অধিনায়কত্ব ছেড়ে ব্যাটে ফিরবেন শান্ত !

মঙ্গলবার, ১ জুলাই, ২০২৫ ৬:৫৯ পূর্বাহ্ন
শেয়ার করুন:
নাজমুল হোসেন শান্ত একবার আগেও অধিনায়কত্ব ছাড়তে চেয়েছিলেন। তখন বোঝানো হয়েছিল, থেকে যান।
তবে এবার আর মন পাল্টাননি। শ্রীলঙ্কা সিরিজ শেষে টেস্ট অধিনায়কত্ব থেকেও সরে দাঁড়িয়েছেন তিনি। এর মাধ্যমে তিন ফরম্যাটেই নেতৃত্ব ছাড়লেন শান্ত।
একজন নেতৃত্বগুণসম্পন্ন খেলোয়াড় হারাল বাংলাদেশ। কিন্তু এটিকে একপেশেভাবে দেখলে হবে না এই সিদ্ধান্ত শান্ত ও দলের জন্য আশীর্বাদ হিসেবেও দেখা দিতে পারে।
কারণ, এখন শান্ত কেবল ব্যাটসম্যান হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করার দারুণ সুযোগ পাচ্ছেন। প্রায় ১৯ মাসের নেতৃত্বের চাপে ভোগার পর এবার তিনি আবার নিজের ব্যাটিংয়ে পূর্ণ মনোযোগ দিতে পারবেন। ২০২৩ সালের দুর্দান্ত ফর্মে ফেরার সম্ভাবনাও এখান থেকেই তৈরি হতে পারে।
বাংলাদেশেরও শান্তর ব্যাট থেকে নিয়মিত রান দরকার। অধিনায়ক হিসেবে দায়িত্বের বাইরের নানা কিছুর ভার তাকে টানছিল, যেগুলোর উপর তার নিয়ন্ত্রণও ছিল না। এসব থেকে মুক্ত হয়ে শান্ত যদি ব্যাটিংয়েই মন দেন, সেটাই হবে সবচেয়ে বড় ইতিবাচক দিক।
নেতৃত্বের দায়িত্ব নেওয়ার পর ধীরে ধীরে ভিন্ন এক জগতে ঢুকে গিয়েছিলেন শান্ত। অনেক কিছু করার পরও স্বীকৃতি ছিল না। শেষ ধাক্কা আসে, যখন বিসিবি হঠাৎ করেই ওয়ানডে অধিনায়কত্ব থেকে সরিয়ে দেয় তাকে যেখানে তার দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা ছিল।
এরপরই শান্ত সরে দাঁড়ান টেস্ট নেতৃত্ব থেকেও। বিসিবি কর্মকর্তারা বলছেন, তার এই সিদ্ধান্ত তাদের কাছে অপ্রত্যাশিত ছিল।
তবে শান্ত সিদ্ধান্ত নিয়েছেন যথাযথ নিয়ম মেনেই। সিরিজের শেষেই ঘোষণা দিয়েছেন, ওয়ানডে সিরিজের এক সপ্তাহ আগে জানিয়ে দিয়েছেন বোর্ডকে। তিনি চাইলেই এই সিদ্ধান্ত এমনভাবে জানাতে পারতেন, যাতে তা বার্তা হয়ে দাঁড়ায়। কিন্তু তা করেননি শান্ত থেকে গেছেন শান্তই।
বাংলাদেশ ক্রিকেটে অধিনায়কের সঙ্গে এমন আচরণ নতুন নয়। অনেক সময় আগাম কিছু না জানিয়ে সরিয়ে দেওয়া হয়। শান্তও এর শিকার হয়েছেন। কিন্তু প্রথম টেস্টেই মাথা উঁচু করে জবাব দিয়েছেন তিনি—জোড়া সেঞ্চুরি আর মুশফিকুর রহিমের সঙ্গে ২৬৪ রানের জুটি তার প্রমাণ।
এবার তার লক্ষ্য হওয়া উচিত ব্যাট হাতে সেই পুরোনো ছন্দে ফিরে যাওয়া। অধিনায়ক থাকাকালেও টেস্ট ও ওয়ানডেতে তার গড় ছিল ৪০-এর ওপরে, টি-টোয়েন্টিতেও গুরুত্বপূর্ণ কিছু জয় এনে দিয়েছিলেন।
এখন তার সামনে উদাহরণ হিসেবে আছেন মুশফিকুর রহিম, যিনি নেতৃত্ব ছাড়ার পর টেস্টে ৪০টির বেশি ম্যাচে প্রায় ৪৩ গড়ে রান করেছেন। শান্তও চাইলে সেই পথ ধরেই এগোতে পারেন।
বাংলাদেশের সদ্য সাবেক এই অধিনায়কের জন্য সময়টা এক বড় সুযোগ। নিজের ব্যাটে ভর করে আগামী দশকের ব্যাটিং স্তম্ভ হয়ে ওঠার। প্রশ্ন শুধু একটাই শান্ত নিজে সেটা কতটা নিতে চান, আর বিসিবি তাকে কতটা সুযোগ দেবে।
১১৫ বার পড়া হয়েছে