গাজা ইস্যুতে জাতিসংঘে ভারতের ভোটদানে বিরত থাকা নিয়ে প্রিয়াঙ্কা গান্ধীর তীব্র সমালোচনা

শনিবার (১৪ জুন) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ দেওয়া এক পোস্টে তিনি এই সিদ্ধান্তকে “লজ্জাজনক ও হতাশাজনক” বলে আখ্যা দেন এবং বলেন, “এই অবস্থান কূটনৈতিকভাবে অগ্রহণযোগ্য এবং নৈতিকতার সম্পূর্ণ বিপরীত। আন্তর্জাতিক নেতৃত্ব দাবি করে সাহসিকতা এবং ন্যায়ের পক্ষে দাঁড়ানো। কিন্তু ভারত এক্ষেত্রে ব্যর্থ হয়েছে”।

প্রিয়াঙ্কা গান্ধী আরও অভিযোগ করেন, যখন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু একটি পুরো জাতিকে ধ্বংসের পথে নিয়ে যাচ্ছেন, তখন ভারত শুধু নীরব নয়, বরং ইসরায়েলের ইরানে হামলা এবং দেশটির শীর্ষ নেতৃত্বকে হত্যার ঘটনায় পরোক্ষ উৎসাহও দিচ্ছে। তিনি বলেন, “এটি একটি সার্বভৌম রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে বর্বর লঙ্ঘন এবং আন্তর্জাতিক নীতিমালার সম্পূর্ণ পরিপন্থি”।

তিনি গাজার পরিস্থিতি তুলে ধরে বলেন, “এখন পর্যন্ত প্রায় ৬০ হাজার মানুষ নিহত হয়েছেন, যাদের অধিকাংশই নারী ও শিশু। একটি গোটা জনসংখ্যাকে অবরুদ্ধ করে অনাহারে মারা হচ্ছে, অথচ আমরা কোনো অবস্থান নিচ্ছি না—এটি অত্যন্ত দুঃখজনক”।

গতকাল শুক্রবার (১৩ জুন) জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে গাজায় অবিলম্বে ও স্থায়ী যুদ্ধবিরতির পক্ষে একটি প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়। প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দেয় ১৪৯টি দেশ, বিপক্ষে ১২টি দেশ এবং ভোটদানে বিরত থাকে ১৯টি দেশ, যার মধ্যে ভারতও ছিল। ভারতের স্থায়ী প্রতিনিধি পার্বতানেনি হরিশ বলেন, “যুদ্ধে ইতি টানতে একমাত্র পথ হল মুখোমুখি আলোচনা ও কূটনৈতিকভাবে সমস্যার সমাধান। দুই পক্ষকে বসতে হবে, এটাই আমাদের বিশ্বাস। তাই ভোটদান থেকে বিরত থাকার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে”।

প্রিয়াঙ্কা গান্ধী ভারতের এই অবস্থানকে দেশের ঐতিহাসিক নীতিমালার পরিপন্থি এবং মানবিক মূল্যবোধের পরিপন্থি বলে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, অতীতে ভারত বারবার ন্যায়ের পক্ষে সাহসিকতা দেখিয়েছে, আজকের বিভক্ত বিশ্বে ভারতের উচিত মানবতার পক্ষে নির্ভয়ে দাঁড়ানো।

এর আগে সংসদ অধিবেশনে ‘Palestine’ লেখা ও তরমুজ চিহ্নসহ ব্যাগ বহন করে প্রিয়াঙ্কা গান্ধী ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতি প্রকাশ করেছিলেন, যা সামাজিক ও রাজনৈতিক মহলে আলোচনার জন্ম দেয়।