বলিউডের ‘হি-ম্যান’ ধর্মেন্দ্র: ছয় দশকের জয়যাত্রা
সোমবার, ২৪ নভেম্বর, ২০২৫ ৪:১৫ অপরাহ্ন
শেয়ার করুন:
বলিউডের কিংবদন্তি অভিনেতা ধর্মেন্দ্রর ক্যারিয়ার ছিল সংগ্রাম, পরিশ্রম ও সাফল্যের এক বর্ণময় ইতিহাস।
পাঞ্জাবের ছোট গ্রাম নসরালিতে ১৯৩৫ সালে জন্ম নেওয়া ধর্মেন্দ্রর শৈশব কাটে সাধারণ পরিবারের ছেলের মতোই। কলেজ জীবন শেষে মাসিক ১২৫ টাকার রেলের চাকরি ছেড়ে নতুন সুযোগের খোঁজে চলে আসেন স্বপ্নের শহর মুম্বাই।
অভিনয়জীবনের শুরু ১৯৬০ সালে ‘দিল ভি তেরা, হম ভি তেরে’ ছবিতে। প্রথমদিকে রোমান্টিক ও সংবেদনশীল চরিত্রে অভিনয় করলেও, “ফুল আউর পত্থর” (১৯৬৬) তার ক্যারিয়ারে মোড় ঘুরিয়ে দেয়। এই ছবির সাফল্য তাকে “হি-ম্যান” তথা অ্যাকশন হিরোর খেতাব এনে দেয় এবং বলিউডের জনপ্রিয়তায় শীর্ষস্তরে পৌঁছে দেন।
এরপর একে একে আসতে থাকে “মেরা গাঁও মেরা দেশ”, “শোলে”, “সেীতা ঔর গীতা”, “চুপকে চুপকে”, “যাদোঁ কি বারাত”, “ধরমবীর”, “হুকুমত”, “আপনে” সহ আরো বহু চলচ্চিত্র—যা শুধু বক্স অফিসেই সাফল্য আনেনি, সাংস্কৃতিক জনপ্রিয়তাও অর্জন করেছে। “শোলে” সিনেমায় ‘বীরু’ চরিত্র বিশেষভাবে লক্ষ্যণীয়; ভারতের সর্বকালের সবচেয়ে সফল ছবি হিসেবে তখনকার রেকর্ড ভেঙে দেয়।
১৯৭০-৮০’র দশকে ধর্মেন্দ্র ছিলেন টপ অ্যাকশন স্টার, এবং ১৯৮৭ সালে এক বছরে সর্বাধিক সাতটি হিট সিনেমার রেকর্ড করেন, যা আজও অক্ষুণ্ণ। তাঁর অভিনয়ের বৈচিত্র্য ছিল দুর্দান্ত—“সত্যকাম” ও “আনুপমা”-তে মানবিক অনুভূতির, “চুপকে চুপকে”-তে সংলাপ-নির্ভর কমেডি।
ধর্মেন্দ্রর ব্যক্তিগত জীবনও ছিল আলোচিত। দুই স্ত্রী—প্রকাশ কৌর ও হেমা মালিনী; সন্তান সানি ও ববি ডিওল বলিউডে সাফল্যের পথে পা বাড়ান বাবার সান্নিধ্যে। তিনি একাধিক প্রযোজনা ও রাজনৈতিক অঙ্গনেও সক্রিয় ছিলেন—২০০৪-০৯ সময়ে বিজেপির সংসদ সদস্য।
কিংবদন্তি অভিনেতা হিসেবে ধর্মেন্দ্রর উত্তরণ কেবল পর্দায় নয়, দর্শকদের হৃদয়ে চিরস্থায়ী। ছয় দশকের বেশি সময় ধরে বলিউডকে দিয়েছেন অসংখ্য হিট, দিয়েছে বাস্তব সংগ্রামের, বন্ধুত্বের, সাহসিকতার ও মানবিকতা—যা ভারতীয় সিনেমার ইতিহাসে চিরঅমলিন থাকবেই।
লেখক : সাংবাদিক, কলামিস্ট।
১১৯ বার পড়া হয়েছে