ধর্ষণ মামলার আসামি ফজর আলীর ছবি নিয়ে রাজনৈতিক বিতর্ক

রবিবার, ২৯ জুন, ২০২৫ ৮:৪৭ পূর্বাহ্ন
শেয়ার করুন:
কুমিল্লার মুরাদনগরে প্রবাসীর স্ত্রীকে ধর্ষণের ঘটনায় অভিযুক্ত ফজর আলীর রাজনৈতিক পরিচয় নিয়ে তৈরি হয়েছে জটিলতা।
একদিকে তাকে বিএনপির কর্মী বলে প্রচার চালানো হচ্ছে, অন্যদিকে সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হওয়া একাধিক ছবিতে দেখা যাচ্ছে আওয়ামী লীগ নেতাদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ অবস্থানে রয়েছেন তিনি।
শনিবার (২৮ জুন) সন্ধ্যা থেকে ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হওয়া ছবিগুলোর একটিতে ফজর আলীকে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের নেতা ও ইউপি চেয়ারম্যান গোলাম কিবরিয়া খোকনের পাশে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। আরেক ছবিতে দেখা যায়, তিনি খোকনের সঙ্গে একসঙ্গে খাচ্ছেন। এমনকি একটি আওয়ামী লীগ মিছিলের সামনের সারিতেও তার উপস্থিতি ধরা পড়েছে।
তবে এই ঘটনার পরপরই বিভিন্ন মহল থেকে দাবি করা হয়, ফজর আলী বিএনপির সক্রিয় কর্মী। এ নিয়ে স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলেছে।
স্থানীয় একাধিক বাসিন্দার ভাষ্য, ফজর আলীর কোনো নির্দিষ্ট পেশা ছিল না। তিনি চেয়ারম্যান খোকনের আশপাশেই থাকতেন এবং ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের বিভিন্ন কর্মসূচিতে জড়িত থাকতেন। টেন্ডার সংশ্লিষ্ট কিছু কাজ করেই জীবিকা চালাতেন। গত বছর আওয়ামী লীগ সরকারের বিরোধিতায় ছাত্রজনতার আন্দোলনের পর থেকে ফজর ধীরে ধীরে খোকনের ছায়া থেকে সরে গিয়ে বিএনপির ঘনিষ্ঠ হওয়ার চেষ্টা করেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এমনকি ইউনিয়ন পর্যায়ে পদ পাওয়ার চেষ্টাও নাকি করেছিলেন তিনি।
রামচন্দ্রপুর দক্ষিণ ইউনিয়ন বিএনপির এক নেতা আল আমিন বলেন, “ফজর আলী কখনোই বিএনপির কেউ ছিলেন না। তিনি খোকন চেয়ারম্যানের বডিগার্ড হিসেবে পরিচিত ছিলেন।” একই সুরে কথা বলেন মুরাদনগর উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক মহিউদ্দিন অঞ্জনও।
তিনি বলেন, “আওয়ামী লীগের নেতাদের সঙ্গে তার একাধিক ছবি আমাদের হাতে আছে। কিন্তু বিএনপির কারও সঙ্গে একটি ছবিও নেই। তাকে বিএনপির সঙ্গে জড়িয়ে দেওয়া একটি অপচেষ্টা ছাড়া কিছুই নয়।”
অন্যদিকে ইউপি চেয়ারম্যান গোলাম কিবরিয়া খোকন দাবি করেন, “ফজর আলীকে আমি তেমন চিনি না। আমি একজন চেয়ারম্যান, অনেকেই এসে ছবি তোলে সব মনে রাখা সম্ভব না।”
উল্লেখ্য, ২৬ জুন রাতে মুরাদনগরের রামচন্দ্রপুর দক্ষিণ ইউনিয়নের বাহেরচর পাঁচকিত্তা গ্রামে ফজর আলী এক অন্তঃসত্ত্বা নারীকে ধর্ষণ করেন বলে অভিযোগ উঠে। নারীটি তার বাবার বাড়িতে বেড়াতে এসেছিলেন। ঘটনার ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে তোলপাড় শুরু হয়। পরদিন ভুক্তভোগী নারী থানায় মামলা করেন। এ ঘটনায় পুলিশ মূল অভিযুক্ত ফজর আলীসহ ভিডিও ছড়ানোর অভিযোগে আরও চারজনকে গ্রেপ্তার করে।
১২৬ বার পড়া হয়েছে