গাজায় একদিনে ৭৩ ফিলিস্তিনি নিহত

বৃহস্পতিবার , ৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ ৩:১০ পূর্বাহ্ন
শেয়ার করুন:
অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরাইলি বাহিনীর লাগাতার বিমান হামলায় একদিনেই প্রাণ হারিয়েছেন আরও ৭৩ ফিলিস্তিনি। এর মধ্যে শুধু গাজা সিটিতেই নিহত হয়েছেন অন্তত ৪৩ জন।
বৃহস্পতিবার (৪ সেপ্টেম্বর) কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রতিদিনের মতোই নতুন করে বোমা হামলা চালানো হয়েছে গাজা সিটি ও আশপাশের এলাকাগুলোতে। হামলার মাত্রা এতটাই ভয়াবহ যে, আশ্রয়কেন্দ্র ও তাঁবুতে অবস্থানরত পরিবারগুলো পর্যন্ত রক্ষা পাচ্ছে না। গাজার বাস্তুচ্যুত এক নারী সাবরিন আল-মাবহুহ আল জাজিরাকে বলেন, “আমার ভাইকে তার ঘরেই হত্যা করা হয়েছে। তার স্ত্রী-সন্তানসহ কেউ বেঁচে নেই।”
হামাস এই পরিস্থিতিকে ‘গণহত্যা’ আখ্যা দিয়ে জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি দ্রুত হস্তক্ষেপের আহ্বান জানিয়েছে। তারা বলছে, এটি কোনো সাধারণ যুদ্ধ নয়, বরং একটি পরিকল্পিত এবং ধারাবাহিকভাবে পরিচালিত জাতিগত নিধনযজ্ঞ।
গাজার মিডিয়া অফিসের তথ্য অনুযায়ী, গত তিন সপ্তাহে কেবল গাজা সিটিতেই ১০০-র বেশি রোবট বিস্ফোরণের মাধ্যমে ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে আবাসিক এলাকা। ১৩ আগস্ট থেকে শুরু হওয়া অভিযানে শহরটিতে প্রাণ হারিয়েছেন প্রায় ১ হাজার ১০০ জন ফিলিস্তিনি।
এদিকে, উত্তর গাজার আল-জারিসি পরিবারের একটি বাড়িতে হামলায় একই পরিবারের অন্তত ১০ জন নিহত হন। হামাস এই ঘটনাকে ‘ভয়াবহ যুদ্ধাপরাধ’ বলে মন্তব্য করেছে।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, অবরোধের কারণে খাদ্য ও ওষুধ সরবরাহে চরম ঘাটতি দেখা দিয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় অপুষ্টি ও অনাহারে আরও ছয়জনের মৃত্যু হয়েছে, যার মধ্যে একজন শিশু। অবরোধ চলাকালে এখন পর্যন্ত ক্ষুধাজনিত কারণে মারা গেছেন ৩৬৭ জন, যাদের মধ্যে ১৩১ জনই শিশু।
জাতিসংঘের হিসাব অনুযায়ী, ইসরাইলি অভিযান গাজা সিটি থেকে প্রায় ১০ লাখ মানুষকে বাস্তুচ্যুত করতে পারে। শুধুমাত্র গত ১৪ থেকে ৩১ আগস্টের মধ্যে নতুন করে ৮২ হাজার মানুষকে জোরপূর্বক স্থানান্তর করা হয়েছে, যার মধ্যে ৩০ হাজারকে উত্তরের এলাকা থেকে দক্ষিণে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
জাতিসংঘের শিশু বিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফ সতর্ক করেছে, এই সংকট চলতে থাকলে ২০২৬ সালের মাঝামাঝি নাগাদ পাঁচ বছরের নিচে বয়সী ১ লাখ ৩২ হাজার শিশু তীব্র অপুষ্টিতে মৃত্যুর মুখে পড়বে। বর্তমানে ৩ লাখ ২০ হাজার শিশু মারাত্মক খাদ্য সংকটে রয়েছে।
সংস্থাটি বলছে, “দুর্ভিক্ষ ছড়িয়ে পড়ছে। শিশুদের বাঁচাতে এখনই জরুরি ভিত্তিতে মানবিক সহায়তা এবং পুষ্টিকর খাদ্য পৌঁছানো প্রয়োজন।”
১৩২ বার পড়া হয়েছে