সর্বশেষ

জাতীয়

নিত্যপণ্যের লাগামহীন মূল্যবৃদ্ধিতে দুর্বিষহ জীবন

স্টাফ রিপোর্টার
স্টাফ রিপোর্টার

মঙ্গলবার, ১ জুলাই, ২০২৫ ৬:১৪ পূর্বাহ্ন

শেয়ার করুন:
ঈদের পর থেকেই রাজধানীসহ দেশের বাজারে চাল, আলু, পেঁয়াজ, সবজি ও সোনালি মুরগিসহ বেশ কিছু নিত্যপণ্যের দাম হঠাৎ করে লাফিয়ে বেড়েছে।

গত এক মাসেই এসব পণ্যের দাম খুচরা পর্যায়ে সর্বোচ্চ ১৩৩ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে, যা স্বল্প ও মধ্য আয়ের মানুষের জন্য নতুন সংকট তৈরি করেছে। আয় না বাড়ায় এই মূল্যবৃদ্ধি এখন জীবনযাত্রাকে কঠিন করে তুলছে।

চালেই বাড়তি চাপ
বাজারে অস্থিতিশীলতার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে চাল। খুচরা বাজারে মিনিকেট চালের দাম কেজিতে ৮ থেকে ১০ টাকা বেড়ে এখন ৮২ থেকে ৯০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। মোটা চাল ব্রি-২৮-এর দামও বেড়েছে ৩ থেকে ৭ শতাংশ, যা এখন মানভেদে ৬০–৬২ টাকা। ব্যবসায়ীরা বলছেন, মিলগেটেই দামে বড় পরিবর্তন এসেছে।
তবে বাজার বিশ্লেষকদের মতে, এটি চাহিদার চেয়ে বেশি মাত্রায় ধান মজুদের ফল। মিল মালিক ও করপোরেট ব্যবসায়ীরা ইচ্ছাকৃতভাবে ধান মজুদ করে বাজারে কৃত্রিম সংকট তৈরি করছেন।

বাকিরাও বাড়তি খেলায়
শুধু চাল নয়, ঈদের পর আলুর দাম ২০ শতাংশ বেড়ে কেজি ৩০ টাকা হয়েছে। দেশি পেঁয়াজ এখন ৫৫–৬০ টাকা কেজি, যেখানে এক মাস আগেও তা ছিল ৫০ টাকার নিচে। টমেটোর মৌসুম শেষ হওয়ায় এর দাম দ্বিগুণের বেশি হয়ে ১০০–১৪০ টাকা কেজিতে পৌঁছেছে।

সবজির বাজারেও একই অবস্থা। করলা, বেগুন, বরবটি, পটোল—সবকিছুর দামই বেড়েছে ২৫–৪৫ শতাংশ। করলা ও বেগুন এখন কেজিপ্রতি ৮০–১০০ টাকা। সোনালি মুরগির দাম বেড়ে হয়েছে ২৮০–৩২০ টাকা, যদিও ব্রয়লার মুরগির দাম একই রয়েছে (১৬০–১৭০ টাকা)।

ভোক্তার চাপ বাড়ছেই
প্রতিদিন বাজারে গিয়ে হতাশ হচ্ছেন সাধারণ মানুষ। রাজধানীর রামপুরা বাজারে এক ক্রেতা সাদিকুল ইসলাম বললেন, "ঈদের আগে মিনিকেট চালের বস্তা কিনেছিলাম ১,৮৭৫ টাকায়। এখন তা ২,১২৫ টাকা। অথচ আয় বাড়েনি। সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।"

বাজারে কারসাজির অভিযোগ
কারওয়ান বাজারের চাল ব্যবসায়ী আব্দুল মান্নান অভিযোগ করে বলেন, "এই মৌসুমে চালের দাম বাড়ার কথা নয়। মিল মালিকদের সিন্ডিকেটের কারণেই দাম বেড়েছে। সরকারকে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে।"

একই দাবি আরেক ব্যবসায়ী সায়েমেরও, যিনি বলেন, "৫০ কেজির বস্তায় এক লাফে ৪০০ টাকা দাম বাড়া নজিরবিহীন। এটি কৃত্রিম সংকট।"

অর্থনীতিবিদদের পরামর্শ
কৃষি অর্থনীতিবিদ ড. জাহাঙ্গীর আলম খান বলেন, "সরকারকে বাজার তদারকি জোরদার করতে হবে। অসাধু মজুদদারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। খোলা বাজারে চাল বিক্রির উদ্যোগও বাড়াতে হবে। নাহলে চালের বাজার আরও বেসামাল হবে।"

মূল্যস্ফীতি কিছুটা কমলেও বাজারে নিত্যপণ্যের লাগাতার দাম বৃদ্ধিতে মধ্য ও নিম্নবিত্ত পরিবারগুলো টিকে থাকা কঠিন হয়ে পড়েছে। এখনই যদি কার্যকর হস্তক্ষেপ না আসে, তাহলে মূল্যস্ফীতির চাপ আরও বাড়বে বলে আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা।

১২৮ বার পড়া হয়েছে

শেয়ার করুন:

মন্তব্য

(0)

বিজ্ঞাপন
৩২০ x ৫০
বিজ্ঞাপন
জাতীয় নিয়ে আরও পড়ুন

বিজ্ঞাপন

২৫০ x ২৫০

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন
৩২০ x ৫০
বিজ্ঞাপন