল তা দিচ্ছে না। এর মধ্যে ৮টি থেরাপি দেয়ার কথা ছিলো শিশুদের। কিন্তু বিগত ৬ মাসেও তারা শিশুদের একটি থেরাপিও দেয়নি। যে সার্ভিসগুলো দেয়ার কথা ছিল তা না দিয়েই প্রতিমাসে ৯৯০০ টাকা করে বেতন নিচ্ছে । তাদের আরো নির্ধারিত সার্ভিসের মধ্যে ছিলো আরো বেশকিছু সুবিধা দেয়ার কথা । যেহেতু আমাদের স্পেশাল চাইল্ড, সেক্ষেত্রে গার্ডিয়ানদের বাইরে বসে থেকে অপেক্ষা করতে হয়। এখানে টয়লেটের কোনো ব্যবস্থা নেই। নির্ধারিত একটা সময় বেধে দিয়েছে টয়লেটে যাওয়ার জন্য। নির্ধারিত এই সময়ের আগেও যাওয়া যাবে না পরেও যাওয়া যাবে না । আরেকটি বিষয় হল, তারা বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে বাচ্চাদেরকে কিছু বই দেয়। বাইরে বইগুলো ১০০ থেকে ১২০ টাকা করে পাওয়া যায়। কিন্তু সেই বইগুলো তারা ৪০০ টাকা করে নিচ্ছে। কিন্তু এক্ষেত্রেও ৩ বা ৪ মাস আগে টাকা দিয়েও অনেকে বইগুলো পায়নি। 'দিবো দিচ্ছি' বলে তারা আর দেয় না। অথচ অ্যাডভান্স টাকাও নিয়েছে। আরো একটি বিষয় হল, স্টুডেন্ট ভর্তির পর এক বছর পূর্ণ হওয়ার আগেই বেতন বাড়ানোর তাগিদ দেয়। অথচ এ বিষয়ে আগে থেকে এমনকি ভর্তির সময়ও জানায়নি । এ বিষয়ে স্কুল কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বললে তারা সমাধানের আলোচনা তো এতেবারেই করে না উল্টো আরো বছরের মাধামাঝি সময়েই স্কুল ছেড়ে চলে যাওয়ার জন্য বলে। তারা কোনো ধরনের প্যারেন্টস মিটিং করে না । শুধু নোটিশ ঝুলিয়ে টাকা আদায় করে। তাদের উচিৎ ছিলো এসব সমস্যা নিয়ে মাসে অন্তত একদিন প্যারেন্টস মিটিং করা।"


পরিচালনা ও স্বচ্ছতার ঘাটতি: নেই কোনো প্যারেন্টস মিটিং:
অভিভাবকদের অভিযোগ, স্কুল কর্তৃপক্ষ কোনো ধরণের অভিভাবক সভা বা আলোচনার উদ্যোগ নেয় না। বরং অভিযোগ জানালে অভিভাবকদের 'স্কুল ছেড়ে যেতে' বলা হয়। অনেক অভিভাবক বলেন, সন্তানদের হয়রানি ও অবহেলার ভয়ে তারা বিষয়টি কোথাও জানাতে সাহস পান না।

আরেকজন অভিভাক জানান, "সন্তানদের সঙ্গে কেউ দুর্ব্যবহার করছে কিনা, সেটাও নিশ্চিত হতে পারছি না। কিছু বললেই হুমকি দেয়—স্কুল ছেড়ে যেতে হবে। শিশুদের নিরাপত্তা ও মনের অবস্থা বিবেচনায় আমরা মুখ খুলতে পারছি না। সমাজে এসব শিশুদের পক্ষে প্রতিবাদ করাও কঠিন।"

এমন গুরুতর অভিযোগের পর অভিভাবকরা প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন। তারা আশা করছেন, বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের সঙ্গে এমন অন্যায় বন্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে।

৫৪১ বার পড়া হয়েছে

শেয়ার করুন:

মন্তব্য

(0)

বিজ্ঞাপন
৩২০ x ৫০
বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

৩০০ x ২৫০

বিজ্ঞাপন
এলাকার খবর

বিজ্ঞাপন

৩০০ x ২৫০

বিজ্ঞাপন














সর্বশেষ সব খবর
জাতীয় নিয়ে আরও পড়ুন

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন
৩২০ x ৫০
বিজ্ঞাপন