তিন দফা দাবিতে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা শিক্ষকদের

মঙ্গলবার, ২১ অক্টোবর, ২০২৫ ২:২০ পূর্বাহ্ন
শেয়ার করুন:
বেসরকারি এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের তিন দফা দাবিতে চলমান আন্দোলন আরও তীব্র হচ্ছে।
আন্দোলনকারীরা এবার বাড়ি ভাড়া ভাতা ২০ শতাংশে উন্নীতকরণ, চিকিৎসা ভাতা ৫০০ থেকে ১৫০০ টাকায় বৃদ্ধি এবং উৎসব ভাতা ৫০ শতাংশ থেকে ৭৫ শতাংশে উন্নীত করার দাবিতে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন।
সোমবার দুপুরে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে চলমান আমরণ অনশন কর্মসূচির এক সংবাদ সম্মেলনে ‘এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণ প্রত্যাশী জোট’-এর সদস্য সচিব অধ্যক্ষ দেলোওয়ার হোসেন আজিজী এ কর্মসূচির ঘোষণা দেন। তিনি বলেন, “আমাদের আন্দোলন এখন আমরণ অনশনে রূপ নিয়েছে। ইতিমধ্যে চারজন শিক্ষক অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। আমরা শিক্ষকরা শারীরিকভাবে বিপর্যস্ত হলেও আন্দোলন থেকে পিছু হটছি না।”
আজ মঙ্গলবার শাহবাগে শিক্ষকরা মুখে কালো কাপড় বেঁধে অবস্থান নেবেন এবং পরবর্তীতে একটি বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হবে। মিছিল শেষে পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে বলে জানান তিনি। দাবি মেনে ২২ অক্টোবরের মধ্যে প্রজ্ঞাপন জারি না হলে ‘যমুনা ঘেরাও’-এর হুঁশিয়ারিও দেন তিনি।
অধ্যক্ষ আজিজী আন্দোলনে প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে বলেন, “মাদারীপুরের জেলা শিক্ষা অফিসার শিক্ষকদের আন্দোলন ঠেকাতে নোটিশ জারি করেছিলেন। আমি তাকে বলেছি, শিক্ষকদের ন্যায্য আন্দোলনের বিরোধিতা করবেন না। নোটিশ প্রত্যাহার না হলে শিক্ষা অফিসে তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হবে।” তিনি দাবি করেন, প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে যারা বাধা দিচ্ছেন, তাদের বিরুদ্ধে দেশজুড়ে প্রতিরোধ গড়ে তোলা হবে।
তিনি আরও বলেন, “আমরা শিক্ষা উপদেষ্টা সি আর আবরারের কোনো সিদ্ধান্ত মানি না। তার কূটচালে পা দেওয়া যাবে না। আমাদের দাবি না মানলে তাকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ছাড়তে হবে।”
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, আন্দোলনকারীরা বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। তিনি ২২ অক্টোবর পর্যন্ত সময় চেয়ে সমস্যার সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন। সেই সময় পর্যন্ত অপেক্ষা করবে শিক্ষক সমাজ। এরপরও দাবি বাস্তবায়ন না হলে সারাদেশ থেকে সচিবালয় ঘেরাওসহ বৃহত্তর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।
সরকারি বাজেট বরাদ্দ নিয়েও প্রশ্ন তোলেন আন্দোলনকারীরা। অধ্যক্ষ আজিজী বলেন, “প্রশিক্ষণের জন্য সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা, আর বিভিন্ন প্রকল্পে দুই হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ রয়েছে। এই অর্থ শিক্ষকদের কল্যাণে ব্যয় করা হোক।”
এ আন্দোলনে একাত্মতা প্রকাশ করে বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি আবুল কাশেম বলেন, “সরকারি শিক্ষকরা যেখানে ৪৫ শতাংশ বাড়ি ভাড়া পান, সেখানে এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা পান মাত্র ২০ শতাংশ। এই বৈষম্য নিরসন অত্যন্ত জরুরি।” তিনি বলেন, “প্রাথমিক থেকে বিশ্ববিদ্যালয়—শিক্ষকদের সকলকে জাতীয়করণ করতে হবে।”
তিনি শিক্ষকদের ওপর পুলিশি হামলার নিন্দা জানিয়ে বলেন, “শিক্ষকদের ন্যায্য দাবিগুলো মেনে নিয়ে তাদের শ্রেণিকক্ষে ফিরে যাওয়ার পরিবেশ তৈরি করুক সরকার।”
১০৮ বার পড়া হয়েছে