ইরান-ইসরাইল সংঘাত থামাতে ট্রাম্পের কার্যক্রম শুরু

রবিবার, ১৫ জুন, ২০২৫ ১১:১৫ পূর্বাহ্ন
শেয়ার করুন:
মধ্যপ্রাচ্যে ইরান ও ইসরাইলের মধ্যে চলমান সংঘাত নতুন মাত্রায় পৌঁছেছে। সাম্প্রতিক ইসরাইলি হামলা এবং এর পাল্টা জবাবে ইরানি আক্রমণ এক অস্থির পরিস্থিতির জন্ম দিয়েছে।
এরই মাঝে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তাঁর দ্বিতীয় মেয়াদের শুরুতে দেওয়া শান্তির প্রতিশ্রুতিকে সামনে রেখে সংঘাত প্রশমনের কূটনৈতিক চেষ্টা শুরু করেছেন। তবে বাস্তব পরিস্থিতি তাঁর উদ্যোগে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
সূত্র জানায়, ট্রাম্প প্রশাসন ইরানের পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছিল এবং ওমানের মধ্যস্থতায় আমেরিকান ও ইরানি প্রতিনিধিদের মধ্যে ছয় দফা আলোচনার সূচি নির্ধারিত ছিল। তবে সাম্প্রতিক হামলার কারণে আলোচনা স্থগিত করা হয়েছে।
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এক বিবৃতিতে বলেন, “আমি চাই আলোচনার মাধ্যমে একটা সমাধান হোক… আমরা চুক্তির খুব কাছাকাছি পৌঁছে গিয়েছিলাম।” তিনি ইসরাইলকে হামলা থেকে বিরত রাখার জন্য উৎসাহ দিলেও, পরে ইসরাইলি হামলাকে “চমৎকার” বলেও মন্তব্য করেন।
ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ কূটনৈতিক সমঝোতার উদ্দেশ্যে ইরানি প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছিলেন। তবে ইসরাইলি সামরিক অভিযানের ফলে সেই প্রচেষ্টা ভেস্তে যায়।
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প স্পষ্ট করে বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র ইসরাইলের হামলায় সরাসরি জড়িত নয়, তবে ইরান যদি আমেরিকান স্বার্থে আঘাত করে, তাহলে “আমেরিকার সামরিক শক্তি এমনভাবে ব্যবহৃত হবে, যা আগে কখনও দেখা যায়নি।” তিনি ইরানকে হুঁশিয়ার করে বলেন, দ্রুত চুক্তিতে না এলে আরও ভয়াবহ পরিণতি অপেক্ষা করছে।
মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন নাগরিকদের নিরাপত্তা বিবেচনায় বেশ কয়েকটি দূতাবাস ও কনস্যুলেট সতর্কাবস্থায় রাখা হয়েছে এবং কিছু স্থান থেকে কর্মীদের সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
ট্রাম্প সম্প্রতি রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে এক ফোনালাপে একমত হয়েছেন যে “ইসরাইল-ইরান যুদ্ধ থামা উচিত।” তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, “আমরা সহজেই একটি চুক্তি করিয়ে এই রক্তক্ষয়ী সংঘাতের অবসান ঘটাতে পারি।”
তবে রিপাবলিকান পার্টির ভেতরেই এই ইস্যুতে বিভাজন দেখা দিয়েছে। ট্রাম্পের ‘আমেরিকা ফার্স্ট’ নীতির সমর্থকরা বলছেন, ইসরাইলকে অন্ধ সমর্থন দিয়ে মধ্যপ্রাচ্যে আরও একটি যুদ্ধে জড়ানো ট্রাম্পের নির্বাচনী অঙ্গীকারের সঙ্গে সাংঘর্ষিক।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ট্রাম্প এখন একদিকে শান্তির বার্তা দিচ্ছেন, অন্যদিকে হুঁশিয়ারি দিচ্ছেন—এই দ্বৈত কৌশলে তাঁর কূটনৈতিক প্রচেষ্টা দুর্বল হয়ে পড়ছে।
পর্যবেক্ষকদের মতে, সংঘাত নিরসনে ট্রাম্প কূটনৈতিক আলোচনা, আন্তর্জাতিক সমন্বয় এবং হুমকির কৌশল গ্রহণ করলেও ইসরাইলি আগ্রাসন ও দলীয় রাজনীতির চাপ তাঁর উদ্যোগকে এখনও সফল হতে দেয়নি।
১৪৫ বার পড়া হয়েছে