আন্তর্জাতিক

গাজায় যুদ্ধ বন্ধ না হলে ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র স্বীকৃতি: স্টারমার

ডেস্ক রিপোর্ট
ডেস্ক রিপোর্ট

বুধবার, ৩০ জুলাই, ২০২৫ ৬:১১ পূর্বাহ্ন

শেয়ার করুন:
গাজায় চলমান যুদ্ধ বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ না নেওয়া হলে আগামী সেপ্টেম্বরেই ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিতে পারে যুক্তরাজ্য।

মঙ্গলবার (৩০ জুলাই) এক জরুরি মন্ত্রিসভা বৈঠকের পর দেওয়া সরকারি বিবৃতিতে প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার এই সম্ভাবনার কথা জানান।

বিবৃতিতে জানানো হয়, নিউইয়র্কে অনুষ্ঠেয় জাতিসংঘ সাধারণ অধিবেশনের আগেই ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেওয়ার বিষয়টি চূড়ান্ত হতে পারে। তবে এর জন্য শর্তস্বরূপ ইসরায়েলকে গাজায় হামলা বন্ধ করতে হবে, পশ্চিম তীরের দখলদারিত্বের পরিকল্পনা পরিহার করতে হবে এবং দ্বি-রাষ্ট্র ভিত্তিক সমাধানে অগ্রসর হতে হবে।

স্টারমার বলেন, "ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে সমতুল্যতা নেই। হামাসকে অবশ্যই সকল জিম্মিকে মুক্তি দিতে হবে, অস্ত্র ত্যাগ করতে হবে এবং গাজার প্রশাসনে তাদের কোনো ভূমিকাই থাকা উচিত নয়।"

যুক্তরাজ্য এর আগে কখনো নির্দিষ্ট সময়সীমা বেঁধে ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেওয়ার কথা বলেনি। তাই এবারের ঘোষণা দেশটির পররাষ্ট্রনীতিতে একটি উল্লেখযোগ্য পরিবর্তনের বার্তা দিচ্ছে। বৈঠকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের নেতৃত্বে প্রস্তাবিত শান্তি পরিকল্পনা এবং গাজায় মানবিক সহায়তা পাঠানোর বিষয়েও আলোচনা হয়। জাতিসংঘ ইতোমধ্যে সেখানে দুর্ভিক্ষের আশঙ্কা প্রকাশ করেছে।

ইসরায়েলের সমালোচনা, ফিলিস্তিনের স্বাগত
ইসরায়েল স্টারমারের ঘোষণার তীব্র সমালোচনা করেছে। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে একে ‘হামাসকে পুরস্কার দেওয়ার শামিল’ বলে উল্লেখ করে জানায়, এটি যুদ্ধবিরতি আলোচনায় নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।

অন্যদিকে, যুক্তরাজ্যে নিযুক্ত ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রদূত হুসাম জোমলট এ ঘোষণাকে ‘ঐতিহাসিক ও নৈতিক গুরুত্ববাহী’ বলে অভিহিত করেন। তিনি বলেন, এটি বেলফোর ঘোষণার অন্যায়ের প্রতিকার হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। তবে এটি কেবল প্রতীকী স্বীকৃতি না হয়ে রাজনৈতিক বাস্তবতা ও আন্তর্জাতিক আইনের ভিত্তিতে হতে হবে।

ভবিষ্যতের পথচিত্র
স্টারমার জানান, যুক্তরাজ্য ইউরোপীয় অংশীদারদের সঙ্গে একটি আট দফা শান্তি পরিকল্পনা তৈরি করছে, যার অংশ হিসেবেই ফিলিস্তিন স্বীকৃতি দেওয়া হতে পারে। তিনি বলেন, “গাজার সহ্য-অযোগ্য পরিস্থিতি এবং দ্বি-রাষ্ট্র সমাধান দিন দিন অনিশ্চিত হয়ে পড়ছে। এ অবস্থায় আমাদের এই সিদ্ধান্ত শান্তি প্রচেষ্টাকে ত্বরান্বিত করবে।”

ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁও সম্প্রতি ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। এরই মধ্যে নরওয়ে, আয়ারল্যান্ড ও স্পেন এই স্বীকৃতি দিয়েছে। ইউরোপের অন্যতম প্রভাবশালী রাষ্ট্র হিসেবে ফ্রান্সের এ সিদ্ধান্তও গুরুত্বপূর্ণ বার্তা বহন করে।

লেবার পার্টির ব্যাকবেঞ্চ এমপি সারাহ চ্যাম্পিয়ন বলেন, “এটা সত্যি, ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য আদর্শ সময় হয়তো কখনো আসবে না। কিন্তু এটাই হতে পারে শেষ সুযোগ—যদি আমরা ন্যায়ের প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ থাকি।”

বিশ্লেষকদের মতামত
আলজাজিরার জ্যেষ্ঠ বিশ্লেষক মারওয়ান বিশারা মন্তব্য করেন, “শুধু উচ্চাশা প্রকাশ করে নয়, নেতাদের এখন কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। নয়তো তারা এক অর্থে এই সহিংসতার শরিক হয়ে থাকবেন।” তিনি প্রশ্ন তোলেন—যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্স ঠিক কেমন ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দিতে চাইছে? পশ্চিম তীরের খণ্ডিত অংশে সীমাবদ্ধ রাষ্ট্রকে, নাকি ১৯৬৭ সালের সীমান্তরেখা অনুযায়ী পূর্ব জেরুজালেমসহ একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্রকে?

১৫৫ বার পড়া হয়েছে

শেয়ার করুন:

মন্তব্য

(0)

বিজ্ঞাপন
৩২০ x ৫০
বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

৩০০ x ২৫০

বিজ্ঞাপন
এলাকার খবর

বিজ্ঞাপন

৩০০ x ২৫০

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ সব খবর
আন্তর্জাতিক নিয়ে আরও পড়ুন

বিজ্ঞাপন

২৫০ x ২৫০

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন
৩২০ x ৫০
বিজ্ঞাপন