বিডিআর হত্যাকাণ্ড: রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ তদন্ত কমিশনের

বুধবার, ২৫ জুন, ২০২৫ ৭:৫৪ পূর্বাহ্ন
শেয়ার করুন:
২০০৯ সালের পিলখানা ট্র্যাজেডিকে দীর্ঘমেয়াদি ষড়যন্ত্র আখ্যা দিয়ে জাতীয় স্বাধীন তদন্ত কমিশন বলেছে, ওই ঘটনায় তৎকালীন গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর দায়িত্ব পালনে চরম অবহেলা ও ব্যর্থতা ছিল।
একইসঙ্গে কমিশনের দাবি, ঘটনার পেছনে তৎকালীন রাজনৈতিক নেতাদের ‘বিভিন্ন মাত্রার’ সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ মিলেছে।
বুধবার (২৫ জুন) রাজধানীর ধানমন্ডির বাংলাদেশ রেফারেন্স ইনস্টিটিউট ফর কেমিক্যাল মেজারমেন্টস (বিআরআইসিএম) মিলনায়তনে আয়োজিত তৃতীয় সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানায় তদন্ত কমিশন। ২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি ঢাকার পিলখানায় বিডিআর (বর্তমান বিজিবি) সদর দপ্তরে সংঘটিত হত্যাকাণ্ড নিয়ে কমিশনের এ পর্যন্ত ১১৪টি কর্মদিবস অতিবাহিত হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে কমিশনের সভাপতি মেজর জেনারেল (অব.) এ এল এম ফজলুর রহমান লিখিত বক্তব্যে বলেন, “রাজনৈতিকভাবে সমস্যা সমাধানের নামে সময়ক্ষেপণ এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিষ্ক্রিয়তার সুযোগে বিদ্রোহীরা নির্বিঘ্নে নৃশংস হত্যাকাণ্ড চালাতে পেরেছে।”
তিনি জানান, ২৫ ফেব্রুয়ারি সকাল থেকেই পিলখানায় আটকে পড়া সেনা কর্মকর্তারা এবং তাদের পরিবারের সদস্যরা জীবন বাঁচানোর আকুতি জানালেও কার্যকর কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি।
কমিশনের তথ্যানুসারে, এ পর্যন্ত শহিদ পরিবার, বেঁচে ফেরা সেনা কর্মকর্তা, রাজনৈতিক নেতা, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য, সাংবাদিক এবং দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিসহ মোট ১৫৮ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়েছে। এর মধ্যে ১৫ জন জীবিত কর্মকর্তা, ৬ জন শহিদ পরিবারের সদস্য, ২৫ জন কারাবন্দি এবং ২৯ জন কারামুক্ত ব্যক্তি রয়েছেন। এছাড়া আটজন রাজনৈতিক নেতার সাক্ষ্য নেওয়া হয়েছে, যাদের মধ্যে কেউ কারাগারে এবং কেউ কেউ বিদেশে অবস্থান করছেন।
আওয়ামী লীগ নেতা মির্জা আজম ও জাহাঙ্গীর কবির নানক চিঠির মাধ্যমে লিখিত বক্তব্য দিয়েছেন বলে জানিয়েছে কমিশন। পাশাপাশি সাবেক সেনা, নৌ ও বিমানবাহিনীর কর্মকর্তাদেরও সাক্ষ্য নেওয়া হয়েছে।
কমিশন জানায়, ছয়টি দেশের দূতাবাস এবং জাতিসংঘের বাংলাদেশ অফিস থেকেও তথ্য সংগ্রহের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ এবং ৩৩ জনের বিদেশ গমন নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
তদন্তের পরিধি ও জটিলতা বিবেচনায় কমিশন ২০২৫ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সময়সীমা বাড়ানোর অনুরোধ করেছে।
১৩৭ বার পড়া হয়েছে