মেট্রোরেলের কমলাপুর অংশে বাড়তি খরচে পুনরায় শুরু হচ্ছে কাজ

শুক্রবার, ৪ জুলাই, ২০২৫ ৬:০৩ পূর্বাহ্ন
শেয়ার করুন:
রাজধানীর মেট্রোরেল লাইন-৬ এর মতিঝিল থেকে কমলাপুর পর্যন্ত বর্ধিত অংশে কাজ আবার শুরু হতে যাচ্ছে।
দীর্ঘদিন ধরে কাজ বন্ধ থাকার পর প্রকল্পের কারিগরি জটিলতা কাটিয়ে প্রায় ৭০ শতাংশ বেশি ব্যয়ে নতুন চুক্তি করেছে সরকার।
ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল) সূত্র জানিয়েছে, আগের ঠিকাদার নির্ধারিত বরাদ্দে কাজ করতে রাজি না হওয়ায় প্রকল্পে বড় ধরনের বিলম্ব ঘটে। বৈশ্বিক অর্থনৈতিক সংকট, ডলার বাজার উন্মুক্ত হওয়া, কাঁচামালের দামে ঊর্ধ্বগতি এবং পরিবহন খরচ বাড়ায় ব্যয়ও বেড়ে গেছে।
২০২০-২১ অর্থবছরের সংশোধিত উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবনায় (আরডিপিপি) 'ইলেকট্রোমেকানিক্যাল' কাজের জন্য বরাদ্দ ছিল ২৭৪ কোটি টাকা। কিন্তু নতুন চুক্তি হয়েছে ৪৬৫ কোটি টাকায়। যদিও দরপত্রে প্রাথমিকভাবে ঠিকাদার দাবি করেছিল প্রায় সাড়ে ৬০০ কোটি টাকা।
ডিএমটিসিএল কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বর্ধিত অংশে কাজের ধারাবাহিকতা রক্ষায় পূর্ববর্তী ঠিকাদারদের দিয়েই কাজ করানো হচ্ছে। নতুন ঠিকাদার নিয়োগ দিতে হলে আবার দরপত্র আহ্বান করতে হতো, যা সময়সাপেক্ষ এবং সম্ভাব্য খরচও কম নয় বলে ধারণা করা হচ্ছিল।
প্রকল্প পরিচালক মো. জাকারিয়া বলেন, "কাজ দেরি হলে সরকারের বার্ষিক রাজস্ব হারানোর আশঙ্কা রয়েছে। আমাদের হিসাব মতে, বছরে অন্তত ১২৬ কোটি টাকা হারাতে হবে। যাত্রীপ্রতি গড়ে ৪৬ টাকা ভাড়া পাওয়া যায়।"
এদিকে, প্রকল্পটির অর্থায়ন করছে জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (জাইকা)। জাইকার চুক্তি অনুসারে, ঠিকাদার নির্ধারণে তাদের সম্মতি আবশ্যক। এজন্যও নতুন দরপত্র আহ্বান না করে পূর্ববর্তী ঠিকাদারের সঙ্গেই পুনরায় আলোচনা করে চুক্তি সম্পন্ন করা হয়েছে।
সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান জানান, “শুরুতে দরপত্র রিভিউ করতে বলা হয়েছিল। পরে জাইকার সঙ্গে চুক্তির বাধ্যবাধকতার কারণে আগের ঠিকাদারদের সঙ্গেই আলোচনা করা হয়েছে। তারা যা চেয়েছিল, তা থেকে প্রায় ২০০ কোটি টাকা কমিয়ে চূড়ান্ত চুক্তি করা হয়েছে।”
বিশ্লেষকরা বলছেন, বর্তমান অর্থনৈতিক বাস্তবতায় এবং টাকার মান কমে যাওয়ার প্রেক্ষাপটে এই ব্যয় বৃদ্ধি অস্বাভাবিক নয়। তবে যথাসময়ে কাজ সম্পন্ন না হলে আরও বড় আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়তে পারে সরকার।
১২২ বার পড়া হয়েছে