সর্বশেষ

জাতীয়

সাবেক ভূমিমন্ত্রীর বিদেশি সম্পদের ২৩ বস্তা আলামত জব্দ

স্টাফ রিপোর্টার
স্টাফ রিপোর্টার

রবিবার, ২১ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ ৬:৩৩ পূর্বাহ্ন

শেয়ার করুন:
দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদের বিদেশে অর্জিত সম্পদ ও অর্থপাচারের প্রমাণস্বরূপ ২৩ বস্তা আলামত উদ্ধার করেছে।

এই আলামত জব্দ করা হয় জাবেদের দুই ঘনিষ্ঠ সহযোগী উৎপল পাল ও আব্দুল আজিজের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে।

রোববার (২১ সেপ্টেম্বর) ভোরে চট্টগ্রামের কর্ণফুলী শিকলবাহা এলাকার সিকদার বাড়ি থেকে এসব আলামত উদ্ধার করা হয়। দুদকের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, বস্তাগুলোতে বিদেশে সম্পদ অর্জনের নথিপত্র, বিল পরিশোধ ও ভাড়া আদায়ের বিভিন্ন তথ্য রয়েছে।

দুদকের প্রধান কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মশিউর রহমান বলেন, দুই সহযোগীর পাঁচ দিনের রিমান্ড চলছে এবং জিজ্ঞাসাবাদের সময় জানা গেছে, অনেক গুরুত্বপূর্ণ নথি গায়েব হয়েছে। এসব নথি জাবেদের স্ত্রী রুকমিলা জামানের গাড়িচালক ইলিয়াসের বাসায় রাখা ছিল। গত শুক্রবার সেখানে অভিযান চালানো হলেও, পূর্ব তথ্য পেয়ে বস্তাগুলো সরিয়ে ফেলা হয়। সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনায় দেখা যায়, দুদকের অভিযান থেকে আধা ঘণ্টা আগে আলামত সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল।

তিনি আরও জানান, পরে একটি ছোট বাসা থেকে ২৩ বস্তা আলামত উদ্ধার করা হয়েছে। এগুলো খুলে দেখা হয়েছে যে, সেখানে রয়েছে বিদেশে সম্পদ অর্জনের ক্রয় সংক্রান্ত পেমেন্টের কাগজপত্র, বাড়ি ভাড়া আদায়ের তথ্য, বিভিন্ন বিল পরিশোধ ও কোর্টের আদেশ সংক্রান্ত নথিপত্র। তবে এখনও সব আলামত পর্যালোচনা করা হয়নি।

এর আগে, ১৭ সেপ্টেম্বর দুদকের একটি দল অভিযান চালিয়ে জাবেদের ঘনিষ্ঠ সহযোগী উৎপল পাল ও আব্দুল আজিজকে গ্রেপ্তার করে। ২৫ কোটি টাকা আত্মসাত ও পাচারের অভিযোগে করা মামলায় তাদের গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে সোপর্দ করা হয়। আদালত তাদের পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

দুদকের তথ্য অনুযায়ী, উৎপল পাল আরামিট গ্রুপের এজিএম হলেও দীর্ঘদিন ধরে জাবেদের ব্যক্তিগত কর্মকর্তা হিসেবে বিদেশে সম্পদ ক্রয় ও দেখাশোনার দায়িত্ব পালন করতেন। গ্রেপ্তারের সময় তার কাছ থেকে দুটি ল্যাপটপ ও দুটি মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়েছে। প্রাথমিক অনুসন্ধানে এসব ডিভাইস থেকে বিপুল তথ্য পাওয়া গেছে, যার ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য আদালতের অনুমতি চাওয়া হয়েছে।

অন্যদিকে, আব্দুল আজিজ আরামিট থাই অ্যালুমিনিয়াম লিমিটেডের এজিএম হিসেবে কর্মরত ছিলেন এবং জাবেদের সম্পত্তি ক্রয়-বিক্রয়, ভাড়া ও রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে ছিলেন।

গত ২৪ জুলাই দুদক উপ-পরিচালক মশিউর রহমান বাদী হয়ে জাবেদসহ ৩১ জনকে আসামি করে মামলা করেন। উল্লেখযোগ্য আসামিদের মধ্যে রয়েছেন জাবেদের স্ত্রী ও ইউসিবিএল ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান রুকমিলা জামান, ব্যাংকের পরিচালক আসিফুজ্জামান চৌধুরী, জাবেদের বোন রোকসানা জামান চৌধুরী ও ব্যাংকের সাবেক পরিচালক বশির আহমেদ।

মামলায় বলা হয়েছে, সাবেক ভূমিমন্ত্রী জাবেদের মালিকানাধীন আরামিট গ্রুপের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নামে পাঁচটি নামসর্বস্ব প্রতিষ্ঠান খুলে তাদের নামে ইউসিবিএল ব্যাংকের চট্টগ্রাম বন্দর শাখায় গম, ছোলা, হলুদ ও মটর আমদানির নাম করে ২৫ কোটি টাকার টাইম লোন নেওয়া হয়। ব্যাংকের নিজস্ব ক্রেডিট কমিটির ১৭টি নেতিবাচক পর্যালোচনা উপেক্ষা করে ২০২০ সালের ৮ মার্চ ঋণ অনুমোদিত হয়। পরে ঋণটি ভাগ করে চারটি নামে খোলা হিসাব নম্বরে স্থানান্তর ও নগদ উত্তোলন করা হয়।

মামলায় আরও উল্লেখ করা হয়েছে, ব্যাংকের পরিচালক ও ঋণ আবেদনকারী সকলেই পারস্পরিক আত্মীয় বা ঘনিষ্ঠ হওয়ায় সমন্বিত চক্রের মাধ্যমে এই ঋণ গ্রহণ ও টাকা পাচার সম্ভব হয়েছে।

এছাড়া, ইউসিবিএল ব্যাংকের করপোরেট ব্যাংকিং ডিভিশন ও ক্রেডিট রিস্ক ম্যানেজমেন্ট ডিভিশনের কর্মকর্তাদের গঠিত ক্রেডিট কমিটি ঋণ প্রক্রিয়ায় নেতিবাচক পর্যবেক্ষণ সত্ত্বেও ঋণ মঞ্জুর করেছে। টাকা নগদে উত্তোলনের পর তা পে-অর্ডার ও ভাউচারের মাধ্যমে আরামিট গ্রুপের বিভিন্ন হিসাবের মধ্যে জমা দেওয়া হয়।

১১৫ বার পড়া হয়েছে

শেয়ার করুন:

মন্তব্য

(0)

বিজ্ঞাপন
৩২০ x ৫০
বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

৩০০ x ২৫০

বিজ্ঞাপন
এলাকার খবর

বিজ্ঞাপন

৩০০ x ২৫০

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ সব খবর
জাতীয় নিয়ে আরও পড়ুন

বিজ্ঞাপন

২৫০ x ২৫০

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন
৩২০ x ৫০
বিজ্ঞাপন