টঙ্গী অগ্নিকাণ্ডে ফায়ার ফাইটারসহ ৪ জনের মৃত্যুতে প্রধান উপদেষ্টার শোক

রোববার (২৮ সেপ্টেম্বর) দুপুরে প্রধান উপদেষ্টার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেওয়া এক শোকবার্তায় তিনি বলেন,

“জীবন রক্ষার মহান দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে আমাদের তিনজন সাহসী ফায়ার ফাইটারসহ চারজন প্রাণ হারিয়েছেন—এটি অত্যন্ত হৃদয়বিদারক। নিহতদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি এবং তাদের পরিবার-পরিজনের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি।”
নিহতদের পরিচয়
এই মর্মান্তিক ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন:

ফায়ার সার্ভিসের ওয়্যারহাউজ ইন্সপেক্টর জান্নাতুল নাঈম,
ফায়ার ফাইটার নুরুল হুদা,
ফায়ার ফাইটার মো. শামীম,
দোকান কর্মচারী বাবু হাওলাদার।

“জাতি চিরঋণী”— প্রধান উপদেষ্টা
শোকবার্তায় ড. ইউনূস বলেন,

“অগ্নি নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা দিনরাত নিজেদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মানুষের জান-মাল রক্ষায় নিয়োজিত থাকেন। তারা নিজের জীবনের মায়া ত্যাগ করে অন্যের জীবন বাঁচাতে ঝাঁপিয়ে পড়েন। তাদের এই আত্মত্যাগ জাতির কাছে এক অনন্য দৃষ্টান্ত। আজকের এই দুর্ঘটনা আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয়, দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে তারা কত বড় ঝুঁকি বহন করেন।”
তিনি আরও বলেন,

“এই দুর্ঘটনায় আমরা শুধু কয়েকজন সাহসী প্রাণ হারাইনি, বরং সাহস, মানবিকতা ও কর্তব্যনিষ্ঠার অনুপম দৃষ্টান্তও দেখেছি। ফায়ার সার্ভিস দেশের সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য ও সাহসী বাহিনী। সংকটকালে তারাই সবার আগে মানুষের পাশে দাঁড়ায়। আজ সেই মহান দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে তাদের জীবন দিতে হয়েছে। এটি সমগ্র জাতির জন্য শোকের বিষয়।”

শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা
নিহতদের পরিবারের প্রতি সান্ত্বনা জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন,

“আপনাদের প্রিয়জনরা নিছক দুর্ঘটনার শিকার হননি, তারা জাতির জন্য নিজেদের জীবন উৎসর্গ করেছেন। দেশের প্রতিটি মানুষ তাদের এই আত্মত্যাগ শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করবে। আমি আপনাদের শোক ভাগ করে নিচ্ছি এবং প্রার্থনা করছি—আল্লাহ আপনাদের ধৈর্য ও শক্তি দিন এই কঠিন সময়ে।”
তিনি আরও বলেন,

“এই বেদনাবহ ক্ষতি কখনো পূরণ হওয়ার নয়। তবে এই আত্মত্যাগ আমাদের অনুপ্রেরণা হয়ে থাকবে, যাতে আমরা একটি নিরাপদ, দায়িত্বশীল এবং সচেতন বাংলাদেশ গড়ে তুলতে পারি।”

অগ্নিকাণ্ডের পটভূমি
উল্লেখ্য, গত ২২ সেপ্টেম্বর বিকেল ৪টার দিকে গাজীপুরের টঙ্গী বিসিক শিল্প এলাকার রেল স্টেশন রোড সংলগ্ন সাহারা মার্কেটের একটি টিনশেড সেমিপাকা ভবনে অবস্থিত কেমিক্যাল গুদামে আগুন লাগে। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের ৮টি ইউনিটের ৫৩ জন কর্মী আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করেন।

অগ্নিকাণ্ড নিয়ন্ত্রণের একপর্যায়ে গুদামে রাখা রাসায়নিক ড্রামে বিস্ফোরণ ঘটে। এতে ফায়ার সার্ভিসের চারজন ও একজন স্থানীয় দোকান কর্মচারী দগ্ধ হন। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাদের মধ্যে চারজনের মৃত্যু হয়।