বদরুদ্দীন উমরের প্রতি শেষশ্রদ্ধা: শহীদ মিনারে সর্বস্তরের মানুষের ঢল

সোমবার, ৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ ৬:৩৪ পূর্বাহ্ন
শেয়ার করুন:
দেশের খ্যাতিমান বামপন্থী চিন্তাবিদ, গবেষক ও লেখক বদরুদ্দীন উমরের প্রতি শেষশ্রদ্ধা জানাতে আজ সোমবার সকালে রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সমবেত হন সর্বস্তরের মানুষ। সকাল সাড়ে ১০টা থেকে শুরু হয় শ্রদ্ধা নিবেদন পর্ব।
রাজনীতিবিদ, সাংস্কৃতিককর্মী, শিক্ষাবিদ, পেশাজীবী সংগঠন এবং বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ ফুল দিয়ে এই প্রগতিশীল চিন্তকের প্রতি তাদের ভালোবাসা ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ ও ফরিদা আখতার শহীদ মিনারে উপস্থিত থেকে শ্রদ্ধা জানান।
শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে বদরুদ্দীন উমরের মরদেহ নেওয়া হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদে। বাদ জোহর জানাজা শেষে তাঁকে জুরাইন কবরস্থানে মা-বাবার কবরের পাশে সমাহিত করা হয়।
গতকাল রোববার (৭ সেপ্টেম্বর) রাতে রাজধানীর শ্যামলীর বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন বদরুদ্দীন উমর। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৯৪ বছর। তিনি দীর্ঘদিন জাতীয় মুক্তি কাউন্সিলের সভাপতির দায়িত্ব পালন করছিলেন।
সংক্ষিপ্ত জীবনী: বাম রাজনীতির অগ্রদূত
১৯৩১ সালের ২০ ডিসেম্বর পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলায় জন্মগ্রহণ করেন বদরুদ্দীন উমর। তাঁর পিতা আবুল হাশিম ছিলেন অখণ্ড বাংলার প্রখ্যাত রাজনীতিক এবং বঙ্গীয় প্রাদেশিক মুসলিম লীগের সাধারণ সম্পাদক। দেশভাগের পর ১৯৫০ সালে পরিবারসহ ঢাকায় চলে আসেন তিনি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দর্শনে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর শেষ করে ১৯৫৪ সালে বিশ্ববিদ্যালয়েই খণ্ডকালীন শিক্ষক হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। পরে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগ দেন এবং ১৯৬৩ সালে সেখানে সমাজবিজ্ঞান বিভাগ প্রতিষ্ঠা করেন। যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিপিই (দর্শন, রাজনীতি ও অর্থনীতি) ডিগ্রি নিয়ে ১৯৬১ সালে দেশে ফেরেন।
১৯৬৮ সালে তৎকালীন শাসক মোনায়েম খানের স্বৈরতান্ত্রিক আচরণের প্রতিবাদে শিক্ষকতা ছেড়ে রাজনীতি ও লেখালেখিতে মনোনিবেশ করেন। তাঁর লেখা বইয়ের সংখ্যা শতাধিক। প্রথম বই ‘সাম্প্রদায়িকতা’ প্রকাশিত হয় ১৯৬৬ সালে, যা বুদ্ধিবৃত্তিক মহলে দারুণ আলোড়ন তোলে। ভাষা আন্দোলন নিয়ে লেখা ‘পূর্ববাঙলার ভাষা আন্দোলন ও তৎকালীন রাজনীতি’ বইটি গবেষণাভিত্তিক একটি মৌলিক কাজ হিসেবে বিবেচিত।
তিনি বাংলাদেশ কৃষক ফেডারেশন, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী জোট ও পূর্ব বাংলার কমিউনিস্ট পার্টির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। ২০০৩ সালে প্রতিষ্ঠিত জাতীয় মুক্তি কাউন্সিলের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন মৃত্যুর আগ পর্যন্ত।
১১৬ বার পড়া হয়েছে