সর্বশেষ

রাজনীতি

আজ ৫ মে, হেফাজতে ইসলামের নেতা কর্মীদের ওপর নৃশংসতার এক যুগ

স্টাফ রিপোর্টার
স্টাফ রিপোর্টার

রবিবার, ৪ মে, ২০২৫ ৭:৩৭ অপরাহ্ন

শেয়ার করুন:
এক যুগ আগে ২০১৩ সালের ৫ মে রাজধানীর শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের ডাকা মহাসমাবেশ ও পরবর্তী সহিংসতায় রাজধানীসহ দেশের সাত জেলায় প্রাণ হারান বহু মানুষ।

সরকারি হিসাব অনুযায়ী ওই সময় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে ১৯ জন নিহত হন। তবে মানবাধিকার সংগঠন 'অধিকার' দাবি করে, ওই দিন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানে অন্তত ৬১ জন হেফাজত কর্মী নিহত হন।

সরকারি হিসাব অনুযায়ী, ওই ঘটনায় ১৯ জন নিহত হয়েছিলেন। তবে মানবাধিকার সংগঠন ‘অধিকার’-এর দাবি, কেবল শাপলা চত্বরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানে নিহত হন অন্তত ৬১ জন হেফাজত কর্মী। এই প্রতিবেদন প্রকাশ করায় ‘অধিকার’-এর তৎকালীন সেক্রেটারি আদিলুর রহমান খান ও পরিচালক এএসএম নাসির উদ্দিন এলানের বিরুদ্ধে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) আইনের ৫৭ ধারায় মামলা করে তৎকালীন সরকার।

শাপলা চত্বরের ঘটনার জেরে ঢাকাসহ সাত জেলায় হেফাজতের বিরুদ্ধে দায়ের করা হয় ৫৩টি মামলা। এক দশক পেরিয়ে গেলেও এর মধ্যে মাত্র ৪টি মামলার নিষ্পত্তি হয়েছে, বাকি ৪৯টি এখনও ঝুলে আছে।

পরবর্তী সময়েও হেফাজতের সঙ্গে সরকারের সংঘাত কমেনি। ২০২১ সালের ২৬ মার্চ বায়তুল মোকাররমে বিক্ষোভ কেন্দ্র করে আবারও সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে। এ ঘটনায় সারাদেশে দায়ের হয় আরও ২২১টি মামলা। সব মিলিয়ে বর্তমানে হেফাজতের বিরুদ্ধে বিচারাধীন মামলার সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৭০টি।

মামলা প্রত্যাহারের প্রক্রিয়া
সম্প্রতি হেফাজতের পক্ষ থেকে এসব মামলা প্রত্যাহারের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সংগঠনের কেন্দ্রীয় নেতা মাওলানা মামুনুল হক আদালতে দায়ের করা মামলার একটি তালিকা জমা দিয়েছেন, যাতে আইন মন্ত্রণালয়ের সলিসিটর শাখার সুপারিশ রয়েছে। ঢাকা মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) মো. ওমর ফারুক ফারুকী জানিয়েছেন, ঢাকায় দায়ের করা ৪৫টি মামলার প্রত্যাহারের আবেদন পাওয়া গেছে। যাচাই-বাছাই শেষে আবেদনপত্র ঢাকা জেলা প্রশাসকের দপ্তরে পাঠানো হয়েছে।

ঢাকা জেলা প্রশাসক তানভীর আহমেদ জানান, আইন মন্ত্রণালয়ের সুপারিশপ্রাপ্ত মামলাগুলো পিপির কাছে পাঠানো হয়েছে। হেফাজতের কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মুহিউদ্দিন রাব্বানী দাবি করেছেন, সংগঠনের বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া ২২০টি মামলার প্রত্যাহারের আবেদন করা হয়েছে, বাকি ৫০টি মামলার বিষয়ে আবেদন এখনও প্রক্রিয়াধীন।

গণগ্রেপ্তার, জামিন ও সমাবেশের হুঁশিয়ারি
২০১৩ সালের ঘটনার পর থেকে হেফাজতের শীর্ষ নেতাসহ হাজারাধিক নেতা-কর্মী গ্রেপ্তার হন। তাদের মধ্যে আছেন মাওলানা মামুনুল হক, মুফতি হারুন ইজাহার, রফিকুল ইসলাম মাদানী, মাওলানা মিজানুর রহমানসহ অনেকেই। চলতি বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর অধিকাংশ গ্রেপ্তারকৃত নেতা জামিনে মুক্তি পেলেও, হেফাজতের দাবি অনুযায়ী এখনও বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী কারাবন্দী রয়েছেন।

গত শনিবার রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আয়োজিত মহাসমাবেশে হেফাজতের যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হক বলেন, “আগামী দুই মাসের মধ্যে সকল মামলা প্রত্যাহার ও কারাবন্দীদের মুক্তি দিতে হবে। না হলে হেফাজত যা করার, তা-ই করবে।”

শেখ হাসিনাসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মামলা
শাপলা চত্বরের ঘটনায় ‘গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ’-এর অভিযোগ এনে চলতি বছরের ১২ মার্চ আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে একটি ‘মিস কেস’ দায়ের করা হয়েছে। মামলায় প্রধান আসামি হিসেবে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নাম রয়েছে। এছাড়া আসামির তালিকায় আছেন গণজাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র ইমরান এইচ সরকার, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহীউদ্দীন খান আলমগীর, পুলিশের সাবেক আইজিপি হাসান মাহমুদ খন্দকার, বেনজীর আহমেদ, এ কে এম শহিদুল হক, এবং সাবেক ডিজি মোল্যা নজরুল ইসলামসহ আরও কয়েকজন।

ট্রাইব্যুনাল ইতিমধ্যে পাঁচ আসামির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে। বাকিরা অন্য মামলায় গ্রেফতার হয়ে কারাগারে রয়েছেন।

হেফাজতে ইসলামের দাবি, শাপলা চত্বরে নামাজরত ও ঘুমন্ত এতিমদের ওপর গুলি চালিয়ে ‘গণহত্যা’ চালানো হয়েছিল এবং এর জন্য সরাসরি তৎকালীন সরকার ও প্রধানমন্ত্রীর বিচার দাবি করছে সংগঠনটি।

১২৮ বার পড়া হয়েছে

শেয়ার করুন:

মন্তব্য

(0)

বিজ্ঞাপন
৩২০ x ৫০
বিজ্ঞাপন
রাজনীতি নিয়ে আরও পড়ুন

বিজ্ঞাপন

২৫০ x ২৫০

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন
৩২০ x ৫০
বিজ্ঞাপন