অন্তর্বর্তী সরকারের আর্থিক সংস্কারে প্রশংসায় বিশ্বব্যাংকের ভাইস প্রেসিডেন্ট

মঙ্গলবার, ১৫ জুলাই, ২০২৫ ৬:৫৬ পূর্বাহ্ন
শেয়ার করুন:
বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে চলমান আর্থিক খাত সংস্কার ও অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন উদ্যোগের প্রশংসা করেছেন বিশ্বব্যাংকের দক্ষিণ এশিয়াবিষয়ক ভাইস প্রেসিডেন্ট জোহানেস জুট।
সোমবার (১৪ জুলাই) রাতে ঢাকার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতে তিনি এ প্রশংসা করেন।
সাক্ষাৎকালে বিশ্বব্যাংকের বাংলাদেশ ও ভুটানবিষয়ক পরিচালক জ্যাঁ পেসমে এবং প্রধান উপদেষ্টার আন্তর্জাতিক বিষয়ক বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকীও উপস্থিত ছিলেন।
জোহানেস জুট বলেন, “অধ্যাপক ইউনূস এবং তার দুর্দান্ত টিম দুরূহ সময়ে দুর্দান্ত কাজ করছে। আমরা বাংলাদেশের মানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষার অংশীদার হতে প্রস্তুত।” ২০১৩ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত ঢাকায় কর্মরত থাকার অভিজ্ঞতা স্মরণ করে তিনি জানান, বাংলাদেশে কাজ করার অভিজ্ঞতা সবসময় তার মনে গেঁথে আছে।
গত বছরের জুলাই মাসে ঘটে যাওয়া গণআন্দোলনের সময় প্রাণ হারানো তরুণদের স্মরণ করে জুট বলেন, “ওই সময়টি আমাদের সবার জন্য আবেগময় ছিল। তরুণদের আত্মত্যাগ ইতিহাসে গর্বের অংশ হয়ে থাকবে।”
প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস বলেন, “আমরা যখন দায়িত্ব নিই, তখন দেশ একপ্রকার ধ্বংসাবশেষে পরিণত হয়েছিল। উন্নয়ন সহযোগীরা পাশে দাঁড়ানোয় আমরা আত্মবিশ্বাস ফিরে পেয়েছি।”
তিনি তরুণদের আত্মত্যাগ ও নারীদের ভূমিকার কথা তুলে ধরে জানান, “তরুণরাই আমাদের ভবিষ্যৎ। বিশেষ করে নারীদের সাহস ও নেতৃত্ব প্রশংসনীয়। তাই আমরা জুলাই মাসকে ‘নারী দিবস’ হিসেবে পালন করছি।”
বাংলাদেশকে দক্ষিণ এশিয়ার একটি সম্ভাবনাময় অর্থনৈতিক শক্তি হিসেবে তুলে ধরে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, “বিশ্বব্যাংক যেন আমাদের কেবল একটি ভৌগোলিক সীমা নয়, বরং বৃহত্তর অর্থনৈতিক প্ল্যাটফর্ম হিসেবে বিবেচনা করে। আমাদের একটি সমুদ্র আছে, যা আঞ্চলিক অর্থনীতির মূল চাবিকাঠি হয়ে উঠতে পারে।”
তিনি আরও বলেন, “বিশ্বের অনেক দেশে তরুণ শ্রমশক্তি কমে যাচ্ছে। সেই দেশগুলোকে আমরা আহ্বান জানিয়েছি—তারা যেন তাদের কারখানা বাংলাদেশে সরিয়ে আনে। আমরা সব ধরনের সুবিধা দিয়ে বাংলাদেশকে উৎপাদন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তুলতে চাই।”
নারীর ক্ষমতায়নে ইউনূসের ভূমিকার প্রশংসা করে বিশ্বব্যাংকের ভাইস প্রেসিডেন্ট বলেন, “বাংলাদেশে মেয়েদের জন্য শিক্ষাবৃত্তি কর্মসূচি শুরু হয়েছিল আমাদের সহায়তায়। সেই মডেল এখন অনেক দেশে অনুসরণ করা হচ্ছে। আমরা ভবিষ্যতেও এই সহযোগিতা অব্যাহত রাখব।”
তিনি জানান, ২০২৪-২৫ অর্থবছরেও বাংলাদেশে বিশ্বব্যাংকের ৩ বিলিয়ন ডলারের বেশি বিনিয়োগ অব্যাহত থাকবে। তরুণদের কর্মসংস্থান ও দক্ষতা উন্নয়নের দিকেও বিশেষ গুরুত্ব দেবে সংস্থাটি।
সাক্ষাৎকালে লুৎফে সিদ্দিকী চট্টগ্রাম বন্দর সংলগ্ন নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনালের (এনসিটি) সর্বশেষ কার্যক্রম ও বিনিয়োগ পরিস্থিতি তুলে ধরেন। তিনি জানান, “নতুন ব্যবস্থাপনার ফলে কনটেইনার হ্যান্ডলিংয়ে ব্যাপক উন্নতি হয়েছে। এ বছরের প্রথম প্রান্তিকে সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগও (FDI) বেড়েছে।”
১২৪ বার পড়া হয়েছে