সক্রিয় রাজনীতি থেকে অবসরের ঘোষণা দিলেন সাবেক এমপি কাজী কামাল
শনিবার, ২৭ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:১৫ অপরাহ্ন
শেয়ার করুন:
মাগুরা-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও বিশিষ্ট শিল্পপতি কাজী সালিমুল হক (কাজী কামাল) আজ শনিবার ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে ঘোষণা করেছেন, তিনি এবার কোন নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবেন না এবং সক্রিয় রাজনীতি থেকে চিরতরে অবসরের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এর মাধ্যমে তিনি দুইটি আসনেই মনোনয়নপত্র সংগ্রহের পর স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার সম্ভাবনাও বাতিল করেছেন।
স্থানীয় বিএনপির একাংশের পক্ষ থেকে মাগুরার দুটি আসন (মাগুরা-১ ও মাগুরা-২) থেকে তাঁর পক্ষে স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার জন্য মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করা হয়েছিল। শালিখা উপজেলা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক আনিসুর রহমান সংবাদ মাধ্যমে বলেন, “দলের সিদ্ধান্তকে সম্মান জানিয়ে কাজী কামাল নির্বাচনের দৌড় থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন। আগামীকাল উপজেলা পর্যায়ের নেতা-কর্মীদের নিয়ে বৈঠক করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তবে দীর্ঘদিন ধরে আমরা দলের নির্দেশনার বাইরে কিছু করি না।”
নিজের ফেসবুক স্ট্যাটাসে কাজী সালিমুল হক লিখেছেন, “দীর্ঘ সাত বছর কারাবাসে থাকার কারণে আমার পরিবার সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পরিবারের একান্ত অনুরোধে আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি, আর কোনো নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করব না এবং সক্রিয় রাজনীতি থেকে চিরতরে অবসর গ্রহণ করছি। জীবনের বাকি সময়টুকু পরিবারকে নিয়ে শান্তিতে কাটাতে চাই।”
বিএনপির স্থানীয় নেতা-কর্মীদের তথ্য অনুযায়ী, কাজী সালিমুল হক ১৯৯৪ সালে মাগুরা-২ আসনের উপনির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী হিসেবে বিজয়ী হন। সেই নির্বাচন নিয়ে নানা বিতর্ক থাকলেও পরে তিনি ২০০১ সালের জাতীয় নির্বাচনে আবারও এমপি নির্বাচিত হন। ২০০৮ সালের পর সক্রিয় রাজনীতি থেকে দূরে সরে যান। জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে তিনি আসামি ছিলেন এবং ২০১৭ সাল থেকে কারাগারে ছিলেন। ২০২৪ সালের আগস্টে কারামুক্ত হয়ে দীর্ঘদিন পর আবার রাজনীতিতে ফিরে আসেন।
কাজী কামাল মাগুরা-২ আসনের নির্বাচনী এলাকায় ঢাকামহানগর দক্ষিণ যুবদলের সদস্যসচিব রবিউল ইসলামকে সঙ্গে নিয়ে কয়েকটি বড় সমাবেশও করেছিলেন। তবে বিএনপির কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তে নিতাই রায় চৌধুরীকে প্রার্থী ঘোষণা করা হলে দলীয় মনোনয়ন বিরোধী অংশের সমর্থন সত্ত্বেও শেষ পর্যন্ত তিনি নির্বাচনে অংশ নেওয়া থেকে বিরত থাকেন। এই সিদ্ধান্তের সঙ্গে যুক্ত আছে দলীয় দিকনির্দেশনার প্রতি শ্রদ্ধা এবং দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক ঘাত-প্রতিঘাত।
এর ফলে মাগুরার রাজনীতিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় শেষ হলো, যেখানে একজন প্রভাবশালী নেতা স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার আগ্রহ থাকা সত্ত্বেও দল ও পরিবারের সিদ্ধান্তকে সম্মান জানিয়ে রাজনীতিতে অবসরের পথ বেছে নিয়েছেন।
১০৭ বার পড়া হয়েছে