সর্বশেষ

মতামত

ব্যারিস্টার ফুয়াদের নামে ভুয়া ছবি ও গ্রেপ্তারের গুজব: অপপ্রচারের জালে রাজনৈতিক অস্থিরতা

মনজুর এহসান চৌধুরী
মনজুর এহসান চৌধুরী

রবিবার, ১৬ নভেম্বর, ২০২৫ ৩:৫৮ পূর্বাহ্ন

শেয়ার করুন:
২০২৫ সালের শুরু থেকেই সামাজিক মাধ্যমে ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদকে কেন্দ্র করে বেশ কিছু বিভ্রান্তিকর ও উদ্দেশ্যমূলক গুজব ছড়াতে দেখা যায়।

“দৈনিক আজকের কণ্ঠ” নামে ভুয়া একটি অনলাইন পেজ প্রথমে ফুয়াদের নামে আপত্তিকর ছবি ও গ্রেপ্তারের মিথ্যা সংবাদ ছড়িয়ে দেয়। দ্রুত সামাজিক মাধ্যমে এ সংবাদ ভাইরাল হয় এবং পরবর্তীতে নানা রাজনৈতিক নেতার কথিত উদ্ধৃতি হিসেবে আলোচনায় উঠে আসে।

প্রাথমিক অনুসন্ধানে জানা যায়, বিতর্কিত এই ছবিটি আদতে ছিল ভারতীয় একটি অনলাইন পর্ন ওয়েবসাইটের ভিডিও থেকে নেওয়া—যা কৃত্রিমভাবে ব্যারিস্টার ফুয়াদের মুখের ছবি জুড়ে ফটোশপ এবং ডিজিটাল এডিটের মাধ্যমে তৈরি করা হয়েছিল। ছবি ও খবর তৈরির দ্রুততা এবং সংবেদনশীল ইস্যু হিসেবে এটি সরকারপন্থী ও বিরোধী পক্ষের মধ্যে ব্যাপক প্রচারণা পায়। বিশেষ করে আওয়ামী লীগের অনলাইন-সমর্থক পেজ থেকে প্রথমে পোস্টগুলি ছড়ালেও, বিএনপিসহ অন্যান্য দলের সমর্থক ও নেতারাও যাচাই না করে পরিস্থিতিকে রাজনৈতিক বক্তব্যের অংশ হিসেবে ব্যবহার করতে থাকেন।

এবি পার্টিসহ সংশ্লিষ্ট রাজনৈতিক ও নাগরিক মহলে ব্যাপক অসন্তোষ দেখা দেয়। এবি পার্টির পক্ষ থেকে জরুরি সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়—ব্যারিস্টার ফুয়াদ সম্পূর্ণ নিরাপদ ও সুস্থ আছেন, গ্রেপ্তারের খবরটি ভুয়া, সাথে আপত্তিকর ছবিও ভারতের এক নীল ছবির স্ক্রিনশট এবং কৃত্রিম এডিটিংয়ের ফল। বিষয়টি সামনে আসার পর স্বতন্ত্র ফ্যাক্ট-চেক প্রতিষ্ঠান, গণমাধ্যম, এমনকি সচেতন অনলাইন অ্যাক্টিভিস্টরা ব্যাপকভাবে প্রতিবাদ জানান—‘ভুয়া সংবাদ’ যেনো কোনো দায়িত্বশীল রাজনৈতিক দল উদ্ধৃতি হিসেবে না নেয়।

এ ধরনের মিথ্যা তথ্য ছড়িয়ে পড়ার পর সামাজিক-মাধ্যমে প্রচণ্ড বিভ্রান্তি দেখা দেয়, যা শুধু ফুয়াদের ব্যক্তি-মানহানিই নয়, রাজনৈতিক উত্তেজনাও বাড়িয়ে তোলে। পরে নানা গণমাধ্যম তদন্ত-রিপোর্টে উঠে আসে, কোনো প্রাতিষ্ঠানিকভাবে নিবন্ধিত পত্রিকার নামে “দৈনিক আজকের কণ্ঠ” অস্তিত্ব নেই; এটি কেবলমাত্র অনলাইনে গুজব ছড়ানোর প্ল্যাটফর্ম হিসেবে চিহ্নিত।

বিশ্লেষকদের মতে, এ ধরনের অপপ্রচার শুধু ব্যক্তি নয়, দেশের রাজনীতির স্বচ্ছতাকেও হুমকির মুখে ফেলে। দায়িত্বশীল রাজনৈতিক নেতা ও দলগুলোর উচিত যাচাই ছাড়া কোনো তথ্য-উৎসকে চূড়ান্ত বলে মেনে না নেয়া। নাগরিকদের প্রত্যাশা, ডিজিটাল যুগে এ ধরনের ভুয়া ফটোকার্ড বা গুজবের বিরুদ্ধে সবাই আরও সাবধান ও তথ্যনিষ্ঠ হবেন—কারণ, অপপ্রচারের জালে বিভ্রান্তি ও বিদ্বেষ ঝুঁকি আরও বাড়ে, যা গণতান্ত্রিক পরিবেশের জন্য অপসন্দনীয়।

সংবাদপত্র, গণমাধ্যম ও রাজনৈতিক মহলের অভিমত—‘ভুয়া সংবাদকে না’ বলাই এখন সময়ের দাবি। দক্ষতার সাথে ফ্যাক্ট-চেক, তথ্য যাচাই ও সততার পরিবেশ ফিরিয়ে আনা ছাড়া এ ধরনের অপপ্রচারের শিকার ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান কিংবা গোটা সমাজই বারবার সরলতাবশত ক্ষতির সম্মুখীন হবে।


লেখক : সাংবাদিক, কলামিস্ট। 

১১৫ বার পড়া হয়েছে

শেয়ার করুন:

মন্তব্য

(0)

বিজ্ঞাপন
৩২০ x ৫০
বিজ্ঞাপন
মতামত নিয়ে আরও পড়ুন

বিজ্ঞাপন

২৫০ x ২৫০

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন
৩২০ x ৫০
বিজ্ঞাপন