জামায়াতের সঙ্গে জোটে গেলে ‘কঠিন মূল্য চুকাতে হবে’ এনসিপিকে : সামান্তা
রবিবার, ২৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ৬:১৮ পূর্বাহ্ন
শেয়ার করুন:
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীকে ‘নির্ভরযোগ্য মিত্র নয়’ আখ্যা দিয়ে দলটির সঙ্গে কোনো ধরনের সহযোগিতা বা জোটে গেলে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)কে ‘কঠিন মূল্য চুকাতে হবে’ বলে মন্তব্য করেছেন দলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন।
রোববার সকালে ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করেন তিনি। ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে এনসিপির আসন সমঝোতা ও সম্ভাব্য জোট নিয়ে আলোচনা চলার প্রেক্ষাপটে এই বক্তব্য দেন সামান্তা।
পোস্টে তিনি লেখেন, জামায়াতের সঙ্গে জোটের বিষয়ে সম্প্রতি দলটির নেতারা যে বক্তব্য দিয়েছেন, তা এনসিপির দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক অবস্থানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। তার ভাষায়, 'জাতীয় নাগরিক পার্টির মূলনীতি ও রাষ্ট্রকল্প জামায়াত থেকে সম্পূর্ণ আলাদা। বিচার, সংস্কার এবং গণপরিষদ নির্বাচন তথা সেকেন্ড রিপাবলিক-এই তিনটি বিষয় এনসিপির রাজনীতির কেন্দ্রবিন্দু। এসব বিষয়ে অভিন্ন অবস্থান ছাড়া কোনো রাজনৈতিক মিত্রতা সম্ভব নয়।'
সামান্তা আরও বলেন, তার এই অবস্থান দলের গত দেড় বছরের নীতিগত অবস্থানেরই ধারাবাহিকতা। তিনি স্মরণ করিয়ে দেন, সংসদের নিম্নকক্ষে আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব (পিআর) প্রসঙ্গে জামায়াত সংস্কারবিরোধী ভূমিকা নিয়েছিল বলে এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম আগেও মন্তব্য করেছিলেন যে, 'যারা সংস্কারের পক্ষে নয়, তাদের সঙ্গে জোটও সম্ভব নয়।'
তিনি জানান, এই অবস্থানের ভিত্তিতেই এনসিপি ৩০০ আসনে এককভাবে প্রার্থী দেওয়ার ঘোষণা দেয় এবং স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার প্রস্তুতি নেয়। সামান্তার মতে, জামায়াতের সঙ্গে জোট করার প্রশ্ন উঠলেই তা এনসিপির সাংগঠনিক ও রাজনৈতিক নীতি থেকে সরে যাওয়ার শামিল হবে।
এদিকে, জামায়াতের সঙ্গে এনসিপির জোট গঠনের সম্ভাব্য উদ্যোগ নিয়ে দলটির ভেতরেই অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। গত ২৫ ডিসেম্বর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একাধিক পোস্টে এই জোটকে ‘আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়। পরে এনসিপির অন্তত ৩০ জন কেন্দ্রীয় নেতা আনুষ্ঠানিকভাবে আপত্তি জানিয়ে দলের আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামের কাছে স্মারকলিপি দেন।
এই বিতর্কের মধ্যেই শনিবার এনসিপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্য সচিব তাসনিম জারা পদত্যাগ করেন এবং ঢাকা-৯ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার ঘোষণা দেন।
উল্লেখ্য, তফসিল ঘোষণার পর থেকেই এনসিপি ‘শাপলা কলি’ প্রতীক নিয়ে নির্বাচনী মাঠে সক্রিয় রয়েছে এবং ইতোমধ্যে শতাধিক আসনে প্রার্থী ঘোষণা করেছে। এর পাশাপাশি ৭ ডিসেম্বর এনসিপির নেতৃত্বে ‘গণতান্ত্রিক সংস্কার জোট’ গঠিত হলেও, তিন সপ্তাহ না যেতেই জামায়াতের সঙ্গে আসন সমঝোতার খবর নতুন করে রাজনৈতিক আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
জামায়াতে ইসলামের নায়েবে আমির সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের জানিয়েছেন, এনসিপির সঙ্গে জোট নিয়ে আলোচনা চলছে এবং সিদ্ধান্ত হলে তা আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হবে। তবে এনসিপির ভেতরে ও বাইরে এ সম্ভাব্য জোটকে ঘিরে বিরোধিতা ক্রমেই জোরালো হচ্ছে।
১২৩ বার পড়া হয়েছে