জরুরি অবস্থা ঘোষণা এখন থেকে মন্ত্রিসভার অনুমোদন সাপেক্ষে

রবিবার, ১৩ জুলাই, ২০২৫ ১০:১৫ পূর্বাহ্ন
শেয়ার করুন:
রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ‘জরুরি অবস্থা’ ঘোষণার অপব্যবহার রোধে সংবিধান সংশোধনের বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছেছে দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক দল।
এখন থেকে জরুরি অবস্থা জারির আগে মন্ত্রিসভার লিখিত অনুমোদন বাধ্যতামূলক করা হচ্ছে।
রোববার (১৩ জুলাই) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে দ্বিতীয় পর্যায়ের সংলাপের ১২তম দিনে এই ঐকমত্য হয়।
সংলাপে সংবিধানের ১৪১ অনুচ্ছেদ সংশোধনের প্রস্তাব তুলে ধরে কমিশন জানায়, বর্তমান অনুচ্ছেদ অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি একক সিদ্ধান্তে ১২০ দিনের জন্য জরুরি অবস্থা ঘোষণা করতে পারেন। নতুন প্রস্তাব অনুযায়ী, জরুরি অবস্থা জারির মেয়াদ হবে অনধিক ৯০ দিন এবং এর জন্য রাষ্ট্রপতিকে মন্ত্রিসভার লিখিত অনুমোদন নিতে হবে।
একই সঙ্গে ‘অভ্যন্তরীণ গোলযোগ’-এর মতো শব্দ পরিবর্তন করে ‘রাষ্ট্রীয় স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব, অখণ্ডতা, মহামারি বা প্রাকৃতিক দুর্যোগ’-কে সম্ভাব্য কারণ হিসেবে উল্লেখ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
সংলাপে আলোচনার সময় রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে কিছু মতবিরোধও দেখা দেয়। বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক জরুরি অবস্থা ঘোষণার সিদ্ধান্ত মন্ত্রিসভার পরিবর্তে সর্বদলীয় বৈঠক থেকে নেওয়ার প্রস্তাব দেন। বাংলাদেশ খেলাফত মজলিশের আহমদ আবদুল কাদের মন্ত্রিসভার সঙ্গে বিরোধী দলগুলোকেও সম্পৃক্ত করার প্রস্তাব দেন।
জামায়াতে ইসলামী নেতৃবৃন্দ ও বিএনপির প্রতিনিধি জরুরি অবস্থা সংক্রান্ত বৈঠকে সংসদের বিরোধীদলীয় নেতা বা নেত্রীর উপস্থিতি নিশ্চিত করার দাবি জানান। পরে ইসলামী আন্দোলনের প্রেসিডিয়াম সদস্য আশরাফ আলী আকন বিরোধীদলীয় উপনেতাকে বিকল্প হিসেবে রাখার প্রস্তাব দেন।
সব আলোচনা শেষে সর্বসম্মতভাবে সিদ্ধান্ত হয়, জরুরি অবস্থা জারির ক্ষেত্রে রাষ্ট্রপতির ঘোষণার আগে মন্ত্রিসভার লিখিত অনুমোদন নিতে হবে। সেই মন্ত্রিসভার বৈঠকে বিরোধীদলীয় নেতা বা অনুপস্থিত থাকলে উপনেতার উপস্থিতি নিশ্চিত করতে হবে।
এছাড়া, জরুরি অবস্থার সময় সংবিধানের ৪৭(৩) ধারা অনুসারে নাগরিকদের জীবনাধিকার এবং নির্যাতন বা অমানবিক আচরণ থেকে মুক্ত থাকার অধিকার খর্ব করা যাবে না—এমন বিধান সংযোজনের বিষয়েও আলোচনা হয়।
১৪৫ বার পড়া হয়েছে