যোগ‍্য বক্তিকে অসম্মান করে জাতির উন্নতি আশা করা যায় না

দেশের রাজনীতিতে অস্থিরতা ও নেতৃত্ব পরিবর্তনের পর, ড. ইউনূস দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই দেশ-বিদেশের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্বদের সঙ্গে তাঁর সাক্ষাৎ ও বৈঠক নিয়ে চলছে আলোচনা।

ব্রিটিশ এমপি টিউলিপ সিদ্দিকী, যিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাগ্নি, ড. ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে চিঠি পাঠিয়েছেন। তাঁর এই কূটনৈতিক উদ্যোগকে অনেকেই বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছেন। অন্যদিকে, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানও ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাতের জন্য প্রস্তুত হচ্ছেন। এই দুই প্রধান রাজনৈতিক পরিবারের প্রতিনিধিদের ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ চেষ্টাকে দেশের রাজনীতিতে নতুন মাত্রা হিসেবে দেখা হচ্ছে।

এদিকে, ব্রিটেনের রাজা তৃতীয় চার্লসও ড. ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাতের জন্য আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। এমনকি তিনি তাঁর ‘কিংস চার্লস হারমনি অ্যাওয়ার্ড’ প্রদান করবেন বলে জানা গেছে। এরপর ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী স্যার কিয়ার স্টারমারের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক, কমনওয়েলথ মহাসচিব প‍্যাটিসিয়া স্কটল্যান্ড ও আন্তর্জাতিক সমুদ্র সংস্থা (আইএমও) মহাসচিব আর্সেনিও ডমিঙ্গুয়েজের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ এবং রয়্যাল ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যাফেয়ার্স, চ্যাথাম হাউসে বিশেষ ভাষণ—সব মিলিয়ে ড. ইউনূসের কর্মসূচি বেশ ব্যস্ত ও তাৎপর্যপূর্ণ।

আন্তর্জাতিক এই স্বীকৃতি ও সম্মাননার মাঝেও দেশে ড. ইউনূসের যোগ্যতা নিয়ে চলছে বিতর্ক। দেশের কিছু রাজনৈতিক নেতা তাঁর নেতৃত্ব নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন, এমনকি কিছু ছাত্র সংগঠন হুমকি দিচ্ছে তাঁকে অপমান করার। অনেকেই বলছেন, দেশের ফাইভ পাশ করা নেতা যখন ইউনূসের মতো নোবেলজয়ী, বিশ্বনন্দিত ব্যক্তিত্বের যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তোলে, তখন জাতি হিসেবে আমাদের জন্য সেটি লজ্জার।

সব বিতর্ক ও সমালোচনার বাইরে, ড. ইউনূসের ব্যক্তিত্বে রয়েছে সাদামাটা, বিনয়ী ও সাধারণ জীবনযাপনের ছাপ। স্যুট-টাইয়ের বাহুল্য নেই, বরং দেশীয় সাধারণ পোশাকেই তাঁকে দেখা যায়, যা গত ১০ মাসেও বদলায়নি। তাঁর নরম স্বর, বিনয়ী ব্যবহার ও কর্মনিষ্ঠা এখন আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও প্রশংসিত।

দেশের রাজনীতিতে যখন উত্তেজনা ও বিভাজন, তখন ড. ইউনূস আন্তর্জাতিক মহলে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করছেন নতুন ইতিহাস গড়ার পথে। তাঁর এই যাত্রা দেশ ও জাতির জন্য গর্বের, যদিও দেশের ভেতরে কিছু বিতর্ক ও সমালোচনাও রয়েছে।