সর্বশেষ

মতামত

গাজা যুদ্ধ ও মধ্যপ্রাচ্যে ইসরায়েলের হামলায় ২২৭ জন সাংবাদিক হত‍্যা

মনজুর এহসান চৌধুরী 
মনজুর এহসান চৌধুরী 

মঙ্গলবার, ১৭ জুন, ২০২৫ ২:২৯ পূর্বাহ্ন

শেয়ার করুন:
ফিলিস্তিনের গাজা, লেবানন ও ইরানসহ মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন অঞ্চলে ইসরায়েলি হামলায় সাংবাদিক হত্যা, সংবাদমাধ্যম ধ্বংস এবং বেসামরিক স্থাপনার ওপর আক্রমণের ঘটনা ক্রমাগত বাড়ছে।

জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলো এসব ঘটনাকে আন্তর্জাতিক আইন ও মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন হিসেবে অভিহিত করেছে।

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে ২০২৫ সালের ১০ জুন পর্যন্ত গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় ২২৭ জন সাংবাদিক নিহত হয়েছেন। গাজার সরকারি গণমাধ্যম দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, এদের অধিকাংশই ফিল্ড রিপোর্টার, ফটোসাংবাদিক এবং ক্যামেরাপার্সন, যারা সরাসরি যুদ্ধক্ষেত্র থেকে সংবাদ সংগ্রহ করছিলেন। এই সময়ে গাজায় মোট নিহতের সংখ্যা ৫৪ হাজারেরও বেশি, আহত ১ লাখ ২৬ হাজারের অধিক।

২০২১ সালের মে মাসে ইসরায়েলি বিমান হামলায় গাজা সিটির বিখ্যাত আল-জাল্লা ভবন সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে যায়। এই ভবনে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা ও অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস (এপি)-এর অফিস ছিল। হামলার সময় ভবনটি খালি করার জন্য মাত্র এক ঘণ্টা সময় দেওয়া হয়, ফলে বহু সাংবাদিক তাদের সরঞ্জাম ও গুরুত্বপূর্ণ ডকুমেন্ট হারান।

২০২৩ সালের অক্টোবরে দক্ষিণ বৈরুতে হিজবুল্লাহ-সংযুক্ত আল-মানার টিভি স্টুডিওতে ইসরায়েলি বিমান হামলা চালানো হয়। এতে স্টুডিওর সম্প্রচার কার্যক্রম ব্যাহত হয় এবং মিডিয়া কর্মীরা নিরাপত্তাহীনতায় পড়েন।

২০২৫ সালের ১৬ জুনে ইসরায়েলি বিমানবাহিনী সরাসরি হামলা চালায় ইরানের জাতীয় টিভি চ্যানেল IRIB-এর তেহরান সদর দপ্তরে। একই সময়ে ইরানের কেরমানশাহ শহরের ফারাবি হাসপাতালে ও অন্যান্য বেসামরিক স্থাপনাতেও হামলা হয়, যা আন্তর্জাতিক আইনে যুদ্ধাপরাধ হিসেবে গণ্য।

আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ:
জাতিসংঘের মানবাধিকার প্রধান ভলকার তুর্ক ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে বলেন, “ইসরায়েল গাজায় ভয়াবহভাবে যে সামরিক অভিযান চালিয়েছে সেটি ধারাবাহিকভাবে আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করছে। তা কোনোভাবেই সমর্থনযোগ্য নয়”। গাজায় খাদ্য, পানি ও ওষুধ সরবরাহ বন্ধ, হাসপাতাল ও সংবাদমাধ্যম লক্ষ্য করে হামলা—এসবই যুদ্ধাপরাধের পর্যায়ে পড়ে বলে আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞরা মত দিয়েছেন।

তবুও ইসরায়েল তার সামরিক অভিযান ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের ধারা অব্যাহত রেখেছে। ফলে, গাজাসহ পুরো মধ্যপ্রাচ্যে সাংবাদিকতা ও মানবিক নিরাপত্তা চরম হুমকির মুখে পড়েছে, যা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের জন্য গভীর উদ্বেগের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।

লেখক: সাংবাদিক, কলামিস্ট

১২৫ বার পড়া হয়েছে

শেয়ার করুন:

মন্তব্য

(0)

বিজ্ঞাপন
৩২০ x ৫০
বিজ্ঞাপন
মতামত নিয়ে আরও পড়ুন

বিজ্ঞাপন

২৫০ x ২৫০

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন
৩২০ x ৫০
বিজ্ঞাপন