দেশীয় পর্যবেক্ষকদের জন্য নতুন বিধিমালা প্রকাশ করলো ইসি
বৃহস্পতিবার , ৩০ অক্টোবর, ২০২৫ ৮:১২ পূর্বাহ্ন
শেয়ার করুন:
আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ‘নির্বাচন পর্যবেক্ষণ নীতিমালা ২০২৫’ জারি করেছে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
নতুন এই নীতিমালা শুধুমাত্র দেশীয় পর্যবেক্ষক সংস্থাগুলোর জন্য প্রযোজ্য হবে বলে জানিয়েছে কমিশন।
বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) ইসির সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
ইসির মতে, নির্বাচন পর্যবেক্ষণের মূল উদ্দেশ্য হলো সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচনে সম্ভাব্য ত্রুটি বা বিচ্যুতি চিহ্নিত করা, নির্বাচনী প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা বৃদ্ধি এবং ভোটারের আস্থা পুনঃস্থাপন করা।
নীতিমালা অনুযায়ী, নির্বাচন পর্যবেক্ষণে অংশ নিতে আগ্রহী সংস্থাগুলোর জন্য ইসি দৈনিক পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করবে। আবেদন জমা দেওয়ার জন্য ১৫ দিন সময় নির্ধারণ করা হবে। আগ্রহী সংস্থাকে নির্ধারিত ফরমে আবেদনসহ প্রয়োজনীয় দলিলপত্র দাখিল করতে হবে। গণতন্ত্র, সুশাসন ও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় কাজ করে এমন বেসরকারি সংস্থাগুলো আবেদন করতে পারবে। তবে তাদের গঠনতন্ত্রে স্বাধীন ও নিরপেক্ষ নির্বাচন প্রচার ও উদ্বুদ্ধকরণের অঙ্গীকার থাকতে হবে।
নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ত ব্যক্তি যদি সংস্থার প্রধান নির্বাহী বা পরিচালনা পর্ষদের সদস্য হন, তবে সেই সংস্থা নিবন্ধনের জন্য অযোগ্য বিবেচিত হবে।
এ ছাড়া, কোনও রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার হলফনামা দাখিল করা বাধ্যতামূলক। আন্তর্জাতিক বা জাতীয় প্রতিষ্ঠানের নামের সঙ্গে মিল রয়েছে এমন সংস্থা বিভ্রান্তি সৃষ্টি করলে তারা নিবন্ধন পাবে না (তবে অনাপত্তিপত্র থাকলে ব্যতিক্রম হতে পারে)। পূর্বে যারা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত প্রতিবেদন দিয়েছে, তারাও অযোগ্য হবে।
প্রতিটি সংস্থার নিবন্ধন ৫ বছরের জন্য বৈধ থাকবে। মেয়াদ শেষে শর্তসাপেক্ষে তা নবায়নযোগ্য।
নিবন্ধনের সময়কালে সংস্থাকে— অন্তত একটি জাতীয় সংসদ নির্বাচন, এবং চারটি স্থানীয় সরকার নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করে প্রতিবেদন দাখিল করতে হবে। এ ছাড়া প্রতি দুই বছর অন্তর দ্বিবার্ষিক প্রতিবেদন জমা দেওয়া বাধ্যতামূলক।
পর্যবেক্ষক হতে হলে ব্যক্তিকে অবশ্যই—
১. বাংলাদেশের নাগরিক হতে হবে,
২. বয়স কমপক্ষে ২১ বছর হতে হবে,
৩. ন্যূনতম এইচএসসি বা সমমানের শিক্ষাগত যোগ্যতা থাকতে হবে,
৪. কোনো নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার অযোগ্য হওয়া যাবে না,
৫. কোনো রাজনৈতিক দল বা প্রার্থীর সঙ্গে স্বার্থসংশ্লিষ্টতা থাকতে পারবে না।
পর্যবেক্ষক মোতায়েনের একক ইউনিট হবে উপজেলা, মেট্রোপলিটন থানা বা সংসদীয় আসনভিত্তিক। তবে সংশ্লিষ্ট এলাকার বাসিন্দা বা ভোটার কেউ পর্যবেক্ষক হতে পারবে না।
সংস্থাগুলো নির্বাচনের আগের দিন, নির্বাচনের দিন এবং পরের দিন—মোট তিন দিনের জন্য পর্যবেক্ষক মোতায়েন করতে পারবে।
কোনো সংস্থা যদি নীতিমালা লঙ্ঘন করে বা রাষ্ট্রবিরোধী কার্যকলাপে জড়িত হয়, তবে ইসি ১০ দিনের মধ্যে জবাব চেয়ে নোটিশ দিতে পারবে। জবাব সন্তোষজনক না হলে বা অভিযোগ প্রমাণিত হলে সংস্থার নিবন্ধন বাতিল করা হবে। এ ক্ষেত্রে কমিশনের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত বলে গণ্য হবে।
১০৯ বার পড়া হয়েছে