ইরানের রাষ্ট্রীয় সম্প্রচার কেন্দ্রে ইসরায়েলি বিমান হামলা

বিস্ফোরণের শব্দে স্টুডিও কেঁপে ওঠে, উপস্থাপক ক্যামেরার বাইরে চলে যান এবং সম্প্রচার সাময়িকভাবে বন্ধ হয়ে যায়।

সোমবার সকালে, তেহরানের ৩ নম্বর জেলায় অবস্থিত IRIB ভবনে ইসরায়েলি বিমান হামলা হয়। হামলার সময় স্টুডিওতে উপস্থিত সংবাদ উপস্থাপক সাহার ইমামি দ্রুত ক্যামেরার বাইরে চলে যান এবং স্টুডিও ধোঁয়া ও ধূলায় ভরে যায়। ভবনটি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, আগুন ও ধোঁয়া ছড়িয়ে পড়ে। কিছু কর্মচারী আহত হয়েছেন বলে জানানো হয়েছে, তবে নির্দিষ্ট হতাহতের সংখ্যা প্রকাশ করা হয়নি। হামলার পর কিছু সময়ের জন্য সম্প্রচার বন্ধ হয়ে যায়, পরে অন্য স্টুডিও থেকে সম্প্রচার পুনরায় শুরু হয়।

ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ বলেন, “ইরানি প্রচার ও উস্কানিমূলক সম্প্রচারকারী সংস্থাকে IDF আক্রমণ করেছে, এবং আমরা ইরানি স্বৈরশাসককে যেখানেই হোক পরাজিত করব।” ইসরায়েল দাবি করেছে, এই ভবনটি সামরিক কার্যক্রমের জন্য ব্যবহৃত হচ্ছিল এবং হামলার আগে এলাকাবাসীকে সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল।

ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র হামলাটিকে “যুদ্ধাপরাধমূলক নৃশংসতা” বলে আখ্যা দেন এবং জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের দ্রুত হস্তক্ষেপ দাবি করেন। IRIB–এর জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বলেন, “সামরিক আঘাতের মাধ্যমে ইসলামি বিপ্লবের কণ্ঠ স্তব্ধ করা যাবে না”।

সাংবাদিক সুরক্ষা কমিটি (CPJ) এই হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে এবং সাংবাদিক ও সংবাদমাধ্যমের ওপর হামলা বন্ধের আহ্বান জানিয়েছে।

বিশ্লেষকদের মতে, সংবাদমাধ্যমের ওপর সরাসরি হামলা আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন লঙ্ঘনের শামিল এবং এই ঘটনা ইরানিদের জন্য বড় ধরনের মনস্তাত্ত্বিক ও প্রতীকী বার্তা বহন করে। পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় ইরানও ইসরায়েলের সংবাদমাধ্যমকে হুঁশিয়ারি দিয়েছে।

তেহরানে ইরানের রাষ্ট্রীয় সম্প্রচার কেন্দ্র লক্ষ্য করে ইসরায়েলি বিমান হামলা চলমান ইসরায়েল-ইরান যুদ্ধের একটি বড় ঘটনা। এই হামলা শুধু সামরিক নয়, বরং তথ্য ও মনস্তাত্ত্বিক যুদ্ধেরও অংশ, যা দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা আরও বাড়িয়ে তুলেছে।