বর্ষা-শরতে বাড়ে ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া: পার্থক্য চেনার উপায়

রবিবার, ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ ৮:৩১ পূর্বাহ্ন
শেয়ার করুন:
বর্ষা ও শরৎকালে দেশে মশাবাহিত রোগ ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়ার প্রাদুর্ভাব বাড়ে। দুটি রোগই এডিস মশার মাধ্যমে ছড়ালেও লক্ষণে রয়েছে কিছু ভিন্নতা, যা সঠিক রোগ নির্ণয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
সময়মতো চিকিৎসা না নিলে এই দুটি রোগই জটিল আকার ধারণ করতে পারে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকেরা।
বিশেষজ্ঞদের মতে, ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়ার প্রাথমিক উপসর্গ অনেকটা একই হলেও কিছু পার্থক্য লক্ষ্য করলেই দ্রুত শনাক্ত করা সম্ভব। নিচে দুই রোগের লক্ষণ ও পার্থক্য তুলে ধরা হলো—
ডেঙ্গুর সাধারণ লক্ষণ
তীব্র জ্বর: হঠাৎ ১০২ থেকে ১০৫ ডিগ্রি ফারেনহাইট পর্যন্ত জ্বর দেখা দেয়।
মাথাব্যথা: চোখের পেছনে ও কপালে তীব্র ব্যথা অনুভূত হয়।
মাংসপেশি ও হাড়ের ব্যথা: শরীরজুড়ে ব্যথা, যা এতটাই তীব্র হয় যে একে ‘হাড়ভাঙা জ্বর’ বলা হয়।
ত্বকে র্যাশ: জ্বরের ৪ থেকে ৭ দিনের মধ্যে লালচে ফুসকুড়ি দেখা দিতে পারে।
বমি ও বমি বমি ভাব: হজমের সমস্যা দেখা দেয়।
রক্তক্ষরণ: গুরুতর ক্ষেত্রে দাঁতের মাড়ি, নাক কিংবা প্রস্রাবে রক্ত দেখা দিতে পারে।
চিকুনগুনিয়ার লক্ষণগুলো কীভাবে আলাদা?
উচ্চ জ্বর: ডেঙ্গুর মতোই জ্বর হলেও এটি সাধারণত ২–৩ দিনেই কমে যায়।
অস্থিসন্ধিতে তীব্র ব্যথা: এটি চিকুনগুনিয়ার সবচেয়ে বৈশিষ্ট্যমূলক উপসর্গ। ব্যথা দীর্ঘদিন পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে।
মাথা ও শরীরব্যথা: তীব্র না হলেও ব্যথা থাকে।
ত্বকে র্যাশ: জ্বরের ২–৫ দিনের মধ্যে লালচে র্যাশ দেখা দেয়।
চোখে প্রদাহ: চোখ লাল হওয়া বা ব্যথা অনুভব হতে পারে।
বমি বমি ভাব: মাঝে মাঝে দেখা যেতে পারে।
লক্ষণেই মূল পার্থক্য
ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়ার মধ্যে সবচেয়ে বড় পার্থক্য হলো ব্যথার ধরন ও স্থায়িত্ব। ডেঙ্গুতে মাংসপেশি ও হাড়ে তীব্র ব্যথা হয়, যা জ্বর কমার সঙ্গে সঙ্গে উপশম হয়। তবে চিকুনগুনিয়ায় অস্থিসন্ধির ব্যথা এতটাই তীব্র হয় যে তা রোগীকে সপ্তাহ বা মাসজুড়েও কষ্ট দিতে পারে।
চিকিৎসা ও করণীয়
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জ্বর, ব্যথা বা র্যাশ দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি। রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমেই নিশ্চিত হওয়া সম্ভব রোগটি ডেঙ্গু না চিকুনগুনিয়া। উভয় রোগের ক্ষেত্রেই পর্যাপ্ত বিশ্রাম ও তরল গ্রহণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
দুই রোগই অবহেলা করলে প্রাণঘাতী হয়ে উঠতে পারে বলে সতর্ক করছেন চিকিৎসকেরা। পাশাপাশি ঘরবাড়ির আশপাশ পরিষ্কার রাখা এবং এডিস মশার প্রজননস্থল ধ্বংস করাও সমান জরুরি।
১২০ বার পড়া হয়েছে