সর্বশেষ

আন্তর্জাতিক

কেরালা উপকূলে সিঙ্গাপুর পতাকাবাহী কার্গো জাহাজে অগ্নিকাণ্ড: পরিবেশের জন‍্য মারাত্মক হুমকি

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

রবিবার, ১৫ জুন, ২০২৫ ২:১৪ পূর্বাহ্ন

শেয়ার করুন:
পাঁচ দিনেও আগুন নিয়ন্ত্রন সম্ভব হয়নি। গত ৯ জুন, ২০২৫ ভোরে কেরালার উপকূলের ৪০-৪৪ নটিক্যাল মাইল পশ্চিমে সিঙ্গাপুর পতাকাবাহী বিশাল কার্গো জাহাজ MV Wan Hai 503-এ একটি কনটেইনার বিস্ফোরণের পর ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড ঘটে।

জাহাজটি শ্রীলঙ্কার কলম্বো থেকে ভারতের মুম্বাই বন্দরের দিকে যাচ্ছিল এবং এতে ছিল ২,১২৮ টন ফুয়েল ও বিপুল সংখ্যক কনটেইনার, যার মধ্যে প্রায় ১৫০টি কনটেইনারে বিপজ্জনক রাসায়নিক পদার্থ ছিল। বিস্ফোরণের ফলে মধ্যভাগে আগুন ছড়িয়ে পড়ে, ২০-৫০টি কনটেইনার সমুদ্রে পড়ে যায় এবং জাহাজটি ১০-১৫ ডিগ্রি বাঁ দিকে হেলে পড়ে।

ভারতীয় উপকূলরক্ষী বাহিনী (ICG) ও নৌবাহিনী দ্রুত অভিযান শুরু করে। পাঁচটি উপকূলরক্ষী জাহাজ, দুটি ডর্নিয়ার বিমান, একটি হেলিকপ্টার এবং আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চলছে। উদ্ধারকর্মীরা বিশেষ স্যালভেজ টিম ও ডুবুরি নিয়ে হেলিকপ্টার থেকে জাহাজে নামেন এবং টাগবোটের মাধ্যমে জাহাজটিকে উপকূল থেকে দূরে গভীর সমুদ্রে টেনে নেওয়ার চেষ্টা চলছে, যাতে উপকূলে পরিবেশ বিপর্যয় না ঘটে।

জাহাজের ২২ জন ক্রুর মধ্যে ১৮ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে, যাদের মধ্যে কয়েকজন গুরুতর দগ্ধ অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি আছেন; দুইজন আইসিইউতে চিকিৎসাধীন। চারজন এখনও নিখোঁজ, যাদের মধ্যে দুইজন তাইওয়ান, একজন ইন্দোনেশিয়া এবং একজন মিয়ানমারের নাগরিক। উদ্ধার ও অনুসন্ধান অভিযান এখনো অব্যাহত রয়েছে।

১০-৫০টি কনটেইনার সমুদ্রে পড়ে গেছে এবং সেগুলো উপকূলের দিকে ভেসে আসার আশঙ্কা রয়েছে, যা পরিবেশ ও নৌ-নিরাপত্তার জন্য বড় হুমকি। পরিবেশবিদরা সতর্ক করেছেন, পরিস্থিতি দ্রুত নিয়ন্ত্রণে না এলে সমুদ্র ও উপকূলের পরিবেশে দীর্ঘমেয়াদি ক্ষতি হতে পারে। ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় একে “গুরুতর সামুদ্রিক পরিবেশগত ঝুঁকি” হিসেবে চিহ্নিত করেছে।

১৪ জুন (আজ) পর্যন্ত আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসেনি; বিশেষত অভ্যন্তরীণ ডেকে ও ফুয়েল ট্যাঙ্কের কাছে আগুন জ্বলছে। উপকূল থেকে দূরে জাহাজটিকে সরানোর চেষ্টা চলছে, যাতে তেল বা রাসায়নিক ছড়িয়ে উপকূলীয় পরিবেশ ক্ষতিগ্রস্ত না হয়।

এই অগ্নিকাণ্ড ও বিস্ফোরণ ভারতের সামুদ্রিক নিরাপত্তা ও পরিবেশ ব্যবস্থাপনার জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। জাহাজটি ডুবে গেলে বা তেল ছড়িয়ে পড়লে কেরালার উপকূলীয় অঞ্চলে দীর্ঘমেয়াদি পরিবেশগত বিপর্যয় ঘটতে পারে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই ধরনের দুর্ঘটনা প্রতিরোধ ও ব্যবস্থাপনায় আন্তর্জাতিক সমন্বয়, দ্রুত স্যালভেজ ও দূষণ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা আরও জোরদার করা জরুরি।

১২৩ বার পড়া হয়েছে

শেয়ার করুন:

মন্তব্য

(0)

বিজ্ঞাপন
৩২০ x ৫০
বিজ্ঞাপন
আন্তর্জাতিক নিয়ে আরও পড়ুন

বিজ্ঞাপন

২৫০ x ২৫০

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন
৩২০ x ৫০
বিজ্ঞাপন