শুল্কের প্রভাব সামাল দেয়া কঠিন হবে না: অর্থ উপদেষ্টা

রবিবার, ৬ এপ্রিল, ২০২৫ ৬:৩৯ পূর্বাহ্ন
শেয়ার করুন:
অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্রের নতুন শুল্ক আরোপের ফলে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে যে প্রভাব পড়বে, তা মোকাবেলা করা খুব কঠিন হবে না।
তিনি আশা প্রকাশ করেছেন যে, এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় যুক্তরাষ্ট্রের প্রশাসনের সঙ্গে সরকার ইতিমধ্যে আলোচনা শুরু করেছে এবং ভালো কিছু হবে বলে তিনি আশা করছেন। ঈদ উপলক্ষে টানা ৯ দিনের ছুটি শেষে সচিবালয়ে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি।
অর্থ উপদেষ্টা আরও জানান, রমজান মাস এবং ঈদের সময়ে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয়েছে, ফলে মানুষ কিছুটা স্বস্তি পেয়েছে। তিনি বলেন, দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি ভালোর দিকে যাচ্ছে এবং রিজার্ভও বেড়েছে।
এ পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশি পণ্যের ওপর গড়ে ১৫ শতাংশ শুল্ক ছিল, কিন্তু ২ এপ্রিল ট্রাম্প প্রশাসন আরও ৩৭ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছে। এতে বাংলাদেশের রপ্তানি, বিশেষ করে তৈরি পোশাক রপ্তানিতে বড় প্রভাব পড়তে পারে, কারণ যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান রপ্তানির বাজার এবং বাংলাদেশের মোট রপ্তানির ১৮ শতাংশ যুক্তরাষ্ট্রে যায়।
এটি শুধু বাংলাদেশের জন্য নয়, বিশ্বব্যাপী বিভিন্ন দেশের জন্য সমস্যা সৃষ্টি করেছে, কারণ ট্রাম্প প্রশাসন এমন পাল্টা শুল্ক আরোপ করেছে। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে এর নেতিবাচক প্রভাব নিয়ে আলোচনা চলছে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন এই সিদ্ধান্তকে বিশ্ব অর্থনীতির জন্য বড় একটি ধাক্কা হিসেবে চিহ্নিত করেছে, এবং অস্ট্রেলিয়া বলেছে, এটি বন্ধুসুলভ পদক্ষেপ নয়। যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারও এই সিদ্ধান্তের অর্থনৈতিক প্রভাব সম্পর্কে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
এখন পর্যন্ত বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্য বাংলাদেশের পক্ষে ছিল, কারণ রপ্তানি আমদানি থেকে অনেক বেশি। তবে, বাংলাদেশের রপ্তানি অধিকাংশই তৈরি পোশাকের ওপর নির্ভরশীল। অন্যদিকে, বাংলাদেশ আমদানি করে লোহা, ইস্পাত, খনিজ জ্বালানি, তুলা, তেলবীজ এবং নিউক্লিয়ার রেক্টরের মতো পণ্য।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ছিল ১০ দশমিক ১৩ বিলিয়ন ডলার, যার মধ্যে বাংলাদেশের রপ্তানি ছিল ৭ দশমিক ৫৯ বিলিয়ন ডলার এবং আমদানি ছিল ২ দশমিক ৫৩ বিলিয়ন ডলার।
২০২৩-২৪ অর্থবছরে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক রপ্তানির আয় ছিল ৭ দশমিক ৪৩ বিলিয়ন ডলার, যা মোট রপ্তানি আয়ের বৃহত্তম অংশ। অন্যান্য রপ্তানির মধ্যে ছিল চামড়াজাত পণ্য, চামড়ার জুতা, ফার্মাসিউটিক্যালস এবং কৃষিপণ্য।
গত কয়েক বছরেও বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্য উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে, যেখানে রপ্তানি এবং আমদানির পরিমাণ বছরের পর বছর বেড়ে চলেছে।
১৩৯ বার পড়া হয়েছে