সর্বশেষ

মতামত

'প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের ন্যায়সংগত দাবী মেনে নিন'

মাসুদুল হাসান রনি
মাসুদুল হাসান রনি

রবিবার, ৯ নভেম্বর, ২০২৫ ২:৫১ পূর্বাহ্ন

শেয়ার করুন:
আমাদের দেশে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা অবহেলিত এবং সরকারের কাছে যে উপেক্ষিত তা আবারও প্রমান হয়েছে।

বিগত কয়েক মাস যাবত তাদের বেতন ভাতা বৃদ্ধির জন্য সরকারের কাছে নানানভাবে দেন দরবার করেও কোন ফায়দা হয়নি। এর আগে এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা রাজপথে দাবী নিয়ে এলে বেধড়ক মারধরের শিকার হয়েছেন। এক পার্যায়ে সরকার বেতন,বাড়িভাড়া বৃদ্ধির ঘোষনা দেয় ৫%, যা ছিল শিক্ষকদের সাথে চরম অপমান ও অবমাননাকর। শিক্ষকরা তা প্রত্যাখ্যান এবং পুলিশী আক্রমন উপেক্ষা করে রাজপথে অবস্থান নেন।

শিক্ষকদের লাগাতার আন্দোলন ও অবস্থানের কারনে সরকার পিছু হটতে বাধ্য হয়। অবশেষে অক্টোবর মাসে বাড়িভাড়া ভাতা মূল বেতনের ৭.৫% থেকে পরবর্তীকালে ১৫%-এ উন্নীত করার সরকারি প্রজ্ঞাপন জারির পর শিক্ষকরা আন্দোলন স্থগিত করেন এবং কাজে ফিরে যান।

শনিবার ঢাকায় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকরা দশম গ্রেডে বেতন বাস্তবায়নের দাবী জানাতে এলে সেই একই কায়দায় পুলিশের নিপীড়ন ও নির্যাতনের শিকার হলেন।

শিক্ষকদের আন্দোলন চলাকালীন সময় পুলিশের লাঠিপেটা ও বলপ্রয়োগের ঘটনা পূর্বের সরকারগুলোর আক্রমনকেই স্মরণ করিয়ে দেয়। ৫ আগস্টের পর পরিবর্তন কোথায় নেই। পুলিশ সেই আগের মতনই আচরন করছে। পুলিশ সংস্কার কমিশন করা হয়েছিল, তাদের দেয়া রিপোর্টে পুলিশকে জনবান্ধব করার জন্য সুপারিশ ছিল। এ কী তার নমুনা!

অর্ন্তবর্তী সরকার ক্ষমতায় এসে অনেকগুলো কমিশনের সাথে পুলিশ সংস্কার কমিশন করেছিল। খুব আশান্বিত হয়েছিলাম, এবার বুঝি পুলিশকে ভদ্রস্থ একটা বাহিনীতে দেখতে পারব। তারা কাজও করেছে। কমিশনের দেয়া প্রধান সুপারিশগুলোর মধ্যে ছিল, পুলিশকে জনবান্ধব, জবাবদিহিমূলক এবং মানবাধিকার সংরক্ষণে সক্ষম একটি বাহিনীতে পরিণত করা । এর জন্য ১৯৪৩ সালের বেঙ্গল পুলিশ রেগুলেশন সংশোধন বা হালনাগাদ করা, নতুন পুলিশ আইন প্রণয়ন এবং পুলিশ কর্তৃক নির্যাতন ও হয়রানি রোধে ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশও ছিল। এছাড়াও, মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগের তদন্তের জন্য সংশ্লিষ্ট পুলিশ সংস্থার প্রধান কার্যালয়ে মানবাধিকার সেল কার্যকর করার এবং জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী বাহিনীর নীতিমালা অনুসরণ করে বলপ্রয়োগের পরিকল্পনা প্রণয়নের সুপারিশ করেছিল কমিশন।

শিক্ষক পেটানো, শ্রমিক নির্যাতন, মানুষকে হয়রান করা হতে পুলিশ এখনো বের হয়ে আসতে পারেনি। তাহলে এসব কমিশন করে কি লাভ হয়েছে? কমিশনের রিপোর্ট কি শুধু কাগজে কলমে দস্তা দবেজে থাকবে ? নাকি কখনো তা বাস্তবায়নের আলো দেখবে না?

শিক্ষকদের ওপর পুলিশের বর্বরোচিত হামলার বিচারবিভাগীয় তদন্ত হওয়া দরকার। অপরাধী পুলিশদের আইনের আওতায় এনে বিচার নিশ্চিত করার দাবী জানিয়ে পাশাপাশি শিক্ষকদের ন্যায়সংগত দাবী মেনে নেয়া হোক।নভেম্বর মাসে শিক্ষকদের রাজপথে রাখা সরকারের উচিৎ হবে না। চলতি ও আগামী মাসে সারাদেশে প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোর বার্ষিক পরীক্ষা রয়েছে। দ্রুত শিক্ষকদের দাবী মেনে আহত শিক্ষকদের সুচিকিৎসা এবং গ্রেফতারকৃত দের মুক্তি দিয়ে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে পরীক্ষা নিয়ে যে, উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে তা নিরসন করুন।



লেখক : গণমাধ্যমকর্মী। 

১৪৩ বার পড়া হয়েছে

শেয়ার করুন:

মন্তব্য

(0)

বিজ্ঞাপন
৩২০ x ৫০
বিজ্ঞাপন
মতামত নিয়ে আরও পড়ুন

বিজ্ঞাপন

২৫০ x ২৫০

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন
৩২০ x ৫০
বিজ্ঞাপন