দল মনোয়ন দেয়নি, এতে জনগনের দোষ কী?
বুধবার, ৫ নভেম্বর, ২০২৫ ৮:৪৫ পূর্বাহ্ন
শেয়ার করুন:
গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় বা রাজনৈতিক দলে মনোনয়ন একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রক্রিয়া। মনোনয়ন না পাওয়া একজন নেতার বা কর্মীর জন্য রাজনৈতিক ক্যারিয়ারের একটি বড় ধাক্কা হতে পারে।
এর ফলে হতাশা, ক্ষোভ বা প্রতিবাদ রাজনৈতিক আচরণেরই অংশ। এগুলোর বহি:প্রকাশ হতে হবে গনতান্ত্রিক।
এই ক্ষোভ প্রকাশের ধরণটি ভিন্ন হতে পারে। শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ, দলের শীর্ষ নেতৃত্বের কাছে অভিযোগ জানানো বা দল পরিবর্তন করাকে গঠনমূলক রাজনৈতিক আচরণ বলা যায়। কিন্তু এই ক্ষোভ যদি সহিংসতায় রূপ নেয়, দলের শৃঙ্খলা ভঙ্গ করে বা জনজীবনকে ব্যাহত করে, তবে তা নেতিবাচক রাজনীতি হিসেবে গণ্য হয়।
নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবেন আপনারা, দল মনোনয়ন দিবে কি দিবে না সেটা আপনার দলের সিদ্ধান্ত। দলের সিদ্ধান্ত না মানলে পদত্যাগ করবেন কিংবা নিস্ক্রিয় হবেন - সেটাও আপনার সিদ্ধান্ত। দলীয় শৃংখলা ভঙ্গ করলে আপনাকে দল বহিস্কারও করতে পারে, সেই এখতিয়ারও দলের গঠনতন্ত্রে আছে। রাজনীতি করতে এসেছেন, এসব কথা আপনারা ভাল করেই জানেন। শুধু জিগাসা, রাজনীতিটা করেন কার জন্য?
যদি জনগনের জন্য করেন, দেশের মানুষের জন্য করা ব্রত হয়, তবে জনগনকে কেন ভোগান্তি ও দূর্দশার মধ্যে ফেলেন?
আপনার দল আপনাকে যোগ্য মনে করেনি কিংবা আপনার চেয়ে অন্যকে তাদের গুরুত্বপূর্ণ মনে হয়েছে বলে তাকে দলের প্রাথমিক মনোনয়ন দিয়েছে। এটা আপনার দলের আভ্যন্তরীণ বিষয় ও সিদ্ধান্ত। মনোনয়নের সিদ্ধান্ত আপনার অনুকুলে আসেনি বলে কর্মী-সমর্থক ও অনুসারীদের নিয়ে বিক্ষোভ, ভাংচুর, অগ্নিসংযোগ ও রাজপথ অবরোধ করে রাখা কি জনগনের রাজনীতি?
আমাকে বলেন, আপনি মনোয়ন পাননি, এতে জনগনের কি দোষ?
ঘন্টার পর ঘন্টা রাজপথ অবরোধ করে হাজার হাজার মানুষকে জিম্মি করা কি রাজনীতি? সরকারী-বেসরকারী স্থাপনা ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করে কি জনগনের মন জয় করতে পারবেন নাকি দলের শীর্ষ নেতৃত্বের?
এই ভাংচুর, অবরোধ ও মানুষকে জিম্মি করা সুস্থ বা গঠনমূলক রাজনীতি বলা যায় না। যদিও বিক্ষোভ প্রদর্শন এবং প্রতিবাদ করা রাজনৈতিক অধিকারের অংশ, কিন্তু জনগণের স্বাভাবিক চলাচলের অধিকার হরণ করে সড়ক অবরোধের মাধ্যমে জনজীবনকে জিম্মি করা অগণতান্ত্রিক এবং অমানবিক।
ক্ষোভ প্রকাশ রাজনৈতিক আচরণের অংশ হলেও, জনজীবন ব্যাহত করা বা জনগণকে জিম্মি করা কোনোভাবেই সুস্থ রাজনীতি বা জনসেবা নয়।
লেখক : গণমাধ্যম কর্মী।
১৬৬ বার পড়া হয়েছে