গাজা সিটিতে হামলা, শিশুদের মৃত্যু উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে

রবিবার, ৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ ৩:২৭ পূর্বাহ্ন
শেয়ার করুন:
গাজার তাল আল-হাওয়া এলাকায় আবারও বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী।
শনিবার সকালে একটি সামরিক মানচিত্র প্রকাশ করে বেশ কয়েকটি উঁচু ভবনকে লক্ষ্যবস্তু ঘোষণা করার পরপরই জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা (ইউএনআরডব্লিউএ)-এর কার্যালয়ের বিপরীতে অবস্থিত ১৫ তলা সাউসি টাওয়ারে হামলা চালানো হয়।
কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা জানিয়েছে, ভবন ধ্বংসের আগে স্থানীয় বাসিন্দাদের মাত্র আধা ঘণ্টা থেকে এক ঘণ্টার মধ্যে ঘর ছাড়তে বলা হয়, যা নিরাপদে পালানোর জন্য মোটেও যথেষ্ট নয়। এর ফলে এলাকাজুড়ে আতঙ্ক আরও বেড়েছে।
ইসরায়েলি বাহিনীর দাবি, এসব ভবন হামাসের গোয়েন্দা তৎপরতা ও সুড়ঙ্গ তৈরির কাজে ব্যবহৃত হচ্ছিল। তবে গাজার সরকারি গণমাধ্যম দপ্তর এই অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে বলেছে, এটি "ভুয়া প্রচারণা" এবং বাস্তবতাকে আড়াল করার চেষ্টা। তাদের মতে, এসব হামলার মূল উদ্দেশ্য হলো বেসামরিক অবকাঠামো ধ্বংস ও জনগণকে জোর করে বাস্তুচ্যুত করা।
গাজার কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, চলমান সংঘাতে ইতোমধ্যে গাজার ৯০ শতাংশ অবকাঠামো ধ্বংস হয়ে গেছে। এর আগে শুক্রবার ১২ তলা মুশতাহা টাওয়ার ধ্বংস করে ইসরায়েলি বাহিনী, যা আন্তর্জাতিকভাবে ব্যাপক সমালোচনার জন্ম দেয়। তবে এসব সমালোচনাকে উপেক্ষা করেই গাজা সিটি দখলের উদ্দেশ্যে একের পর এক বিমান হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল।
গাজা থেকে পালাতে চাওয়া মানুষদের মধ্যে সবচেয়ে ঝুঁকিতে রয়েছে শিশুরা। ইউনিসেফের মুখপাত্র টেস ইংগ্রাম জানান, গাজার মোট জনসংখ্যার অর্ধেকই শিশু এবং এদের অনেকেই জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুতির কারণে চরম ঝুঁকিতে রয়েছে।
তিনি বলেন, “গাজার প্রতি দুই জনে একজন শিশু, আর তাদের জন্য জীবন এখন প্রায় অসম্ভব হয়ে উঠেছে।”
শিশু অধিকার সংস্থা সেভ দ্য চিলড্রেন জানায়, গাজায় চলমান প্রায় ২৩ মাসের যুদ্ধে গড়ে প্রতি ঘণ্টায় অন্তত একজন শিশু নিহত হচ্ছে। সংস্থাটি একে ‘ভয়াবহ নতুন মাত্রা’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছে।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে ২০২৫ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ইসরায়েলি হামলায় কমপক্ষে ৬৪ হাজার ৩৬৮ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন এবং আহত হয়েছেন ১ লাখ ৬২ হাজার ৩৬৭ জন।
শুধুমাত্র শনিবার সকাল থেকেই ইসরায়েলি হামলায় নিহত হয়েছেন অন্তত ৬৭ জন, যাদের মধ্যে ৪৫ জনই গাজা সিটির বাসিন্দা। এছাড়া অবরোধের কারণে সৃষ্ট দুর্ভিক্ষে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ছয়জনের মৃত্যু হয়েছে। এ পর্যন্ত অনাহারে মারা গেছেন ৩৮২ জন, যাদের মধ্যে ১৩৫ জন শিশু।
১৩২ বার পড়া হয়েছে