সর্বশেষ

আন্তর্জাতিক

উত্তরাখণ্ডে মেঘভাঙা বৃষ্টিতে মৃত্যুমিছিল, বন্ধ চারধাম যাত্রা

ডেস্ক রিপোর্ট
ডেস্ক রিপোর্ট

বুধবার, ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ ৮:৫৯ পূর্বাহ্ন

শেয়ার করুন:
পাহাড়ের পর এবার সমতলেও ভয়াল রূপ প্রকৃতির। উত্তরাখণ্ডে চলতি বর্ষা মরসুম যেন একের পর এক বিপর্যয় বইয়ে আনছে।

কয়েকদিন আগেই চারধাম যাত্রা বাধাপ্রাপ্ত হয়েছিল ধস ও হড়পা বানের কারণে। এবার সেই দুর্যোগ তীব্র আকারে ধাক্কা দিয়েছে রাজ্যের রাজধানী দেরাদুন-সহ একাধিক সমতল অঞ্চলে।

সোমবার রাত থেকে শুরু হওয়া প্রবল মেঘভাঙা বৃষ্টিতে দেরাদুন শহর কার্যত জলের তলায় চলে যায়। সহস্রধারা এলাকায় নদীর জল প্রবেশ করেছে লোকালয়ে, ডুবে গেছে বহু হোটেল, স্কুল, দোকানপাট ও ঘরবাড়ি। এখন পর্যন্ত অন্তত ১৩ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে, নিখোঁজ আরও ১৬ জন।

বিশ্বপ্রসিদ্ধ টপকেশ্বর মহাদেব মন্দির ও তার বিশাল হনুমান মূর্তিও ডুবে গেছে পানির নিচে। স্থানীয় পুরোহিতরা জানাচ্ছেন, জীবনে এমন ভয়াবহ জলবন্দি পরিস্থিতি এর আগে দেখা যায়নি। নবরাত্রির প্রাক্কালে এই পরিস্থিতি জনমনে বাড়িয়েছে আতঙ্ক।

চারধাম যাত্রার গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলিতে এখনও ধস ও বন্যার ছাপ স্পষ্ট। কেদারনাথ, বদ্রীনাথ, হেমকুণ্ড সাহিব, গঙ্গোত্রী ও যমুনোত্রীর পরে এবার দুর্যোগ ছড়িয়ে পড়েছে নৈনিতাল, রুদ্রপ্রয়াগ, চামোলি, পাউরি, বাগেশ্বর এবং দেরাদুন জেলায়। বহু শ্রমিক ধসের কারণে আটকে পড়েছেন, এনডিআরএফ চলছে ত্রাণ ও উদ্ধারকাজে।

দেবভূমি ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা পুরোপুরি অবরুদ্ধ। হরিদ্বার-দেরাদুন রেলপথ আগেই বন্ধ ছিল, এখন মুসৌরি যাওয়ার সড়কপথও বিচ্ছিন্ন। হৃষিকেশের রাস্তাঘাট ও চন্দ্রভাগা নদীর জলে ডুবে গেছে বহু বসতি। গাড়ি, বাজার, বাড়ি সব ভেসে গেছে জলে।

হিমাচল প্রদেশেও দুর্যোগের চিত্র এক। ৬৫০টি সড়ক বন্ধ, ১২০০ বিদ্যুৎ সাব-স্টেশন অচল, ১৫০টির বেশি পানীয় জল প্রকল্প স্তব্ধ। কুলু-মানালি হাইওয়ে বিচ্ছিন্ন, ফলে বহু পর্যটক আটকে পড়েছেন।

আবহাওয়া দপ্তরের সতর্কবার্তা, আগামী ৪৮ ঘণ্টায় দেরাদুন, নৈনিতাল, পিথোরাগড়, চম্পাবত ও উধম সিং নগর জেলায় হতে পারে আরও প্রবল মেঘভাঙা বৃষ্টি।

এই পরিস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিং ধামি-র সঙ্গে পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করেছেন। তবে, সাধারণ মানুষের ক্ষোভ— “শুধু কথায় কিছু হচ্ছে না।”

বিরোধী দলগুলি ও পরিবেশবাদী সংগঠনগুলি দাবি করছে, কেন্দ্রীয় সরকারের চারধাম মহাসড়ক প্রকল্প এই ধ্বংসের মূলে। পাহাড় কেটে সুড়ঙ্গ ও হাইওয়ে নির্মাণ প্রকৃতির ভারসাম্য নষ্ট করেছে বলেই আজ এই বিপর্যয়।

স্থানীয়দের মতে, “ভ্রমণ আর উন্নয়নের নামে প্রাণ দিয়ে মাশুল দিচ্ছেন সাধারণ মানুষ।”

দুর্যোগের তালিকা ক্রমশ দীর্ঘ হচ্ছে। শুধু পাহাড় নয়, এবার সমতলও সমানভাবে ক্ষতিগ্রস্ত। দেবভূমি যেন এক অভিশপ্ত ভূমিতে পরিণত হয়েছে— এমনটাই বলছেন এলাকাবাসীরা।
 

১১০ বার পড়া হয়েছে

শেয়ার করুন:

মন্তব্য

(0)

বিজ্ঞাপন
৩২০ x ৫০
বিজ্ঞাপন
আন্তর্জাতিক নিয়ে আরও পড়ুন

বিজ্ঞাপন

২৫০ x ২৫০

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন
৩২০ x ৫০
বিজ্ঞাপন