টেন্ডার জটিলতায় পিছিয়ে যাচ্ছে শিক্ষার্থীদের ‘মিড ডে মিল’

শনিবার, ৫ জুলাই, ২০২৫ ৫:১৬ পূর্বাহ্ন
শেয়ার করুন:
চলতি জুলাই মাসেই দেশের ৮ বিভাগের ১৫০ উপজেলায় ‘মিড ডে মিল’ চালুর কথা থাকলেও, টেন্ডার জটিলতায় তা পিছিয়ে যাচ্ছে।
প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৩১ লাখেরও বেশি শিক্ষার্থীকে দুপুরের খাবার দিতে এখন অপেক্ষা করতে হবে আরও দুই মাস।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে পরিচালিত ‘সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ফিডিং কর্মসূচি’ প্রকল্পটি এখন শুরু হবে আগামী সেপ্টেম্বর মাসে। প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর।
প্রকল্প পরিচালক ও যুগ্মসচিব হারুন অর রশীদ জানান, “সেপ্টেম্বরে খাবার বিতরণ শুরু করতে সব প্রস্তুতি প্রায় শেষ পর্যায়ে। অক্টোবরে টেন্ডার প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে বলে আশা করছি।”
তিনি আরও বলেন, “শিক্ষার্থীদের নিরাপদ ও পুষ্টিকর খাবার সরবরাহ করাই আমাদের মূল লক্ষ্য। তাই সঠিক প্রক্রিয়া অনুসরণে আমরা সময় নিচ্ছি।”
প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে, প্রাথমিকভাবে দেশের ৬২ জেলার ১৫০ উপজেলার ১৯ হাজার ৪১৯টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৩১ লাখ ৩০ হাজার শিক্ষার্থী এই সুবিধা পাবে। প্রকল্পটি চলবে ২০২৭ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত। সফল হলে পরে সারা দেশে এটি সম্প্রসারণের পরিকল্পনা রয়েছে।
সপ্তাহে পাঁচ দিন শিক্ষার্থীদের দেওয়া হবে পুষ্টিকর খাবার—যার মধ্যে থাকছে বনরুটি, সিদ্ধ ডিম, দুধ, ফরটিফাইড বিস্কুট ও মৌসুমি ফল (যেমন কলা)। রবি, মঙ্গল ও বৃহস্পতিবার দেওয়া হবে বনরুটি ও ডিম; সোমবার বনরুটি ও ইউএইচটি দুধ; আর বুধবার দেওয়া হবে বিস্কুট ও মৌসুমি ফল।
খাবারের নির্ধারিত পরিমাণ অনুযায়ী—বনরুটি ১২০ গ্রাম, ডিম ৬০ গ্রাম, দুধ ২০০ মিলিলিটার, বিস্কুট ৭৫ গ্রাম এবং ফল ১০০ গ্রাম করে সরবরাহ করা হবে।
এই মিড ডে মিল শিক্ষার্থীদের পুষ্টি নিশ্চিত করার পাশাপাশি শ্রেণিকক্ষে মনোযোগ বাড়াতে সহায়ক হবে বলে আশা করা হচ্ছে। একই সঙ্গে ঝরে পড়া রোধ ও উপস্থিতি বাড়াতেও এটি ভূমিকা রাখবে বলে মনে করছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর।
প্রকল্পে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৫ হাজার ৪৫২ কোটি টাকার বেশি, যার ৯৭ শতাংশই ব্যয় হবে খাবার কেনায়। ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্যই বরাদ্দ নির্ধারণ করা হয়েছে ২ হাজার ১৬৪ কোটি টাকা।
এদিকে, উপজেলা পর্যায়ে ইউএনওর নেতৃত্বে গঠিত হয়েছে স্কুল ফিডিং মনিটরিং কমিটি। এই কমিটিতে থাকবেন স্বাস্থ্য কর্মকর্তা, প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা, মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা, নিরাপদ খাদ্য পরিদর্শকসহ শিক্ষা কর্মকর্তারা।
প্রকল্প বাস্তবায়নে প্রশিক্ষণেও জোর দেওয়া হচ্ছে। জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে ১৯২টি ব্যাচে প্রায় ১৯ হাজার ৭০০ শিক্ষক ও কর্মকর্তার জন্য ওরিয়েন্টেশন ও প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।
১৩৭ বার পড়া হয়েছে