ইতিহাসে প্রথমবার এএফসি অনূর্ধ্ব-২০ এশিয়ান কাপের মূলপর্বে বাংলাদেশ

সোমবার, ১১ আগস্ট, ২০২৫ ৩:০২ পূর্বাহ্ন
শেয়ার করুন:
বাংলাদেশ নারী অনূর্ধ্ব-২০ ফুটবল দল ইতিহাস সৃষ্টি করেছে। প্রথমবারের মতো তারা এএফসি অনূর্ধ্ব-২০ নারী এশিয়ান কাপ ২০২৫-এর মূলপর্বে জায়গা করে নিয়েছে।
লাওসের নিউ লাওস স্টেডিয়ামে গ্রুপের শেষ ম্যাচে দক্ষিণ কোরিয়ার কাছে ৬-১ গোলে হারের পরও ‘সেরা তিন রানার্স-আপ’ দলের মধ্যে স্থান পাওয়ায় এই অর্জন সম্ভব হয়েছে। এর ফলে এশিয়ার মূল মঞ্চে খেলতে যাচ্ছে বাংলাদেশের মেয়েরা, যা দেশের নারী ফুটবলের জন্য এক গর্বিত মুহূর্ত।
বাছাইপর্বে বাংলাদেশ দুর্দান্ত সূচনা করেছিল, প্রথম দুই ম্যাচে জয় পেয়ে আত্মবিশ্বাসে ছিল টইটম্বুর। শেষ ম্যাচে শক্তিশালী দক্ষিণ কোরিয়ার বিপক্ষে হার সত্ত্বেও গোল পার্থক্য এবং গ্রুপ পরিসংখ্যান তাদের সামনে এগিয়ে দিয়েছে। ফিফা র্যাংকিংয়ে বর্তমানে ১০৪তম স্থানে থাকা বাংলাদেশ গত এক বছরে ২৪ ধাপ এগিয়ে এসেছে, যা তাদের অগ্রগতির পরিচায়ক।
দলের নেতৃত্বে ছিলেন ডিফেন্ডার আফেইদা খান্ডকার। তার পাশাপাশি সানজিদা আকতার, শামসুন্নাহার জুনিয়র, কৃষ্ণা রানী সরকার, রুপনা চাকমা—সবাই মিলে দলের সাফল্যে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন। তাদের পরিশ্রম, সতীর্থদের সমন্বয় এবং মাঠের দক্ষতা বাংলাদেশকে এই ঐতিহাসিক সাফল্য এনে দিয়েছে।
বাংলাদেশের স্কোয়াডে অভিজ্ঞ ও তরুণ খেলোয়াড়—দুই ধরনের সমন্বয় দেখা গেছে। ক্যাপ্টেন আফেইদা খান্ডকার ডিফেন্স চালান, সামনে আক্রমণভাগে আছেন সাগরিকা, শ্রী মতি তৃষ্ণা, ও শান্তি। মিডফিল্ডের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ নাম সপ্না রাণী, মুনকি আক্তার, এবং রুপা আক্তার, যারা দলের পাসিং, আক্রমণ সাজানো, ও রক্ষণে মূল ভূমিকা রাখেন। গোলরক্ষক বিভাগে স্বর্ণা ও মাইলের দক্ষতা বিশ্বস্ত। এটাই মূল স্কোয়াড; ম্যাচ ও টুর্নামেন্টগুলোতে কোচিং স্টাফের সিদ্ধান্তে ছোটখাটো পরিবর্তন/রোটেশন হয়—তবে উল্লেখিত খেলোয়াড়রাই চলতি এএফসি টুর্নামেন্টে বাংলাদেশের সম্পূর্ণ প্রতিনিধিত্ব করেছেন।
বেতন বৈষম্য, সুযোগ-সুবিধার ঘাটতি এবং সামাজিক কুসংস্কারের মতো চ্যালেঞ্জ তারা একবারে জয় করতে না পারলেও, মাঠে গিয়ে প্রমাণ করেছে যে তারা এশিয়ার শক্তিশালী দলগুলোর সঙ্গেও প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারে। এই সাফল্য শুধু ফুটবলের নয়, বরং বাংলাদেশের নারী খেলাধুলার অগ্রগতির প্রতীক।
দেশবাসী এখন অপেক্ষায় আছে মূলপর্বে নতুন চমক দেখার জন্য, যেখানে বাংলাদেশের মেয়েরা লড়বে সেরাদের সাথে সমান তালে। এই জয় নতুন প্রজন্মের মেয়েদের জন্য স্বপ্ন দেখার প্রেরণা হয়ে থাকবে, আর বিশ্বকে জানিয়ে দেবে—বাংলাদেশ নারী ফুটবল এখন আর শুধু অংশগ্রহণের জন্য আসে না, আসে জিততে।
১১৩ বার পড়া হয়েছে