মানবাধিকার ও ন্যায়বিচারের দাবি করলো এইচআরডিসি

শনিবার, ১৬ আগস্ট, ২০২৫ ১২:১৬ অপরাহ্ন
শেয়ার করুন:
রাজশাহীর পবা উপজেলার পারিলা ইউনিয়নের বামনশিকড় গ্রামে একই পরিবারের চারজনের হৃদয়বিদারক মৃত্যুর ঘটনায় গভীর শোক ও উদ্বেগ জানিয়েছে হিউম্যান রাইটস ডেভেলপমেন্ট সেন্টার (এইচআরডিসি)।
সংস্থাটি এই ঘটনার প্রকৃত তদন্ত এবং ন্যায়বিচারের পাশাপাশি মৌলিক মানবাধিকার সুরক্ষার দাবি জানিয়েছে।
শনিবার (১৬ আগস্ট) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এইচআরডিসির সেক্রেটারি জেনারেল মাহবুল হক বলেন, "এই মর্মান্তিক ঘটনা কেবল একটি পারিবারিক দুর্ঘটনা নয়; এটি রাষ্ট্রের নাগরিকদের জীবন, মর্যাদা এবং সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিতে চরম ব্যর্থতার প্রতিচ্ছবি।"
তিনি বলেন, "যেখানে সংবিধান ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সনদ নাগরিকদের মৌলিক অধিকারের নিশ্চয়তা দেয়, সেখানে এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি প্রমাণ করে—এসব প্রতিশ্রুতি বাস্তবে প্রয়োগ হচ্ছে না।"
পাঁচ দফা দাবিতে এইচআরডিসি’র আহ্বান:
এইচআরডিসি সরকার ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে নিম্নলিখিত দাবিগুলো তুলে ধরে:
ঘটনার নিরপেক্ষ ও স্বচ্ছ তদন্ত নিশ্চিত করা।
দায়ীদের দ্রুত আইনের আওতায় আনা।
ঋণ ও কিস্তি ব্যবসার বিরুদ্ধে কঠোর আইন ও নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা চালু।
দরিদ্র ও ঋণগ্রস্ত পরিবারকে সহায়তায় কার্যকর সামাজিক সুরক্ষা ব্যবস্থা বাস্তবায়ন।
মানসিক স্বাস্থ্য সহায়তা ও কাউন্সেলিং সেবা সহজলভ্য করা।
মর্মস্পর্শী চিঠিতে বেঁচে থাকার যন্ত্রণার ইঙ্গিত
পরিবারের কর্তা মিনারুল ইসলাম একটি চিরকুটে লিখে যান—
“আমরা মরে গেলাম ঋণের দায়ে আর খাওয়ার অভাবে। এত কষ্ট আর মেনে নিতে পারছি না। তাই আমরা বেঁচে থাকার চেয়ে মরে গেলাম, সেই ভালো হলো। কারো কাছে কিছু চাইতে হবে না। আমার জন্য কাউকে মানুষের কাছে ছোট হতে হবে না।”
এই চিঠির পরেই তার স্ত্রী মনিরা খাতুন (২৮), ছেলে মাহিম (১৪) ও মেয়ে মিথিলা (৩)–সবার সঙ্গেই তিনিও আত্মহত্যা করেন। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, চরম দারিদ্র্য, ঋণের বোঝা এবং সামাজিক চাপের কারণেই এই আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত।
এইচআরডিসি মনে করে, দারিদ্র্যজনিত হতাশা প্রতিরোধে এখনই পদক্ষেপ না নিলে এমন ঘটনা আরও ঘটতে পারে—যা রাষ্ট্রের জন্য একটি বড় মানবাধিকার চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠবে।
১১১ বার পড়া হয়েছে