বান্দরবানে জলবায়ু সহনশীল স্বাস্থ্যসেবা নিয়ে নলেজ এক্সচেঞ্জ ফোরাম
মঙ্গলবার, ৪ নভেম্বর, ২০২৫ ১১:০৭ পূর্বাহ্ন
শেয়ার করুন:
স্বাস্থ্যসেবা গ্রহণে জলবায়ু সহনশীলতা বাড়ানো এবং আদিবাসী জনগোষ্ঠীর প্রথাগত জ্ঞান বিনিময়ের লক্ষ্যে বান্দরবানে অনুষ্ঠিত হয়েছে এক বিশেষ নলেজ এক্সচেঞ্জ ফোরাম। 
আজ মঙ্গলবার দিনব্যাপী বান্দরবান হলিডে ইন রিসোর্টে এ আয়োজন করে সিরাক-বাংলাদেশ, সহযোগিতায় ছিল ইউএনএফপিএ বাংলাদেশ ও সুইডিশ উন্নয়ন সংস্থা সিডা (Sida)।
ফোরামের মূল উদ্দেশ্য ছিল জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে আদিবাসী জনগোষ্ঠীর যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্যসেবা গ্রহণে উদ্ভূত চ্যালেঞ্জ চিহ্নিত করা এবং টেকসই সমাধানের পথ খুঁজে বের করা।
দিনব্যাপী এই ফোরামে জেলার বিভিন্ন ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর প্রায় ৪০ জন প্রতিনিধি অংশ নেন। তাঁদের মধ্যে ছিলেন ১৫ জন তরুণ-তরুণী (১৪–২৫ বছর বয়সী), ১০ জন বয়োজ্যেষ্ঠ প্রতিনিধি ও ৪ জন স্বাস্থ্যসেবা পেশাজীবী।
অনুষ্ঠানের সূচনা পর্ব পরিচালনা করেন সিরাক-বাংলাদেশের প্রজেক্ট ম্যানেজার লুতফা পাঠান। উদ্বোধনী বক্তব্যে এডভোকেসি স্পেশালিস্ট মিজানুর রহমান আকন্দ সংগঠনের ‘ইয়ুথ ক্যাটালিস্ট’ প্রকল্পের লক্ষ্য ও কার্যক্রম তুলে ধরে আদিবাসী জনগোষ্ঠীর প্রথাগত জ্ঞানের গুরুত্বের ওপর আলোকপাত করেন।
আলোচনায় বয়োজ্যেষ্ঠ প্রতিনিধিরা আদিবাসী সমাজে প্রচলিত যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্যসংক্রান্ত প্রথাগত জ্ঞান, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব ও সম্প্রদায়ের সহনশীলতা বৃদ্ধির উপায় নিয়ে মতামত জানান। তরুণ অংশগ্রহণকারীরা তাঁদের অভিজ্ঞতা ও স্বাস্থ্যসেবায় অংশগ্রহণের আকাঙ্ক্ষা তুলে ধরেন। অন্যদিকে, স্বাস্থ্যসেবা পেশাজীবীরা বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিকোণ থেকে গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ প্রদান করেন।
ফোরামের অন্যতম লক্ষ্য ছিল যুবক ও বয়স্কদের মধ্যে আন্তঃপ্রজন্মীয় সংলাপ জোরদার করা এবং অঞ্চলভিত্তিক সুপারিশ তৈরি করা- যা পরবর্তীতে ‘কালার পেপার’ আকারে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও সংশ্লিষ্ট নীতিনির্ধারকদের কাছে উপস্থাপন করা হবে।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বান্দরবান জেলা পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের উপপরিচালক ডা. লেনিন তালুকদার। প্রধান অতিথি ছিলেন ডা. শাহীন হোসাইন চৌধুরী, আর বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মো. রেজাউল করিম।
সিরাক-বাংলাদেশের নির্বাহী পরিচালক এস. এম. সৈকত বলেন, আদিবাসী জনগোষ্ঠীর অভিজ্ঞতা ও প্রথাগত জ্ঞানের সমন্বয়ে তৈরি ‘কালার পেপার’ আমরা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট নীতিনির্ধারকদের কাছে উপস্থাপন করব। এর মাধ্যমে পাহাড়ি ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জন্য আরও অন্তর্ভুক্তিমূলক ও টেকসই স্বাস্থ্যনীতি গড়ে তোলা সম্ভব হবে।
সভাপতির বক্তব্যে ডা. লেনিন তালুকদার বলেন, আদিবাসী জনগোষ্ঠীর ঐতিহ্যবাহী জ্ঞান আমাদের অমূল্য সম্পদ। এ ধরনের ফোরাম যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্যসেবা ছাড়াও জলবায়ু সহনশীলতা এবং সম্প্রদায়ভিত্তিক সমাধান গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
ফোরামের আলোচনায় উঠে আসা কার্যকর সুপারিশগুলো একত্র করে পরবর্তীতে জাতীয় শ্বেতপত্র (White Paper) আকারে উপস্থাপন করা হবে বলে আয়োজকরা জানিয়েছেন। তাঁদের আশা, এ উদ্যোগের মাধ্যমে তরুণদের অংশগ্রহণে যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্যসেবা আরও সহজলভ্য হবে এবং আদিবাসী জনগোষ্ঠীর মধ্যে জলবায়ু সহনশীলতার ধারণা আরও শক্তিশালী হবে।
১১৮ বার পড়া হয়েছে