উত্তেজনা চরমে, পাকিস্তানের জন্য আকাশসীমা বন্ধ করল ভারত

বৃহস্পতিবার , ১ মে, ২০২৫ ৪:৫০ পূর্বাহ্ন
শেয়ার করুন:
কাশ্মীরের পেহেলগামে প্রাণঘাতী হামলার পর ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সামরিক উত্তেজনা আশঙ্কাজনক হারে বেড়েছে। পাকিস্তান দাবি করেছে, ভারতের চারটি রাফাল যুদ্ধবিমানকে তারা নিয়ন্ত্রণরেখা (এলওসি) সংলগ্ন অঞ্চল থেকে পিছু হটাতে বাধ্য করেছে।
অন্যদিকে, ভারত ২৪ থেকে ৩৬ ঘণ্টার মধ্যে পাকিস্তানে হামলার পরিকল্পনার অভিযোগ অস্বীকার না করে, সামরিক বাহিনীকে ‘পূর্ণ স্বাধীনতা’ দিয়েছে।
পাকিস্তানের তথ্যমন্ত্রী আতাউল্লাহ তারার মঙ্গলবার দিবাগত রাতে এক বিবৃতিতে জানান, তাঁদের কাছে বিশ্বাসযোগ্য গোয়েন্দা তথ্য রয়েছে যে ভারত শিগগিরই পাকিস্তানে হামলা চালাতে পারে। তিনি জানান, পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলার ঘটনাকে ভারতের পক্ষ থেকে ‘অজুহাত’ হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে, যা ‘ভিত্তিহীন ও রাজনৈতিকভাবে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’।
রাফাল যুদ্ধবিমান ও পাল্টা নজরদারি
পাকিস্তানের নিরাপত্তা সূত্রের দাবি, সোমবার রাতে ভারতের চারটি রাফাল যুদ্ধবিমান এলওসি-র কাছাকাছি এলাকা দিয়ে টহল দিচ্ছিল। পাকিস্তান বিমান বাহিনীর (পিএএফ) দ্রুত পদক্ষেপের ফলে সেগুলো পিছু হটে। তবে ভারতের পক্ষ থেকে এখনো এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো মন্তব্য করা হয়নি।
এই পরিস্থিতিতে পাকিস্তানের বিমান চলাচল নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ দেশি-বিদেশি সব ফ্লাইটের ওপর নজরদারি বাড়িয়েছে। নিরাপত্তাজনিত কারণে গিলগিট ও স্কার্দু শহরের মধ্যকার বাণিজ্যিক ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে এবং প্রধান বিমানবন্দরগুলোর এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল ইউনিটকে বিশেষ সতর্কতা জারি করা হয়েছে।
ভারতের জবাবদিহিতায় প্রস্তুতি
কাশ্মীরের পেহেলগামে ২২ এপ্রিল সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ জন নিহত হন। ভারত দাবি করছে, হামলাকারীদের মধ্যে দুজন পাকিস্তানি নাগরিক। পাকিস্তান বরাবরের মতোই এ অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এ ঘটনার জবাবে সামরিক বাহিনীকে ‘অভিযান পরিচালনার পূর্ণ স্বাধীনতা’ দিয়েছেন। পাশাপাশি জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা বোর্ড (NSAB)-এ বড় পরিবর্তন এনে র-এর সাবেক প্রধান অলোক যোশিকে বোর্ডের শীর্ষে বসানো হয়েছে। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই পরিবর্তন বড় ধরনের প্রতিক্রিয়ার ইঙ্গিত দিতে পারে।
সংযমের আহ্বান আন্তর্জাতিক মহলের
সীমান্তে গোলাগুলি অব্যাহত রয়েছে। মঙ্গলবার রাতেও গোলাগুলির ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছে ভারতীয় সেনাবাহিনী। টানা ছয়দিন ধরে সীমান্তে উত্তেজনা অব্যাহত থাকায় পারমাণবিক শক্তিধর এই দুই দেশের মধ্যকার পরিস্থিতি নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলে উদ্বেগ বাড়ছে।
জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর এবং পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের সঙ্গে আলাদাভাবে কথা বলেছেন এবং উভয় পক্ষকে সংযত আচরণে আহ্বান জানিয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্রও একই আহ্বান জানিয়েছে।
১০৫ বার পড়া হয়েছে