যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশি প্রতিনিধিদের উপর হামলা: একটি জাতীয় লজ্জা !

মঙ্গলবার, ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ ৩:৪৯ পূর্বাহ্ন
শেয়ার করুন:
আখতার, জারা, মির্জা ফখরুলসহ বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের আমন্ত্রণে যারা ইউএস গিয়েছিলেন, বিমানবন্দরে তাদের সাথে আওয়ামী লীগের সংশ্লিষ্ট সমর্থক দ্বারা যে অসভ্য ও অনাকাঙ্খিত আচরণ করা হয়েছে, তা জাতি হিসেবে আমাদের জন্য এক চরম লজ্জার বিষয়। এই হামলার তীব্র নিন্দা জানাই।
এই ঘটনার দায়দায়িত্ব শুধু হামলাকারীদেরই নয়, বরং সেইসব মহলও এড়াতে পারবেন না যারা দীর্ঘদিন ধরে আওয়ামী লীগের আমলে দুর্নীতি করে টাকার পাহাড় গড়েছেন—ফ্যাসিস্টদের সেই নষ্টামির নোংরা টাকা খেয়ে তারা এখন প্রতিবাদতো দুর কি বাত, উল্টো তাদের রক্ষা করে যাচ্ছেন, ফ্যাসিস্টদের দোসর সেই সকল কর্মকর্তাদের নিয়ে সচিবালয়ে বসে বসে বাতাস খাচ্ছেন আর কোটি টাকা গুনছেন। ফ্যাসিস্টদের সহায়তাকারী প্রতিষ্ঠানগুলা থেকে নোংরা খাবার (টাকা) খেয়ে যারা ঐ সকল স্টাবলিশমেন্ট ভাঙতে না দিয়ে উল্টো রক্ষা করেছেন তারাই এই হামলার জন্য দায়ী, তারাই এই হামলার বীজ বোপন করেছেন।
ক্ষমতাসীনদের সঙ্গে সম্পর্ক রেখে গণতন্ত্র ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতাকে দমিয়ে রাখতে সহায়তা করেছেন। মাহফুজ আলমসহ অসংখ্য সাংবাদিক ও বিরোধী দলীয় ব্যক্তিদের উপর পূর্ববর্তী হামলাগুলোরও দায় এই ব্যবস্থার সাথে জড়িতদের উপর বর্তায়।
জাতিসংঘের উদ্দেশ্যে একটি সরকারি সফরে গিয়ে ন্যূনতম নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হওয়া রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থার জন্য অত্যন্ত দুঃখজনক। এই ঘটনার জন্য দায়ী কর্তৃপক্ষের উচিত দ্রুত জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা এবং ক্ষমা চেয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া।
উল্লেখ্য, হামলার ভিডিওগুলো ক্ষমতাসীন দলের পেজ থেকে লাইভ করা হয়েছে, যা ঘটনাটির পৃষ্ঠপোষকতা সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা দেয়। আখতার, জারা ও মির্যা ফখরুলসহ সকলের উপরে এই সহিংসতা চালানোর চেষ্টা করা হয়েছে, যা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।
এর মধ্যেই যুক্তরাজ্য ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি কর্তৃক একজন নারী কর্মীকে উদ্দেশ্য করে করা ভাষা ও আচরণ চরম নারীবিদ্বেষী ও অমর্যাদাকর। এটি আমাদের রাজনৈতিক সংস্কৃতির অবনতির চরম一 প্রমাণ। অনেক স্বনামধন্য ব্যক্তি ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা এই ঘটনায় নিশ্চুপ থাকায় আমরা হতাশ। মানবতা, গণতন্ত্র ও ন্যায়ের প্রশ্নে নীরবতা কোনো বিকল্প হতে পারে না।
এটা স্পষ্ট, একটি দলের সমর্থন আর মানবিক মূল্যবোধ—দুইয়ের সহাবস্থান সম্ভব নয়। আওয়ামী লীগের কাছ থেকে ইতিবাচক কিছু আশা করা বৃথা। কিন্তু প্রশ্ন হলো, ইউনূস সরকার কী এমন একটি ব্যবস্থা দাঁড় করিয়েছেন, যেখানে যুক্তরাষ্ট্রে সরকারি সফরেও বাংলাদেশি প্রতিনিধিরা নিরাপত্তাহীনতায় থাকবেন?
এটি শুধু একটি রাজনৈতিক হামলা নয়, এটি বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক ইমেজের উপরেও কুপ্রভাব ফেলেছে।
#নিন্দা_ও_জবাবদিহিতা_চাই
লেখক: গবেষক ও বিশ্লেষক
(লেখাটি লেখকের ফেসবুক থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে)
১৪৩ বার পড়া হয়েছে