হলি আর্টিজান হামলার ৯ বছর: নিহতদের স্মরণে শ্রদ্ধা

২০১৬ সালের ১ জুলাই রাতে সংঘটিত ওই হামলায় দুই পুলিশ কর্মকর্তা ও ১৭ জন বিদেশিসহ মোট ২২ জন নিহত হন। পরে অভিযানে পাঁচ জঙ্গিও নিহত হয়।

স্মরণীয় ওই রাতে গুলশান ২ নম্বর সেকশনের ৭৯ নম্বর সড়কের ৫ নম্বর বাড়িটির ভেতরে স্থানীয় ও বিদেশি নাগরিকরা খাবার ও আড্ডায় মগ্ন ছিলেন। রাত ৯টার দিকে কয়েকজন তরুণ জঙ্গি অতর্কিতে সেখানে ঢুকে বিদেশি নাগরিকদের খুঁজতে থাকে এবং মুহূর্তেই গুলির শব্দে কেঁপে ওঠে চারদিক। এতে ঘটনাস্থলে বহু হতাহতের ঘটনা ঘটে।

হামলার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে গিয়ে পুলিশের কর্মকর্তারা প্রতিরোধের চেষ্টা করেন। এতে তৎকালীন ডিবি কর্মকর্তা সহকারী কমিশনার মো. রবিউল ইসলাম এবং বনানী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. সালাহউদ্দিন আহম্মেদ নিহত হন।

পরদিন সকালে সেনাবাহিনীর প্যারা-কমান্ডোদের ‘অপারেশন থান্ডার বোল্ট’ অভিযান চালানো হয়। অভিযানে পাঁচ জঙ্গি—রোহান ইবনে ইমতিয়াজ, নিবরাস ইসলাম, মীর সামীহ মোবাশ্বীর, শফিকুল ইসলাম উজ্জ্বল ও খায়রুল ইসলাম পায়েল নিহত হয়।

হামলার পর গুলশান থানায় একটি মামলা করে পুলিশ। তদন্তের দায়িত্ব পায় ঢাকা মহানগর পুলিশের কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্স ন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিট। চার বছর তদন্ত শেষে আটজনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করা হয়। তাদের মধ্যে শহীদুল ইসলাম খালেদ ও মামুনুর রশীদ রিপন পলাতক ছিলেন।

২০২০ সালের ২৭ নভেম্বর ঢাকার সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনাল সাত আসামিকে মৃত্যুদণ্ড দেন। পরে মামলাটি হাইকোর্টে ডেথ রেফারেন্স ও আপিলের পর্যায়ে গেলে ২০২৩ সালের ১০ অক্টোবর বিচারপতি সহিদুল করিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ সাতজনের আমৃত্যু কারাদণ্ডের আদেশ দেন।

দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন, রাকিবুল হাসান রিগ্যান, মো. জাহাঙ্গীর হোসেন ওরফে রাজীব গান্ধী, আসলাম হোসেন, হাদিসুর রহমান, আবদুস সবুর খান ওরফে সোহেল মাহফুজ, মামুনুর রশীদ রিপন, শরিফুল ইসলাম খালেদ।

ঘটনার দুই বছর পর হলি আর্টিজানের সেই বাড়ি ভেঙে ফেলা হয়। বাড়ির প্রবেশপথে নির্মিত হয় একটি শোকবেদী। প্রতিবছর ১ জুলাই সেখানে নিহতদের স্মরণে শ্রদ্ধা জানায় বাংলাদেশ সরকার, বিভিন্ন বিদেশি দূতাবাস, হাইকমিশন এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। পুলিশ বাহিনীর দুই শহীদ কর্মকর্তার স্মরণে উর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও সেখানে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান।