ইরান-ইসরাইল সংঘাত: শনিবার রাত থেকে রবিবার ভোর পর্যন্ত ভয়াবহ হামলা ও ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি

রবিবার, ১৫ জুন, ২০২৫ ৩:৩৯ পূর্বাহ্ন
শেয়ার করুন:
মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনার পারদ যখন চরমে, ঠিক তখনই শনিবার রাত থেকে রবিবার ভোর পর্যন্ত ইরান ও ইসরাইলের মধ্যে সংঘাত ভয়াবহ রূপ নেয়।
দুই দেশের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ক্ষেপণাস্ত্র, ড্রোন ও বিমান হামলায় নিহত হন বহু মানুষ, ধ্বংস হয় অসংখ্য ভবন ও গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো। সাধারণ মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে চরম আতঙ্ক। এই সংঘাত শুধু দুই দেশের সীমান্তেই সীমাবদ্ধ নেই, বরং গোটা অঞ্চলের নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতাকে হুমকির মুখে ফেলেছে। শনিবার রাত থেকে রবিবার ভোর পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টার এই সংঘাতের পূর্ণাঙ্গ চিত্র তুলে ধরা হলো।
ইরানের যেসব জায়গাতে হামলা হয়েছে তার মধ্যে তেহরানে বহুতল ভবনে হামলা, ২০ শিশু-সহ ৬০ জন নিহত। নাতাঞ্জ, ফোরদো, ইসফাহানে পারমাণবিক প্রকল্প ও সামরিক স্থাপনায় ক্ষয়ক্ষতি। জানজানে সেনাঘাঁটিতে বোমাবর্ষণ। বুশেহর (সাউথ পার্স)এ গ্যাসক্ষেত্রে আগুন, উৎপাদন আংশিক বন্ধ এবং বন্দর আব্বাসে হামলা ও ক্ষয়ক্ষতি। ইরানের রাষ্ট্রীয় ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সূত্র জানায়, শনিবার রাত থেকে রবিবার ভোর পর্যন্ত ইসরাইলি হামলায় অন্তত ৭৮-৮০ জন নিহত এবং ৩২০ জনের বেশি আহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তা, বিজ্ঞানী ও সাধারণ নাগরিক রয়েছেন।
অন্যদিকে, ইরানও শনিবার রাতভর ইসরাইলের অভ্যন্তরে ‘ট্রু প্রমিজ–৩’ নামে পাল্টা ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালায়। তেলআবিবের ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় একটি বহুতল ভবনের নিচের অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং শহরের উপকণ্ঠে আরও নয়টি ভবন ধ্বংস হয়ে যায়। জেরুজালেমেও বিস্ফোরণের বিকট শব্দ শোনা যায়, কিছু ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়। রিশন শহরের আবাসিক এলাকায় ক্ষেপণাস্ত্র আঘাতে দুইজন নারীসহ তিনজন নিহত এবং অন্তত ২০ জন আহত হন। ইসরাইলের উপকূলীয় ও উত্তরাঞ্চলে একাধিক আবাসিক ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, কিছু এলাকায় আগুন লেগেছে এবং ক্ষেপণাস্ত্রের ধ্বংসাবশেষ পড়েছে। ইসরাইলি অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস জানায়, ইরানি হামলায় অন্তত ৩-৪ জন নিহত এবং ৩৪ জনের বেশি আহত হয়েছেন। ইসরাইলি প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা কিছু ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিহত করলেও, উল্লেখযোগ্য ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
এই সংঘাতের ফলে দুই দেশের সাধারণ জনগণের মধ্যে চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে। বহু মানুষ নিরাপত্তার জন্য আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান নিয়েছেন। ইরান ও ইসরাইল দুই পক্ষই হামলা অব্যাহত রাখার ঘোষণা দিয়েছে এবং আরও বড় সংঘাতের হুমকি দিয়েছে। আন্তর্জাতিক মহলে উদ্বেগ বাড়ছে, কারণ এই সংঘাত মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করেছে। পরিস্থিতি এখনও উত্তপ্ত এবং নতুন করে বড় ধরনের হামলার আশঙ্কা রয়েছে।
১২০ বার পড়া হয়েছে