সর্বশেষ

মতামত

নিরাপত্তা ও রাজনৈতিক সংকটে বাংলাদেশ, বিমানবন্দরে সর্বোচ্চ সতর্কতা

মনজুর এহসান চৌধুরী
মনজুর এহসান চৌধুরী

শুক্রবার, ১০ অক্টোবর, ২০২৫ ৫:৫৩ পূর্বাহ্ন

শেয়ার করুন:
বাংলাদেশের আইনি ও রাজনৈতিক অঙ্গনে চরম উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছে। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল থেকে বর্তমান ও সাবেক সামরিক কর্মকর্তা, রাজনৈতিক নেতা মিলিয়ে ৩০ জনের নামে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির পর সংগঠিত হয়েছে দ্রুত আইন-প্রশাসনিক ব্যবস্থা।

একইসঙ্গে দেশের সব বিমানবন্দরকে সিভিল এভিয়েশন অথরিটি (CAAB) থেকে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা সতর্কতায় রাখা হয়েছে, যা সরাসরি “রেড অ্যালার্ট” না হলেও নজিরবিহীন।

আইনি ব্যবস্থা ও নিরাপত্তা
৮-৯ অক্টোবর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল দেশের আলোচিত কয়েকজন শীর্ষ সামরিক ও রাজনৈতিক নেতার নামে মানবতাবিরোধী অপরাধ ও গুম-অপহরণ মামলায় গ্রেফতারি পরোয়ানা দেয়। পরোয়ানাগুলো ইন্সপেক্টর জেনারেল অব পুলিশ (IGP), সামরিক প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানসমূহে দ্রুত পাঠানো হয়। উদ্দেশ্য—কেউ যেন দেশত্যাগ করতে না পারে। ইতিমধ্যে ইমিগ্রেশন ও নিরাপত্তা বাহিনীকে সর্বোচ্চ সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে, তবে পূর্ব অভিজ্ঞতায় দেখা গেছে নজরদারির ঘাটতিতে অভিযুক্তরা বিদেশে পালিয়ে যেতে পেরেছিল।

বিমানবন্দরে সর্বোচ্চ সতর্কতা
একই সময়ে, বিশ্বব্যাপী সাইবার হামলার হুমকি ও দেশের রাজনৈতিক অস্থিরতার প্রেক্ষাপটে সকল আন্তর্জাতিক ও আভ্যন্তরীণ বিমানবন্দরে ৮ অক্টোবর সন্ধ্যা থেকে বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা চালু রাখা হয়েছে। CAAB-এর ১০দফা সতর্কতা নির্দেশনায় বলা হয়েছে—ইমিগ্রেশন, নিরাপত্তা স্ক্যানার, প্রযুক্তি ও প্রবেশ পথে সর্বোচ্চ নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। যাত্রী চলাচলে বড় কোনো বাঁধা না থাকলেও, প্রতিটি কর্মকর্তা, কর্মচারী এবং প্রযুক্তি বিভাগ সবসময় প্রস্তুত থাকার নির্দেশ পেয়েছেন।

রাজনীতিক গুঞ্জন ও গুজব
এমন অস্থিতিশীল পরিস্থিতিতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে, বহুল আলোচিত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশে ফিরছেন। যদিও তার পক্ষে বা সরকারি কোনো উৎস থেকে এখনো নিশ্চয়তা বা আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসেনি। বিশ্লেষকদের মতে, এই পরিস্থিতিতে গুজব-গোলযোগের ঝুঁকি বেড়ে গেছে এবং রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তার পাশাপাশি জনমনে বিভ্রান্তি ছড়ানোরও আশঙ্কা রয়েছে।

বাহিনীর অভ্যন্তরীন টানাপোড়েন
সেনাবাহিনীর উচ্চ পদস্ত কতিপয় কর্মকর্তা ও রাজনৈতিক গোষ্ঠী নিজেদের নিরাপত্তার স্বার্থে সরকারে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করলেও মাঝারি এবং নিম্ন পর্যায়ের অধিকাংশ কর্মকর্তা বা সাধারণ সদস্যরা এতে একমত নন। এর মধ্যে বিদেশি রাষ্ট্রগুলো ও কূটনীতিকদের সঙ্গে গোপন আলোচনা চলার ইঙ্গিতও পাওয়া যাচ্ছে।

শেষ কথা
তীব্র আইনি, রাজনীতিক ও প্রশাসনিক সংকটে একদিকে গ্রেফতারি পরোয়ানার বাস্তবায়ন, অন্যদিকে বিমানবন্দরে নজিরবিহীন নিরাপত্তা—বাংলাদেশে চরম এক উত্তেজনার সৃষ্টি করেছে। প্রশাসনের কঠোর যুগপৎ ব্যবস্থার মধ্যেও রাজনৈতিক বিভাজন ও গুজব-সংক্রান্ত পরিবেশ গোটা দেশে নতুন সংকটের ইঙ্গিত দিচ্ছে।


লেখক : সাংবাদিক, কলামিস্ট।

১২৪ বার পড়া হয়েছে

শেয়ার করুন:

মন্তব্য

(0)

বিজ্ঞাপন
৩২০ x ৫০
বিজ্ঞাপন
মতামত নিয়ে আরও পড়ুন

বিজ্ঞাপন

২৫০ x ২৫০

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন
৩২০ x ৫০
বিজ্ঞাপন