তীব্র গরমের মধ্যে ট্রেনের ছাদে উঠে ঢাকা ফিরছেন যাত্রীরা

রবিবার, ১৫ জুন, ২০২৫ ১২:৪০ অপরাহ্ন
শেয়ার করুন:
জামালপুরের ইসলামপুর রেলস্টেশনের কাছ থেকে ঢাকাগামী যাত্রীরা সিট না পেয়ে উত্তপ্ত ট্রেনের ছাদে উঠে ঢাকায় ফিরছেন।
ট্রেনের টিকিট না পাওয়া এবং অনলাইনে টিকিট সংগ্রহে জটিলতার কারণে অনেক যাত্রী নিরুপায় হয়ে এই সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন। জানা গেছে, ঈদুল আজহার ছুটির পরে অফিস খোলার কারণে সিটের অভাব দেখা দিয়েছে, ফলে যাত্রীরা বাধ্য হয়ে ট্রেনের ছাদে উঠছেন।
প্রতিদিন দুপুরের দিকে দেওয়ানগঞ্জ থেকে ছেড়ে ইসলামপুরের মাধ্যমে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা হয় দেওয়ানগঞ্জ কমিউটার ট্রেন। গত কয়েক দিন ধরে এই ট্রেনটি প্রচুর যাত্রীর সমাগমে ভরে গেছে। সিটের সংখ্যার চেয়ে যাত্রীর সংখ্যা অনেক বেশি হওয়ায় অস্বস্তি ও দুর্ভোগ বাড়ছে। আর অনলাইনে টিকিট সংগ্রহের জন্য অনেকেরই অসুবিধা, কারণ টিকিট খুব দ্রুত শেষ হয়ে যায় এবং কালোবাজারিরা তা উচ্চমূল্যে বিক্রি করে থাকেন। সাধারণ যাত্রীরা কম দামে টিকিট কিনতে না পারায়, বাধ্য হয়ে ট্রেনের ছাদে উঠতে বাধ্য হন।
যাত্রীরা জানান, ঢাকার জন্য টিকিটের দাম সাধারণত ২৫০ টাকা, কিন্তু কালোবাজারিরা এক টিকিট ১০০০ থেকে ১৫০০ টাকায় বিক্রি করছে। অনেকেরই ঈদের সময়ে বেতন ও বোনাস শেষ হয়ে গেছে, তাই বেশি দামে টিকিট কিনতে পারছেন না। এ অবস্থায়, সিটের অভাবে ছাদে ওঠা ছাড়া অন্য কোনও উপায় নেই।
দূরদূরান্তের দিনমজুর ও শ্রমিকরা জানিয়েছেন, অন্যান্য পরিবহনের তুলনায় এই ট্রেনের ভাড়া তুলনামূলক কম, তাই তারা কষ্ট করে হলেও ছাদে উঠে ঢাকায় ফিরছেন। গাইবান্ধা থেকে আসা কয়েকজন যাত্রী বলেন, প্রচণ্ড রোদে ট্রেনের ছাদ এতটাই গরম যে সেখানে থাকাই কষ্টের। তারা বলছেন, ৫ থেকে ৭ ঘণ্টা এইভাবে ভোগান্তির মধ্যে থাকতে হবে, যা তাদের জন্য কঠিন।
বাংলাদেশ রেলওয়ে পুলিশের সহকারী সাব-ইন্সপেক্টর মো. ইসরাফিল কালবেলা বলেন, ‘তীব্র গরমের মধ্যে এই পরিস্থিতি দেখে হতবাক লাগছে। মানুষ বাধ্য হয়ে ছাদে উঠছে, আমাদের কিছু করার ক্ষমতা কম। বেসরকারি ট্রেন হওয়ায় আমাদের নিয়ন্ত্রণও সীমিত।’
ইসলামপুর কমিউটার ট্রেনের কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, তাদের ট্রেনের আসনসংখ্যা খুবই সীমিত। শনিবার এই রুটে প্রায় ৫ হাজার যাত্রী ঢাকা পৌঁছেছেন। আজও প্রচুর যাত্রী আসার সম্ভাবনা থাকায়, তাদের জন্য সিটের সংকট দেখা দিয়েছে। এই রুটে আরও ট্রেন চালানোর দাবি জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা, যাতে সাধারণ যাত্রীরা নির্ভরযোগ্য ও সুরক্ষিত পরিবহনে ঢাকায় যেতে পারেন।
ইসলামপুর রেলস্টেশনের মাস্টার মো. শাহীন মিয়া বলেন, দেওয়ানগঞ্জ থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে চারটি ট্রেন চলাচল করে, যার মোট আসনের সংখ্যা মাত্র ৪০০। অথচ এই ট্রেনে প্রতিদিন ৮ থেকে ১০ হাজার যাত্রী আসা-যাওয়া করছে। এত সংখ্যক যাত্রীদের জন্য সিট দেওয়া সম্ভব নয়, ফলে অনেকেই ট্রেনের ছাদে উঠছেন, যা জীবনঝুঁকি বাড়াচ্ছে।
১০৬ বার পড়া হয়েছে