সর্বশেষ

জাতীয়

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞা: চাপে দুই দেশের বাণিজ্য, উদ্বেগে রপ্তানিকারকরা

স্টাফ রিপোর্টার
স্টাফ রিপোর্টার

সোমবার, ১৯ মে, ২০২৫ ৪:৩১ পূর্বাহ্ন

শেয়ার করুন:
ভারতের স্থলবন্দর ব্যবহার করে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক ও প্রক্রিয়াজাত খাদ্যসহ বেশ কয়েকটি পণ্য আমদানিতে হঠাৎ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করায় দুই দেশের বাণিজ্যে নতুন অস্থিরতা দেখা দিয়েছে।

বাংলাদেশি ব্যবসায়ী ও অর্থনীতিবিদরা ভারতের এ পদক্ষেপকে "অশুল্ক বাণিজ্যিক বাধা" হিসেবে আখ্যা দিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

ভারতের নতুন আদেশ অনুযায়ী, সব স্থলবন্দর দিয়ে তৈরি পোশাক আমদানি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এছাড়া উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলো—আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরামের—শুল্ক স্টেশনগুলো দিয়ে প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, পানীয়, প্লাস্টিক পণ্য, আসবাবসহ আরও কিছু পণ্য আমদানিতেও নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে।


নিষেধাজ্ঞার প্রভাব ইতোমধ্যেই মাঠপর্যায়ে পড়তে শুরু করেছে। প্রাণ গ্রুপের বিপণন পরিচালক কামরুজ্জামান কামাল জানান, বুড়িমারী বন্দর দিয়ে ভারতে পাঠানোর জন্য প্রস্তুত থাকা ১৭টি ট্রাক পণ্য আটকে গেছে। এসব পণ্যের মূল্য প্রায় এক কোটি টাকা।

তিনি বলেন, “রাতেই খবর পেয়েছি যে এসব পণ্য ঢুকতে পারবে না। এখন ট্রাকগুলো ফেরত আনার প্রস্তুতি চলছে।”

বাংলাদেশ ব্যাংক ও ইপিবি সূত্র জানায়, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বাংলাদেশ ভারতের বাজারে মাত্র ১৫৭ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি করেছে, যেখানে ভারত থেকে আমদানি হয়েছে ৯০০ কোটি ডলারের পণ্য। অর্থাৎ, বাংলাদেশের বাণিজ্য ঘাটতি ৭৪৩ কোটি ডলার।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নিষেধাজ্ঞার সবচেয়ে বড় প্রভাব পড়বে তৈরি পোশাক খাতে, যা ভারতের বাজারে বাংলাদেশের প্রধান রপ্তানি পণ্য।

সবচেয়ে ব্যস্ত বেনাপোল-পেট্রাপোল স্থলবন্দরে গতকাল ৩৬টি পোশাকবাহী ট্রাক ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে ছিল। তবে নিষেধাজ্ঞার কারণে ক্লিয়ারেন্স দেওয়া হয়নি।

অন্যদিকে, পঞ্চগড়ের বাংলাবান্ধা থেকে পাঠানো একটি পিভিসি দরজাবাহী ট্রাক ভারতে ঢুকতে না পেরে ফেরত এসেছে।

ঢাকা চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি তাসকিন আহমেদ বলেন, “ভারতের এ সিদ্ধান্ত শুধুমাত্র বাণিজ্যিক নয়, এর রাজনৈতিক ব্যাখ্যাও আছে। এর সমাধান কূটনৈতিক পর্যায়ে হওয়া উচিত।”

তিনি জানান, প্রতিবছর স্থলবন্দর দিয়ে প্রায় ৭৫ কোটি ডলারের পণ্য ভারতে রপ্তানি হয়, যার বেশিরভাগই তৈরি পোশাক। নিষেধাজ্ঞা এভাবে অব্যাহত থাকলে তা উভয় দেশের জন্যই ক্ষতিকর হবে।


বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন বলেছেন, “আমরা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি। দু’এক দিনের মধ্যে বিষয়টি পরিষ্কার হবে এবং তারপর করণীয় নির্ধারণ করা হবে।”

তিনি আরও বলেন, “উভয় দেশ ভৌগোলিকভাবে একে অপরের ওপর নির্ভরশীল। এ ধরনের একতরফা সিদ্ধান্ত শুধু ব্যবসায় ক্ষতি করে না, বরং আঞ্চলিক স্থিতিশীলতাও ব্যাহত করে।”


সানেমের নির্বাহী পরিচালক ড. সেলিম রায়হান বলেন, “এই অশুল্ক বাধা শুধু বাণিজ্যে নয়, পারস্পরিক আস্থায়ও ধাক্কা দেবে। এখন প্রয়োজন দুই দেশের মধ্যে সমঝোতার ভিত্তিতে দ্রুত সমাধান।”

১১৫ বার পড়া হয়েছে

শেয়ার করুন:

মন্তব্য

(0)

বিজ্ঞাপন
৩২০ x ৫০
বিজ্ঞাপন
জাতীয় নিয়ে আরও পড়ুন

বিজ্ঞাপন

২৫০ x ২৫০

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন
৩২০ x ৫০
বিজ্ঞাপন