চাঁদপুরে জীবিত অবস্থায় নবজাতককে দাফনের জন্য কবরস্থানে

বুধবার, ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ ২:৫৯ পূর্বাহ্ন
শেয়ার করুন:
চাঁদপুর শহরে চাঞ্চল্যকর এক ঘটনার রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। মৃত ঘোষণা করা এক নবজাতককে জীবিত অবস্থায় কবরস্থানে দাফনের জন্য নিয়ে যাওয়ার ঘটনায় গ্রেফতার করা হয়েছে ইউনাইটেড হাসপাতাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারের এক কর্মচারীকে।
গত মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) রাতে চাঁদপুর জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) ফারুক গাজী নামের ওই ব্যক্তিকে আটক করে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ফারুক জানান, হাসপাতালের এক নার্স তাকে নবজাতকটিকে ফেলে দিতে বলেছিলেন। এর বিনিময়ে তিনি ৫০০ টাকা পান। তবে ফেলে না দিয়ে তিনি নবজাতককে কার্টনে করে কবরস্থানে নিয়ে যান এবং দাফনের জন্য কবরস্থানের এক কর্মীকে ২০০ টাকা দেন। বাকি ৩০০ টাকা নিজের কাছে রেখে দেন।
ঘটনার সূত্রপাত হয় গত রোববার (১৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরে। চাঁদপুর পৌর কবরস্থানে এক অজ্ঞাত ব্যক্তি কার্টনে মোড়ানো নবজাতক নিয়ে আসেন। দাফনের আগে আজান দেওয়ার সময় দায়িত্বে থাকা কবরস্থানের কর্মী ফারুক মিয়া শিশুটির কান্নার শব্দ শুনে কার্টনটি খুলে দেখেন নবজাতকটি জীবিত। এ সময় সঙ্গে সঙ্গে ওই অজ্ঞাত ব্যক্তি পালিয়ে যান।
ফারুক মিয়ার চিৎকারে স্থানীয়রা ছুটে আসেন এবং সাংবাদিকদের সহায়তায় নবজাতককে দ্রুত একটি বেসরকারি ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়। তবে ৮ ঘণ্টা চিকিৎসাধীন থাকার পর শিশুটির মৃত্যু হয়। ওই রাতেই তাকে আনুষ্ঠানিকভাবে দাফন করা হয়।
চাঁদপুর জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মজিবুর রহমান জানান, কবরস্থানের আশপাশের সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে অজ্ঞাতপরিচয় ওই ব্যক্তিকে শনাক্ত করা হয় এবং পরবর্তীতে অভিযান চালিয়ে তাকে আটক করা হয়। তিনি আরও বলেন, “ফারুককে এমন নির্দেশ দেওয়া নার্সটি কে, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। পাশাপাশি নবজাতকটির মা কে—তা শনাক্তে অনুসন্ধান চলছে।”
চাঁদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অর্থ ও প্রশাসন) মো. লুৎফর রহমান জানিয়েছেন, ঘটনাটি অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে এবং তদন্ত কর্মকর্তাদের কঠোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে চাঁদপুরের পুলিশ সুপার মুহম্মদ আব্দুর রকিব বলেন, “ঘটনার পরপরই ডিবিকে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়। দুই দিনের মধ্যেই তারা জড়িত ব্যক্তি ও সংশ্লিষ্ট ক্লিনিক চিহ্নিত করতে সক্ষম হয়েছেন। এ ঘটনায় যারা জড়িত, তাদের সবাইকে আইনের আওতায় আনা হবে।”
১২৪ বার পড়া হয়েছে