কনকনে শীত আরও তিন–চার দিন, দুর্ভোগ কাটছে না
সোমবার, ২৯ ডিসেম্বর, ২০২৫ ২:২২ পূর্বাহ্ন
শেয়ার করুন:
হিমেল হাওয়ার সঙ্গে ঘন কুয়াশায় রাজধানীসহ সারা দেশে জেঁকে বসেছে কনকনে শীত। অনেক এলাকায় দিনের পর দিন সূর্যের দেখা মিলছে না। আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, আরও তিন থেকে চার দিন এমন পরিস্থিতি অব্যাহত থাকতে পারে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাস অনুযায়ী, আজ সোমবার সকাল থেকে দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা পড়তে পারে, যা কিছু এলাকায় দুপুর পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে। ঘন কুয়াশার কারণে বিমান চলাচল, অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন এবং সড়ক যোগাযোগ সাময়িকভাবে ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
এরই মধ্যে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় ২৫ ডিসেম্বর এক জরুরি বিজ্ঞপ্তিতে ঘন কুয়াশার সময় সব ধরনের নৌযান চলাচল বন্ধ রাখার নির্দেশনা দিয়েছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, আজ সারা দেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। কুয়াশাচ্ছন্ন আবহাওয়ার কারণে দেশের অনেক এলাকায় শীতের অনুভূতি আরও তীব্র হবে।
আবহাওয়াবিদ শাহানাজ সুলতানা গতকাল রাতে বলেন, গত কয়েক দিনে দেশের সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রার পার্থক্য কমে গেছে। তাপমাত্রার এই পার্থক্য কমে গেলে শীতের অনুভূতি বেড়ে যায়। পাশাপাশি সূর্যের দেখা না পাওয়ায় ভূমি উত্তপ্ত হতে পারছে না, ফলে শীত আরও বেশি অনুভূত হচ্ছে।
তিনি জানান, দেশে বর্তমানে কোনো শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে না। তবে আবহাওয়ার বৈশিষ্ট্যের কারণে শৈত্যপ্রবাহের মতো শীত অনুভূত হচ্ছে। এই পরিস্থিতি আরও তিন–চার দিন থাকতে পারে। ১ ও ২ জানুয়ারি তাপমাত্রা কিছুটা বাড়তে পারে, তবে ৬–৭ জানুয়ারি থেকে আবার তাপমাত্রা কমার সম্ভাবনা রয়েছে।
গতকাল দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে কিশোরগঞ্জের নিকলীতে—৯ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এরপর সিরাজগঞ্জের তাড়াশে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। দেশের অধিকাংশ অঞ্চলে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১১ থেকে ১৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে। ঢাকায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১৪ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
অন্যদিকে, গতকাল দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল কক্সবাজারের টেকনাফে—২৮ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ঢাকায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ২৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
তীব্র শীতে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। রাজশাহীতে গতকাল সারা দিন সূর্যের দেখা মেলেনি। ঘন কুয়াশা ও হিমেল বাতাসে মানুষজনকে আগুন জ্বালিয়ে শীত নিবারণ করতে দেখা গেছে। শ্রমজীবী মানুষদের কাজকর্ম কমে যাওয়ায় জীবনযাত্রা আরও কঠিন হয়ে উঠেছে।
রংপুর অঞ্চলেও ঘন কুয়াশা ও কনকনে ঠান্ডায় স্বাভাবিক জীবনযাত্রা স্থবির হয়ে পড়েছে। সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়েছেন খেটে খাওয়া মানুষ। শীতের কারণে রাস্তাঘাটে লোকজনের উপস্থিতিও কম দেখা গেছে।
এদিকে শীতের তীব্রতায় ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যাও বাড়ছে। জ্বর, সর্দি, কাশি, নিউমোনিয়া ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে প্রতিদিন হাসপাতালে ভিড় করছেন মানুষ। রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে ধারণক্ষমতার বাইরে রোগী ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছে।
নওগাঁয়ও গতকাল দিনভর ভারী কুয়াশায় সূর্যের দেখা মেলেনি। শিশির পড়েছে বৃষ্টির মতো। ঘন কুয়াশার কারণে দিনের অধিকাংশ সময় যানবাহনগুলোকে হেডলাইট জ্বালিয়ে চলাচল করতে দেখা গেছে।
১২০ বার পড়া হয়েছে