সর্বশেষ

সারাদেশ

তুলারামপুরে অর্ধশত বছরের ঐতিহ্যবাহী ডোঙার জমজমাট হাট

এস এম শরিফুল ইসলাম, নড়াইল
এস এম শরিফুল ইসলাম, নড়াইল

মঙ্গলবার, ১৯ আগস্ট, ২০২৫ ১:৩৮ অপরাহ্ন

শেয়ার করুন:
নড়াইলের কালনা-নড়াইল-যশোর-বেনাপোল মহাসড়কের পাশে তুলারামপুর এলাকায় রেইনট্রি গাছের ছায়ায় প্রতি সপ্তাহে বসে দেশের অন্যতম প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী ডোঙার হাট।

প্রায় অর্ধশত বছর ধরে চলা এই হাটটি এখনো তার গৌরব ও বৈচিত্র্য ধরে রেখেছে।

প্রতি সোমবার ও বৃহস্পতিবার সকাল সাতটা থেকে দুপুর পর্যন্ত উপজেলার তুলারামপুর এলাকায় বসে এই হাট। জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা দক্ষ কারিগররা তাদের হাতে তৈরি ডোঙা নিয়ে হাজির হন হাটে। দুই-তিনজন বহনক্ষম এই ছোট নৌযান স্থানীয় মানুষের দৈনন্দিন জীবনে অত্যন্ত প্রয়োজনীয়।

সোমবার (১৮ আগস্ট) সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কারিগররা শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতিতে ব্যস্ত। কেউ কাঠের পালিশ করছেন, কেউ আবার ডোঙার মাথা শৈল্পিকভাবে সাজাচ্ছেন। মাগুর মাছ, শোল কিংবা কাইলের মাথার আদলে তৈরি এসব নকশা ক্রেতাদের নজর কাড়ছে।

কারিগর আতিয়ার রহমান বলেন, “বাবা-চাচাদের কাছ থেকে শিখেছি এই পেশা। এখন বড় ভাইদের সঙ্গে ডোঙা বানাই। তুলারামপুর হাটে সপ্তাহে দুইদিন বিক্রি করি। গাছের বয়স ও কাঠের মান অনুযায়ী প্রতিটি ডোঙার দাম তিন-চার হাজার থেকে শুরু করে বড় হলে দশ হাজার টাকা পর্যন্ত হয়।”

স্থানীয়ভাবে তালগাছ কেটে তার মাঝখান ভাগ করে তৈরি হয় এই ডোঙা। সাধারণ নৌকার তুলনায় দাম কম ও সহজে বহনযোগ্য হওয়ায় এটি এখানকার প্রধান জলযান হিসেবে ব্যবহৃত হয়। বিল থেকে মাছ ধরা, শাপলা তোলা, ধান ও পাট কাটার সময় এই ডোঙাই ভরসা।

মাগুরা জেলার শালিখা উপজেলা থেকে আসা ক্রেতা রিপন কুমার বিশ্বাস বলেন, “আমরা মূলত মাছ ধরা, শাপলা তোলা ও শামুক সংগ্রহের কাজে ডোঙা ব্যবহার করি। কয়েকটি ডোঙা দেখে দাম জেনেছি, একটিকে ভালো লেগেছে—নিয়ে যাব।”


ডোঙা কিনতে আসেন খুলনা, যশোর, সাতক্ষীরা, গোপালগঞ্জ, বাগেরহাটসহ আশপাশের জেলার ক্রেতারাও। মূল সড়কের পাশে হাট হওয়ায় সহজেই ভ্যানযোগে ডোঙা নিয়ে যাওয়া যায়।

নড়াইল জেলা বিসিক কার্যালয়ের উপ-ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ সোলায়মান হোসেন বলেন, “ডোঙা তৈরি এই অঞ্চলের প্রাচীন পেশা ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য। কারিগরদের পেশাগত উন্নয়ন ও হাট ব্যবস্থাপনায় আমরা বিসিক থেকে সহায়তা করে যাচ্ছি। তুলারামপুর ছাড়াও জেলার অন্য এলাকাতেও এ ধরনের হাট বসে।”

স্থানীয়দের মতে, ক্রেতা কম থাকলেও এখনও মৌসুম ফুরায়নি। তাদের প্রত্যাশা, এই হাট এবং পেশার ধারাবাহিকতা ঠিক রাখার জন্য সরকারি সহায়তা ও প্রশিক্ষণের প্রয়োজন।

৩০৭ বার পড়া হয়েছে

শেয়ার করুন:

মন্তব্য

(0)

বিজ্ঞাপন
৩২০ x ৫০
বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

৩০০ x ২৫০

বিজ্ঞাপন
এলাকার খবর

বিজ্ঞাপন

৩০০ x ২৫০

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ সব খবর
সারাদেশ নিয়ে আরও পড়ুন

বিজ্ঞাপন

২৫০ x ২৫০

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন
৩২০ x ৫০
বিজ্ঞাপন