দ্বিতীয় দিনেও শাহবাগ অবরোধ, জনদুর্ভোগে রাজধানীবাসী

শুক্রবার, ১ আগস্ট, ২০২৫ ১১:৪৮ পূর্বাহ্ন
শেয়ার করুন:
জুলাই সনদের বাস্তবায়ন ও ঘোষণাপত্রকে স্থায়ী আইনি রূপ দেওয়ার দাবিতে টানা দ্বিতীয় দিনের মতো শাহবাগ মোড়ে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন ‘জুলাই যোদ্ধারা’।
তাঁদের আন্দোলনের ফলে শুক্রবারও রাজধানীর এই গুরুত্বপূর্ণ মোড়সহ আশপাশের সড়কে তীব্র যানজট দেখা দেয়, চরম ভোগান্তিতে পড়েন সাধারণ পথচারী ও যাত্রীরা।
এই কর্মসূচি শুরু হয় বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা ৩০ মিনিটে, যা শুক্রবার বিকেল পর্যন্ত অব্যাহত ছিল। আন্দোলনকারীরা জানান, 'জুলাই যোদ্ধা সংসদ' নামক একটি সংগঠনের ব্যানারে এ কর্মসূচি পরিচালিত হচ্ছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, টানা বর্ষণের মধ্যেও বিক্ষোভকারীরা সড়কে অবস্থান নিয়ে দাবি আদায়ের স্লোগান দিচ্ছেন। তাঁরা শাহবাগ মোড়ের চারপাশ ঘিরে ব্যারিকেড বসিয়েছেন, যার ফলে পুরো এলাকা দিয়ে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে।
মোড়টি বন্ধ থাকায় বিকল্প রুট হিসেবে ব্যবহৃত আশপাশের রাস্তা—কাটাবন, মৎস্য ভবন, হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল এবং শাহবাগ থানার সামনের সড়ক—তীব্র যানজটে পড়ে। ফলে সাধারণ যাত্রীদের গন্তব্যে পৌঁছাতে হয় অনেক সময় ব্যয় করে।
অবরোধে ক্ষোভ জানিয়েছেন অনেক মোটরসাইকেলচালক ও রাইড শেয়ারকর্মী। তাঁরা জানান, আন্দোলনের ফলে প্রতিদিনের যাতায়াতে সময় ও আয় দুটোই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। কেউ কেউ বলেন, “জুলাইয়ের আন্দোলনে আমরা একাত্ম, কিন্তু প্রতিদিনের এই অবরোধ আমাদের জীবনে দুর্ভোগ ডেকে আনছে।”
অবরোধকারীরা অভিযোগ করেন, বহুবার সরকারের কাছে দাবি জানানো হলেও এখনো পর্যন্ত কোনো বাস্তব অগ্রগতি নেই। ফলে আহত ও নিহতদের পরিবারের সদস্যরা আবারও রাস্তায় নামতে বাধ্য হয়েছেন।
শাহবাগ থানার ওসি খালিদ মনসুর জানান, বৃহস্পতিবার রাতভর বিক্ষোভকারীরা শাহবাগ মোড়ে অবস্থান করেছেন এবং শুক্রবার দুপুরেও কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছেন। বৃষ্টির মধ্যেও তাঁদের আন্দোলন অব্যাহত রয়েছে।
‘জুলাই যোদ্ধা সংসদ’-এর মুখ্য সংগঠক মাসুদ রানা বলেন, “দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আমরা শাহবাগ ছাড়ছি না।”
যদিও শুক্রবার সরকারি ছুটির দিন হওয়ায় অফিসমুখী মানুষের ভিড় তুলনামূলকভাবে কম ছিল, তবু যানবাহনের সংকটে সাধারণ মানুষকে রাস্তায় দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হয়েছে
আন্দোলনকারীদের মূল দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে—
জুলাই যোদ্ধা ও শহীদদের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি,
আহত ও শহীদ পরিবারের জন্য আজীবন সম্মান, চিকিৎসা ও পুনর্বাসনের নিশ্চয়তা,
রাষ্ট্রীয় ভাতা ও কল্যাণ সুরক্ষা,
বিশেষ আইনি সহায়তা কেন্দ্র গঠন,
দমন-পীড়নের জন্য আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে বিচার কার্যক্রম এবং একটি স্বাধীন সত্য ও ন্যায় কমিশনের প্রতিষ্ঠা।
১১৯ বার পড়া হয়েছে