নিউইয়র্ক সিটির রাজনীতিতে মুসলিম প্রগতিশীল মামদানির উত্থান

বৃহস্পতিবার , ২৬ জুন, ২০২৫ ৫:০১ পূর্বাহ্ন
শেয়ার করুন:
নিউইয়র্ক সিটির রাজনীতিতে ভারতীয় বংশোদ্ভূত ও মুসলিম প্রগতিশীল রাজনীতিবিদ জোহারান মামদানির উত্থান মার্কিন ডানপন্থী রাজনীতির জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা দিচ্ছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, মামদানির জনপ্রিয়তা ও তৃণমূলভিত্তিক আন্দোলন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের রাজনীতির জন্য উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
জোহারান মামদানি নিজেই দাবি করেছেন, “আমি ট্রাম্পের সবচেয়ে বড় দুঃস্বপ্ন—একজন প্রগতিশীল মুসলিম অভিবাসী, যিনি সত্যিকার বিশ্বাস থেকে লড়াই করছেন।”
মামদানির রাজনৈতিক দর্শন সামাজিক ন্যায়, অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজ এবং মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার ওপর ভিত্তি করে গড়ে উঠেছে। বাড়িভাড়া নিয়ন্ত্রণ, বিনামূল্যে গণপরিবহন, সামাজিক আবাসন সম্প্রসারণ এবং ধনীদের ওপর কর বৃদ্ধির মতো নীতিমালার পক্ষে তিনি সরব।
অন্যদিকে, ট্রাম্পের রাজনীতি ছিল করছাড়, সীমান্ত নিরাপত্তা ও কঠোর অভিবাসন নিয়ন্ত্রণের ওপর নির্ভরশীল।
সম্প্রতি নিউইয়র্কে ট্রাম্পপন্থী রিপাবলিকান কাউন্সিলর ভিকি পেলাডিনো মামদানির দেশচ্যুতির দাবি করেন। মামদানি একে “মৃত্যু হুমকি” ও “ইসলামভীতির বৈষম্য” বলে উল্লেখ করেন এবং বলেন, “এটা আমাদের শহর ও সংবিধানের মূল্যবোধের ওপর সরাসরি আক্রমণ।”
পররাষ্ট্রনীতিতেও মামদানি ট্রাম্পের চেয়ে ভিন্ন অবস্থান নিয়েছেন। বিশেষ করে ফিলিস্তিন-ইসরায়েল ইস্যুতে তিনি মানবাধিকার ও ন্যায়বিচারের পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন, যেখানে ট্রাম্প ছিলেন কট্টর ইসরায়েলপন্থী।
জোহরান মামদানি নিউইয়র্ক সিটির মেয়র নির্বাচনের ডেমোক্র্যাটিক পার্টির প্রাইমারিতে (দলীয় প্রার্থী বাছাইয়ে) বিপুল ভোটে জয়লাভ করেছেন এবং তার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী, সাবেক গভর্নর অ্যান্ড্রু কুমো পরাজয় স্বীকার করেছেন।
তবে, এখনো মূল (নভেম্বরের) মেয়র নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়নি। মামদানি ডেমোক্র্যাটিক পার্টির মনোনীত প্রার্থী হিসেবে চূড়ান্ত নির্বাচনে অংশগ্রহণের যোগ্যতা অর্জন করেছেন, এবং নিউইয়র্ক সিটির ভোটারের ৭০% ডেমোক্র্যাট হওয়ায় তার মূল নির্বাচনে জয় অনেকটাই নিশ্চিত বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন।
বিশ্লেষকদের মতে, নিউইয়র্ক সিটির প্রথম মুসলিম মেয়র হওয়ার দোরগোড়ায় থাকা মামদানির রাজনৈতিক যাত্রা শুধু স্থানীয় নয়, জাতীয় পর্যায়েও মার্কিন রাজনীতিতে নতুন মাত্রা যোগ করেছে। তার উত্থান বহুত্ববাদ, সামাজিক ন্যায় এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক রাজনীতির নতুন দিগন্ত উন্মোচন করছে, যা ট্রাম্পপন্থী রাজনীতির জন্য বড় চ্যালেঞ্জ।
১২৪ বার পড়া হয়েছে