স্থলপথে ভারতের নতুন নিষেধাজ্ঞায় বিপর্যয়ে ৭৭০ মিলিয়ন ডলারের রপ্তানি

রবিবার, ১৮ মে, ২০২৫ ১:৫১ অপরাহ্ন
শেয়ার করুন:
বাংলাদেশ থেকে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলসহ কিছু রাজ্যে স্থলপথে নির্দিষ্ট পণ্য আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে ভারত।
১৭ মে (শনিবার) দেশটির পক্ষ থেকে জানানো হয়, এখন থেকে এসব পণ্য কেবল সমুদ্রবন্দর দিয়ে প্রবেশ করতে পারবে।
নতুন এই নিষেধাজ্ঞার ফলে ফল, প্রক্রিয়াজাত খাবার, কার্বনেটেড ও ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, তুলার বর্জ্য, প্লাস্টিক পণ্য (কাঁচামাল ব্যতীত) এবং কাঠের আসবাবপত্র ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা, মিজোরাম ও পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্ধা ও ফুলবাড়ি সীমান্ত দিয়ে প্রবেশ করা নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
ভারতের এই সিদ্ধান্ত বাংলাদেশ-ভারত দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যে বড় ধরনের প্রভাব ফেলবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে গ্লোবাল ট্রেড রিসার্চ ইনিশিয়েটিভ (জিটিআরআই)। সংস্থাটির মতে, প্রায় ৭৭০ মিলিয়ন ডলারের রপ্তানি ঝুঁকিতে পড়বে, যা ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের মোট রপ্তানির ৪২ শতাংশের সমান।
বিশ্লেষকদের মতে, এটি কেবল অর্থনৈতিক নয়, কূটনৈতিক বার্তাও বহন করছে। ভারতীয় গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, বাংলাদেশ সম্প্রতি ভারতীয় সুতা, চাল, গুঁড়া দুধ, কাগজ, মাছ ও তামাকজাত পণ্যে একাধিক বিধিনিষেধ আরোপ করেছে। একইসঙ্গে, ভারতের পণ্য পরিবহনে প্রতি কিলোমিটারে ১.৮ টাকা হারে ট্রানজিট ফি ধার্য করে।
জিটিআরআইর দাবি, এসব পদক্ষেপের জবাব হিসেবেই ভারত এ নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। সংস্থাটি আরও জানায়, বাংলাদেশ-চীন সাম্প্রতিক বিনিয়োগ চুক্তি এবং প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসের চীন সফরে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলকে 'সমুদ্রবিচ্ছিন্ন' বলা—এসব বিষয়ও ভারতের অবস্থানকে প্রভাবিত করেছে।
বিশেষভাবে, বাংলাদেশ প্রতিবছর প্রায় ৭০০ মিলিয়ন ডলারের পোশাক রপ্তানি করে ভারতে, যা এতদিন মূলত স্থলবন্দর ব্যবহার করে পাঠানো হতো। তবে এখন থেকে শুধুমাত্র কলকাতা ও মহারাষ্ট্রের নাভা শেভা সমুদ্রবন্দর দিয়ে এই পোশাক আমদানি করতে পারবে ভারতীয় আমদানিকারকরা। এতে রপ্তানির খরচ ও সময় বাড়বে, ফলে প্রতিযোগিতামূলক বাজারে বাংলাদেশের অবস্থান দুর্বল হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
দুই দেশের দীর্ঘদিনের বাণিজ্যিক সম্পর্ক সত্ত্বেও সাম্প্রতিক ঘটনাগুলো নতুন উত্তেজনার ইঙ্গিত দিচ্ছে। রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক চাপের কারণে ভবিষ্যতে এই সম্পর্ক আরও জটিল হতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
১১৪ বার পড়া হয়েছে